উত্তোলন কমিয়ে দিচ্ছে রাশিয়া, অস্থিতিশীল হতে পারে তেলের বাজার

উত্তোলন কমিয়ে দিচ্ছে রাশিয়া, অস্থিতিশীল হতে পারে তেলের বাজার
আগামী মার্চ মাস থেকে তেল উত্তোলন কমিয়ে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া। পহেলা মার্চ থেকে দৈনিক তেল উত্তোলন ৫ লাখ ব্যারেল কমিয়ে দেবে মস্কো। রাশিয়ার তেলের ওপর ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞা ও জি৭-এর দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার পর এ পদক্ষেপ নিয়েছে পুতিন প্রশাসন। শুক্রবার দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী আলেক্সান্ডার নোভাক এ তথ্য জানান।

রাশিয়া তেল উত্তোলন কমিয়ে দিলে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দামে আবারো অস্থিরতা তৈরি হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করে আসছেন বাজার বিশ্লেষকরা। খবর রয়টার্স।

ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার পরও গত বছর দেশটির তেল উত্তোলন বেড়েছে। কারণ দেশটির তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা হয়ে উঠেছে ভারত ও চীন। গত বছর ৫৩৫ মিলিয়ন টন তেল উত্তোলন করে রাশিয়া। দিনে প্রায় ১০ দশমিক ৭ মিলিয়ন ব্যারেল তেল উত্তোলন করে দেশটি। রুশ প্রধানমন্ত্রী নতুন ঘোষণা অনুযায়ী, তেল উত্তোলন প্রায় অর্ধেক করে ফেলবে রাশিয়া।

এরই মধ্যে চলতি বছর রাশিয়ার তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন। এর ফলে জোটের কোনও দেশ রাশিয়া থেকে তেল কিনতে পারবে না। অন্যদিকে জি৭ রাশিয়ার তেলের মূল্য প্রতি ব্যারেলে ৬০ ডলার বেঁধে দেয়। প্রসঙ্গত, রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বাজেটের বড় অংশই আসে তেল রফতানি খাত থেকে।

শুক্রবার রাশিয়ান সংবাদ সংস্থার এক খবরে বলা হয়েছে, উপপ্রধানমন্ত্রী আলেক্সন্ডার নোভাক বলেন, এখন আমরা যা তেল উত্তোলন করছি তার সবই বিক্রি করছি। কিন্তু যারা রাশিয়ার তেলের দাম বেঁধে দেওয়ার সঙ্গে যারা তাদের কাছে আমরা তেল বিক্রি করবো না। এছাড়া আমরা দৈনিক তেল উত্তোলন ৫ লাখ ব্যারেল কমিয়ে দেবো।

রাশিয়ার তেলের ওপর ‘প্রাইস ক্যাপ’ দেওয়ার সিদ্ধান্তকে বাজারের জন্য ধ্বংসাত্মক উল্লেখ করে নোভাক বলেন, রাশিয়ার তেলের দাম নির্ধারণ আন্তর্জাতিক বাজারে সরাসরি হস্তক্ষেপ বলেই মনে করে মস্কো। এটি একটি ধ্বংসাত্মক জ্বালানি নীতি।

প্রসঙ্গত, রাশিয়া বিশ্বের শীর্ষ জ্বালানি তেল উত্তোলক ও সরবরাহকারী। দেশটির ওপর যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ (ইইউ) পশ্চিমা মিত্ররা নিষেধাজ্ঞার নীতি গ্রহণ করেছে। উদ্দেশ্য অর্থনৈতিকভাবে দেশটিতে কোণঠাসা করে দেয়া। সর্বশেষ রাশিয়া থেকে ডিজেল ও পেট্রলসহ পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি বন্ধ ঘোষণা করেছে ইইউ। পাশাপাশি এসব পণ্যের ওপর প্রাইস ক্যাপ দেয়া হয়েছে, যাতে অংশ নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া ও জি৭। রুশ জ্বালানি খাতের ওপর পশ্চিমা বিশ্বের এমন নীতি আগামী দিনগুলোয় বৈশ্বিক জ্বালানি খাতের জন্য ঝুঁকি বয়ে আনছে বলে করছেন বিশ্লেষকরা।

রোমভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিইআরের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, রাশিয়ার জ্বালানি তেলের ওপর এসব বিধিনিষেধ জ্বালানি তেলের বাজারকে আরো বেশি অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দেবে। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে সারা বিশ্বের অর্থনীতিতে।

এছাড়া নতুন নিষেধাজ্ঞার কারণে ইউরোপে শিগগিরই তেলের দাম বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। কেননা ইইউ জোটের ২৭টি দেশ রাশিয়ার পরিবর্তে যুক্তরাষ্ট্র, মধ্যপ্রাচ্য ও ভারত থেকে ডিজেলের নতুন সরবরাহ পাবে। নতুন এ উৎসগুলো রাশিয়ার তুলনায় দূরবর্তী অঞ্চলের। এতে সরবরাহ খরচ বাড়তে পারে।


আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

পেট্রোল-ডিজেলের নতুন দাম ঘোষণা
ভিসা ছাড়াই যুক্তরাজ্যে যেতে পারবে মুসলিম ৬ দেশ
মারা গেছেন পণ্ডিত ভবানী শঙ্কর
২০২৩ এ আলোচিত বিশ্বের সেরা ১০ ঘটনা
ব্রিকসে যোগ দেবে না আর্জেন্টিনা
নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত বিশ্ববাসী
১০ টাকাতেই মিলবে বই
বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারী ফ্রাঁসোয়া বেটেনকোর্ট
সৌদি আরবে আরো একটি স্বর্ণের খনির সন্ধান
শক্তিশালী ভূমিকম্পে কাঁপলো ইন্দোনেশিয়া