সৌদি আরবের সরকারি উন্নয়ন তহবিল সৌদি ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্টের (এসএফডি) পক্ষ থেকে এই ঋণ দেওয়া হয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ।
পাকিস্তানের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ খাইবার পাখতুনখোয়ার মোহমান্দ জেলার এই জলবিদ্যুৎ প্রকল্পটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই প্রকল্পের সঙ্গে খাইবার পাখতুনখোয়ার বিদ্যুৎ নিরাপত্তা, কৃষি ও দৈনন্দিন কাজে ব্যবহারযোগ্য পানির সহজপ্রাপ্যতা ও বন্যা প্রতিরোধের মতো ব্যাপারগুলো সম্পর্কিত।
সৌদি ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্ট ছাড়াও মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক আরও ৩টি প্রতিষ্ঠান এ প্রকল্পের অর্থ ও ঋণ সহায়তার দিচ্ছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো হলো জ্বালানি তেল উত্তোলন ও রপ্তানিকারী দেশগুলোর জোট ওপেক, ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক এবং কুয়েত ফান্ড।
শুক্রবার রাজধানী ইসলামাবাদে এসএফডির শীর্ষ নির্বাহী সুলতান আবদুলরহমান আল-মারশাদ এবং পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. কাজিম নিয়াজের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয় এই ঋণের চুক্তি।
পরে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ সম্পর্কে বলা হয়, ‘পাকিস্তানের স্থিতিশীল উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এই ঋণের অর্থ ব্যয় করা হবে।’
‘আর এই উন্নয়নের কেন্দ্রে থাকবে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশ। এই প্রদেশের ৮০ শতাংশ মানুষ এখনও গ্রামাঞ্চলে বাস করে। কাজ শেষ হলে এই প্রকল্পটি থেকে প্রতি বছর ৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে, যা খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের চাহিদা মেটানোর জন্য যথেষ্ট। এছাড়া ড্যামে যে ১৬ লাখ কিউব মিটার পানি সংরক্ষণ করা হবে— তা ব্যয় হবে প্রদেশের কৃষির উন্নয়ন ও মানুষের দৈনন্দিন ব্যবহারের কাজে।’
দুর্নীতি, অপব্যয় এবং অব্যবস্থাপনার কারণে বৈদেশিক মুদ্রা, বিশেষ করে ডলারের মজুত তলানিতে নেমে যাওয়ায় ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান। একটি দেশের ন্যূনতম অর্থনৈতিক ভারসাম্য বজায় রাখতে হলে ওই দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর মতো অর্থ থাকতে হয়; কিন্তু পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে যে পরিমাণ অর্থ আছে— তা দিয়ে বড়জোর দু’সপ্তাহের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব হবে।
দেশের টালমাটাল অর্থনীতিকে সচল রাখতে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ঋণদাতা সংস্থা আইএমএফের কাছে জরুরি ঋণ (বেইল আউট) চেয়েছে পাকিস্তান। আইএমএফ এখনও সবুজ সংকেত দেয়নি, আবার পাকিস্তানের আবেদন প্রত্যাখ্যানও করেনি।
এই পরিস্থিতিতে সৌদির এই ঋণ পাকিস্তানের জন্য একটি বড় স্বস্তির ব্যাপার।
অর্থসংবাদ/এসএম