সুত্র জানায়, আজ সোমবার (৩১ আগস্ট) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে বিএসইসি এ সংক্রান্ত একটি চিঠি দিয়েছে। সম্প্রতি কোন কারন ছাড়াই অস্বাভাবিকভাবে শেয়ারের দর বৃদ্ধি পেয়েছে এ দুটি কোম্পানির শেয়ারের। আগামী ২০ কার্যদিবসের মধ্যে অনুসন্ধান করে ডিএসইসিকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছে বিএসইসি।
সুত্র জনায়, কোম্পানি দটির কোন ধরনের মূল্য সংবেদনশীল তথ্য রয়েছে কি না, তা খুজে বের করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বিএসইস কঠোর অবস্থানে রয়েছে এ বিষয়ে।
এদিকে মাত্র ৪৯ কার্যদিবসের ব্যবধানে জিলবাংলা সুগারের শেয়ার দর ৪১ টাকা থেকে বেড়ে সর্বশেষ ডিএসইতে ২০৬ টাকায় লেনদেন হয়েছে। বাজারে গুজব রয়েছে রুগ্ণ এই প্রতিষ্ঠানটিকে খুব শিগগির মদ তৈরির অনুমোদন দেওয়া হবে। এতে কোম্পানির আর্থিক অবস্থার পরিবর্তন হবে। মূলত এই গুজবকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে ফায়দা নিচ্ছেন একধরনের সুযোগ সন্ধানী বিনিয়োগকারীরা।
জানা গেছে, জিলবাংলা সুগার গত ২৯ বছর যাবত শেয়ারহোল্ডারদের কোনো ডিভিডেন্ড দিতে পারেনি। ফলে জেড গ্রুপে থাকা এ প্রতিষ্ঠানটির লোকসান বছরের পর বছর ভারি হচ্ছে। চলতি বছরের শুরুতে প্রতিষ্ঠানটির নিরীক্ষক জানিয়েছেন, এ প্রতিষ্ঠানটির মুনাফায় যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। কোম্পানির ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য সরকারের সহায়তা দরকার বলেও জানান নিরীক্ষক।
এদিকে কোম্পানিটির নিরীক্ষক এর উৎপাদন সক্ষমতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। সর্বশেষ অর্থবছরের আর্থিক হিসাব নিরীক্ষায় এ শঙ্কার কথা জানান নিরীক্ষক। প্রতিবেদনে জানানো হয়, কোম্পানিটির পক্ষে আগামী কয়েক বছরের মুনাফা করা সম্ভব নয়। একই সঙ্গে সরকারের সহায়তা ছাড়া উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব নয়।
জিলবাংলা সুগারের পরিশোধিত মূলধন মাত্র ছয় কোটি টাকা। পুঞ্জীভূত লোকসান ৩৭০ কোটি ৮০ লাখ টাকা। শেয়ারপ্রতি পুঞ্জীভূত লোকসান রয়েছে ৬০০ টাকার বেশি। এদিকে প্রতি বছরই লোকসান আরও ভারি হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটির। ২০১৭ সালে এই প্রতিষ্ঠানটির লোকসানের পরিমাণ ছিল ৩২ কোটি টাকা, পরের বছর তা বেড়ে হয় ৪৮ কোটি টাকা। সর্বশেষ ২০১৯ সালে তা আরও বেড়ে ৬২ কোটি টাকা হয়। অন্যদিকে সর্বশেষ তিন প্রান্তিক মিলে (জুলাই ১৯ থেকে মার্চ ২০) প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৪৪ টাকা ৭২ পয়সা করে।
১৯৮৮ সালে জিলবাংলা সুগার পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। পুঁজিবাজারে এসেই লোকসানের মুখে পড়ে প্রতিষ্ঠানটি। কোম্পানি সূত্র জানায়, এ প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে শেয়ারহোল্ডাররা সর্বশেষ লভ্যাংশ পান ১৯৯০ সালে। ওই বছর কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের ২০ শতাংশ লভ্যাংশ প্রদান করে। এরপরের বছর অর্থাৎ ১৯৯১ সালে শেয়ারহোল্ডারদের হতাশ করে নো-ডিভিডেন্ড ঘোষণা করা হয়। সেই থেকে আজ পর্যন্ত এ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারহোল্ডাররা লভ্যাংশের দেখা পাননি।
একই সঙ্গে সম্প্রতি শ্যামপুর সুগারের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে।সম্প্রতি ২৯ টাকা থেকে বেড়ে সর্বশেষ ৭৪ টাকায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে।