রোববার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে এবারের ইজতেমার সমাপ্তি ঘটবে। ময়দানে আজ কয়েক লাখ মুসল্লির অংশগ্রহণে জুমার জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
তাবলিগের শীর্ষ মুরুব্বি মাওলানা সাদ আহমদ কান্ধলভীর অনুসারীরা এ পর্বে অংশ নিচ্ছেন। তবে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তিনি (মাওলানা সাদ) ময়দানে আসেননি। তিনি আসবেন কি না, সেটিও নিশ্চিত নয়। তার তিন ছেলে ও জামাতা এদিন সকালে ময়দানে আসেন। বড় ছেলে মাওলানা ইউসুফ কান্ধলভী আজ জুমার জামাতে ইমামতি করতে পারেন।
দ্বিতীয় পর্ব আজ শুরু হলেও বুধবার রাত থেকে মুসল্লিরা ময়দানে আসতে শুরু করেন। নির্ধারিত খিত্তায় অবস্থান নিয়ে তারা ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল রয়েছেন। ৫১ জিম্মাদার খিত্তাগুলোর দেখাশোনার দায়িত্বে রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার বিকালে বিশ্বের অর্ধশতাধিক দেশের প্রায় ৪ হাজার ৬০০ মেহমান ময়দানে অবস্থান করছিলেন বলে জানিয়েছেন ইজতেমার মিডিয়া সমন্বয়কারী মোহাম্মদ সায়েম। তিনি আশা করছেন, আরও কয়েক হাজার বিদেশি মুসল্লি আসবেন।
আনুষ্ঠানিকভাবে আজ ইজতেমা শুরু হলেও বৃহস্পতিবার বাদ ফজর থেকেই শুরু হয় নানা কার্যক্রম। বাদ ফজর সমবেত মুসল্লিদের উদ্দেশে ইস্তেকবালি (স্বাগত) বয়ান করেন নিজামুদ্দিন মারকাজের মাওলানা চেরাগ উদ্দিন। বাংলায় তা অনুবাদ করেন বাংলাদেশের মাওলানা আজিমুদ্দিন।
বাদ জোহর বয়ান করেন নিজামুদ্দিন মারকাজের মুরুব্বি মাওলানা ফারুক। বাংলায় তা অনুবাদ করেন মাওলানা আশরাফ আলী। বাদ আসর বয়ান করেন পাকিস্তানের মাওলানা হারুন কোরাইশী, বাংলায় ভাষান্তর করেন মনির বিন ইউসুফ।
বাদ মাগরিব বয়ান করেন নিজামুদ্দিন মারকাজের মাওলানা জামশেদ, তা বাংলায় অনুবাদ করেন মাওলানা আব্দুল্লাহ। তারা ছয় উসুল, যথা-ইমান, নামাজ, এলেম ও জিকির, একরামুল মুসলিমিন, তাসহিহে নিয়ত, দাওয়াত ও তাবলিগ সম্পর্কে বিভিন্ন দিকনির্দেশনামূলক কথা বলছেন। মূল বয়ান সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন ভাষায় তরজমা করা হচ্ছে।
ইজতেমা আয়োজক কমিটির সদস্য হাজি মনির হোসেন যুগান্তরকে জানান, মাওলানা সাদ সাহেবের আসাটা অনিশ্চিত। আমরা দোয়া করছি, তিনি যেন আমাদের মাঝে আসতে পারেন। তবে তার তিন ছেলে ও জামাতা ময়দানে এসেছেন। তারা হলেন-বড় ছেলে মাওলানা ইউসুফ কান্ধলভী, মেজো ছেলে মাওলানা সাঈদ কান্ধলভী এবং ছোট ছেলে মাওলানা ইলিয়াস কান্ধলভী। তাদের সঙ্গে আসে মাওলানা সাদের মেয়ের জামাতা মাওলানা হাসানসহ সাতজনের একটি জামাত।
পুলিশের ব্রিফিং : বৃহস্পতিবার টেলিফোন শিল্প সংস্থা মাঠে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম বলেন, প্রথম পর্বের মতো এ পর্বেও পুরো ইজতেমা ময়দান নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে। কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের আশঙ্কা নেই।
নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ৫ হাজার ৩০ জন পুলিশসহ র্যাব ও সাদা পোশাকধারী বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রায় ১০ হাজার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছেন। এছাড়াও ময়দানে যাতে কোনো রোহিঙ্গা (মিয়ানমারের বাস্তুচুত নাগরিক) ঢুকতে না পরে, সেদিকে কড়া নজরদারি রয়েছে।
রোববার মেট্রোরেল চলবে বিকাল ৫টা পর্যন্ত : এমআরটি লাইন-৬-এর উপপ্রকল্প পরিচালক (গণসংযোগ) নাজমুল ইসলাম ভূঁইয়া যুগান্তরকে বলেন, বিশ্ব ইজতেমার মোনাজাতে অংশ নেওয়া মুসল্লিদের সুবিধার্থে রোববার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত মেট্রোরেল পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মেট্রোরেল প্রথমবারের মতো ওইদিন ৯ ঘণ্টা চলবে।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড সূত্র জানায়, বর্তমানে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত চার ঘণ্টা চলাচল করছে মেট্রোরেল। ২৫ জানুয়ারি থেকে সাড়ে ৮টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত চলাচল করবে।
ইজতেমা আয়োজক কমিটির শীর্ষ মুরুব্বি প্রকৌশলী শাহ মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহ বলেন, দেশ-বিদেশের কয়েক লাখ ধর্মপ্রাণ মেহমান ময়দানে নির্ধারিত খিত্তায় অবস্থান নিয়ে ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল রয়েছেন। রোববার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে বিশ্ব ইজতেমা শেষ হবে, ইনশাআল্লাহ।