সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই সহায়তার পরিমাণ আগের তুলনায় বেড়েছে, কিন্তু ঋণ নিয়ে ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’র উদ্যোগের স্থাপনা বানানো অনেক দেশের পক্ষেই এখন ঋণ পরিশোধ কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
সোমবার (স্থানীয় সময়) যুক্তরাষ্ট্রের উইলিয়াম মেরি কলেজ প্রকাশিত ‘চায়না অ্যাজ অ্যান ইন্টারন্যাশনাল লেনডার অব লাস্ট রিসোর্ট’ প্রতিবেদনে এই দাবি করা হয়েছে। সিএনএন, রয়টার্স, এএফপি।
বিশ্বব্যাংকের হার্ভাড কেনেডি স্কুল, এইডডাটা এবং কেইল ইনস্টিটিউট ফর দ্য ওয়ার্ল্ড ইকোনোমির সমন্বয়ে গঠিত গবেষক দল জানিয়েছে, এসব জরুরি ঋণের বেশিরভাগই চীন দিয়েছে ২০১৬ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে। বিশেষ করে মধ্য আয়ের দেশগুলোকে ঋণ দেওয়া হয়েছে।
চীনের এ সহায়তা পাওয়ার তালিকায় প্রথম সারিতে রয়েছে পাকিস্তান, শ্রীলংকা, ভিয়েতনাম, বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া, আর্জেন্টিনা এবং মঙ্গোলিয়ার মতো দেশগুলো (চায়না গ্লোবাল ইনভেস্টমেন্ট ট্র্যাকার চার্ট)। বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণের জন্য উন্নয়নশীল দেশগুলোকে কয়েকশ বিলিয়ন ডলার দিয়েছে বেইজিং। কিন্তু ২০১৬ সাল থেকে দেশটি অবকাঠামো নির্মাণের ঋণ দেওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দেয়। কারণ এসব অর্থ যেসব প্রজেক্টে খরচ করা হয়েছে, সেগুলো থেকে প্রত্যাশা অনুযায়ী লভ্যাংশ পাওয়া যায়নি।
বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ও এই গবেষণা প্রতিবেদনের অন্যতম গবেষক কার্মেন রেইনহার্ট বলেছেন, ‘বেইজিং মূলত নিজ ব্যাংককে বাঁচাতে চাইছে। এ কারণে তারা জরুরি ঋণ দেওয়ার মতো ঝুঁকিপূর্ণ কাজে যুক্ত হয়েছে।’
গবেষণায় পাওয়া গেছে, ২০১০ সালে চীনের আন্তর্জাতিক জরুরি ঋণ দেওয়ার পরিমাণ ৫ শতাংশ ছিল। কিন্তু সেটি ২০২২ সালের মধ্যে বেড়ে ৬০ শতাংশে উপনীত হয়েছে। চীনের সবচেয়ে বেশি ১১১ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার ঋণ পেয়েছে আর্জেন্টিনা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৮ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার পেয়েছে পাকিস্তান। তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৫ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার পেয়েছে মিসর। আর নয়টি দেশ ১ বিলিয়নের কম ডলার পেয়েছে। গবেষণায় বের হয়ে এসেছে, চীনের পিপলস ব্যাংক অব চায়না (পিবিওসি) সবচেয়ে বেশি ১৭০ বিলিয়ন জরুরি ঋণ প্রদান করেছে। ব্যাংকটির ঋণ পাওয়ার তালিকায় রয়েছে সুরিনাম, শ্রীলংকা এবং মিসর।
এর মধ্যে ব্রিজ লোন ছিল ৭০ বিলিয়ন ডলার। এই গবেষণায় কিছু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সমালোচনা করা হয়েছে, যেগুলো পিবিওসির সোয়াপ লাইন ব্যবহার করে কৃত্রিমভাবে তাদের বৈদেশিক রিজার্ভের পরিমাণ বাড়াচ্ছে। চীনের জরুরি ঋণ নিয়ে করা এ গবেষণার অন্যতম প্রধান গবেষক ব্র্যাড পার্কস বলেছেন, চীনের ঋণ দেওয়ার বিষয়টি ‘অস্বচ্ছ এবং সমন্বয়হীন।’ এদিকে সাম্প্রতিক সময়ে চীন ঘোষণা দিয়েছে-জাম্বিয়া, শ্রীলংকা এবং ঘানার মতো কয়েকটি দেশের সঙ্গে ঋণ কাঠামো পুনর্গঠন করা হবে।