গত ১৫ মার্চ এমআইটি থেকে পাঠানো এক ই-মেইলে নাফিসের ভর্তির সুযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
গত বছরের অক্টোবরে ইন্দোনেশিয়ায় অনুষ্ঠিত ইন্টারন্যাশনাল অলিম্পিয়াড ইন ইনফরমেটিক্সে (আইওআই) বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করে ব্রোঞ্জপদক পান সিফাত।
সেই পদক লাভই তাকে এমআইটি পড়ালেখার সুযোগ করে দিয়েছে। কীভাবে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন এমন প্রশ্নের জবাবে এ কথা বললেন নাফিস।
নাফিস বলেন, ‘কোন কিছুই আসলে অসম্ভব নয়। চেষ্টা থাকতে হবে, আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে। ওরা আসলে দেখতে চায় পড়ালেখায় কতটা ভালো, মানুষ হিসেবে কেমন, কোন বিষয়ে আগ্রহ আছে কি না তার, সে কিভাবে সমস্যার সমাধান করছে। আমি আসলে অলিম্পিয়াড ইন ইনফরমেটিক্স এ ব্রোঞ্জ পদক লাভ করায় তারা আমাকে সম্মান শ্রেণিতে ভর্তির জন্য চূড়ান্ত ভাবে নির্বাচিত করেছেন। আমি সবার দোয়া চাই। বাংলাদেশের মানুষের জন্য কিছু করতে চাই। ’
নিজের স্বপ্নের কথা জানাতে গিয়ে নাফিস বলেন, ‘আমার ছোটবেলা থেকে স্বপ্ন ছিল কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়াশোনা করার। সেই লক্ষ্য নিয়ে আমি সব সময় বিভিন্ন অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ করতাম। এ ছাড়া আমি সবসময় বিখ্যাত ব্যক্তি ও গুণী স্যারদের অনুসরণ করতাম। কিন্তু কখনোই নির্দিষ্ট করে এমআইটির জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। কারণ, অনেক মেধাবী না হলে এমআইটিতে সুযোগ পাওয়া কঠিন। আমি এতটা আত্মবিশ্বাসী ছিলাম না। তারপরও আমি চেষ্টা করেছি, দেখি কি হয়। শেষ পর্যন্ত দেখলাম, আমি সত্যি সুযোগ পেয়েছি। এতে মনে করি, আমি অনেকটা ভাগ্যবান। ’
নবীনদের উদ্দেশ্যে নাফিস বলেন, ‘নবীন শিক্ষার্থীদের কাছে অনুরোধ থাকবে, ভালোভাবে পড়াশোনা করতে হবে এবং এর পাশাপাশি এক্সটা কারিকুলাম একিটিভিটিসগুলোতে নিজেদেরকে যুক্ত রাখতে হবে। ’
বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) দুপুরে নিজ কলেজ ক্যাম্পাসে পৌঁছালে কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর অসিত বরণ দাশ নাফিসকে বুকে টেনে নেন এবং ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
অধ্যক্ষ বলেন, ‘তুমি আমাদের শিক্ষা পরিবারের গৌরব, আমাদের চাঁদপুরবাসীর অহংকার। তোমার জন্য আমরা ধন্য। বিশ্বখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির মাধ্যমে তুমি চাঁদপুর তথা বাংলাদেশের নাম বিশ্ব দরবারে তুলে ধরেছ। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবেলায় তোমাদের মত স্মার্ট শিক্ষার্থী, গড়ে তুলবে স্মার্ট বাংলাদেশ। ’
পরদিন (শুক্রবার) সকালে চাঁদপুর সরকারি কলেজে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবেসের সভায় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় মেধাবী শিক্ষার্থী মো. নাফিস উল হক সিফাতের। এ সময় শিক্ষামন্ত্রী তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
চাঁদপুর শহরের চেয়ারম্যান ঘাট এলাকায় বাবা-মায়ের সঙ্গে ভাড়া বাসায় থাকেন নাফিস। বাবা-মা দুজনেই শিক্ষকতা করেন। নাফিসের বাবা নাসির উদ্দিন মতলব দক্ষিণ উপজেলার রয়মনেননেসা মহিলা কলেজের শিক্ষক। আর মা কামরুন নাহার হাজীগঞ্জ মডেল সরকারি কলেজে শিক্ষকতা করেন। নাফিসের গ্রামের বাড়ি মতলব দক্ষিণের নওগাঁ গ্রামে।
অর্থসংবাদ/এসএম