আজ বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিডার চতুর্থ বর্ষপূর্তি উদযাপন ও বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ে ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে আরও বলেন ‘পরামর্শ এসেছে বিডার মতো আরেকটি প্রতিষ্ঠান করার জন্য। তারা উপদেশ দেবে কোন লাইনে প্রোডাক্ট ডাইভারসিফিকেশন করবো, আরেকটি প্রতিষ্ঠান না করে বিডা যদি আরেকটি উইং করে পৃথিবীর কোন কোন দেশ কীভাবে ডাইভারসিফিকেশন করছে সেসবের সঙ্গে সঙ্গতি করা যায়।’
অর্থমন্ত্রী পুরো বিশ্বের চাহিদার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘চার-পাঁচটি প্রোডাক্ট নিয়ে রফতানি বাণিজ্য বাড়াতে পারবো না। ডেমগ্রাফিক ডিভিডেন্ট কাজে লাগাতে হবে। জনশক্তিকে কাজে লাগান, লোকাজ ইন্ডাস্ট্রিজের জন্য অবারিত দরজা খুলে রেখেছি।’
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বিগত চার বছর ধরে বিডা আশার আলো দেখাচ্ছে। ফেইল করার কোনো মানুষ এখন বিডায় সম্পৃক্ত নেই। আমরা অনেক কষ্ট করে এখানে এসেছি।’
বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ কম জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘পৃথিবীতে এ মুহূর্তে জিডিপি সাইজ হচ্ছে ১৮ ট্রিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে ৬০ শতাংশ হচ্ছে ডাইরেক্ট ফরেন ইনভেস্টমেন্ট। ভেরি আনফোরচুনেটলি এফডিআই পরিমাণ আমাদের কম। এফডিআই সবচেয়ে বেশি এনজয় করে যুক্তরাষ্ট্র এরপর চীন এবং সিঙ্গাপুর ১০৫ বিলিয়ন ডলার, ভারত ৫১ বিলিয়ন ডলার। বেশিরভাগ এফডিআই তাদের দখলে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি যে ভৌত অবকাঠামোগুলো তৈরি করেছি এখন বিনিয়োগ আসবে। ফিজিক্যাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার আমাদের হয়েছে নন ফিজিক্যাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার মানবিক কাজগুলো দরকার, মানুষের হৃদয়কে স্পর্শ করবো, মানুষকে ভালোবাসবো।
তিনি আরও বলেন, ‘দেশি বা বিদেশি সব বিনিয়োগকারী আমাদের কাছে সমান। আমরা কোনো ডিসক্রিমিনেইট করবো না করিনি। যারা বিনিয়োগ করবে তারাই আমাদের সম্পদ। আমাদের সম্পদকে আমরা সম্পদশালী হিসেবে দেখতে চাই।’
যেসব জায়গায় ঘাটতি রয়েছে সেগুলো ঠিক করার তাগিদ দিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ভিয়েতনাম যেভাবে পেরেছে সেভাবে আমাদের করতে হবে। জিডিপি গ্রোথ ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ, যা দক্ষিণ এশিয়ায় সবার উপরে থাকবে। একমাত্র ভিয়েতনামকে আমাদের কাছাকাছি মনে হয়। এছাড়া আমাদের সমপরিমাণ কেউ হবে না। জুলাই-আগস্ট মাসে সামস্টিক অর্থনীতির প্রতিটি কম্পনেন্ট খুব পজিটিভলি উপস্থাপিত হয়েছে, রেমিন্ট্যান্সের পরিমাণ বেড়েছে অবিশ্বাস্যভাবে।
‘আমাদের যে সম্পদ তার পুরোটা আমরা ব্যবহার করতে পারিনি, আমাদের সম্পদ জনশক্তি। সব জায়গায় ডিজিটালাইজ হচ্ছে। আমাদের জনশক্তি যদি যথাযথভাবে ব্যবহার করতে পারি আমি বিশ্বাস করি এরাই হবে বড় শক্তি।’
বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘দেশীয় বিনিয়োগকারীদের সহায়তার পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণ করার কাজ করে যাচ্ছি। বিনিয়োগ বিকাশের জন্য নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি প্রয়োজন, বর্তমানে যারা উদ্যোক্তা তারা নিজেদের চেষ্টায় হয়েছেন। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে উদ্যোক্তা সৃষ্টি করা সম্ভব। নতুন বিনিয়োগকারী সৃষ্টির জন্য বিডা প্রকল্প গ্রহণ করেছে। ৬৪ জেলায় বিনিয়োগকারী ও উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে কাজ করে যাচ্ছি।’
বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক বলেন, ‘বিডার অধীনে কাউন্সিল করলে আইন ও অবকাঠামো সুবিধা হবে। আশা করি এ বিষয়ে বিডা ভূমিকা রাখবে।’
অনুষ্ঠানে শীর্ষস্থানীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠান প্রাণ গ্রুপের পরিচালক (করপোরেট ফাইন্যান্স) উজমা চৌধুরী বলেন, ‘সহজে ব্যবসা করার সূচক ভালো হচ্ছে। আশা করি আমরা সহজে ব্যবসা করতে পারবো। অলরেডি বাংলাদেশে ইনভেস্টমেন্ট এনভায়রনমেন্ট অনেক উন্নত হয়েছে। আমরা চাই আগামীতে ব্যবসার পরিবেশ যেন আরও উন্নত হয়। দেশে আরও বেশি ব্যবসা আসুক, দেশ আরও বেশি ব্যবসাবান্ধব হোক। দেশে কর্মসংস্থান বেশি বেশি সৃষ্টি হোক। এভাবে যদি বিডা আমাদের এগিয়ে নিতে পারে আমরা করোনার মতো বড় কোনো বিপদ এলেও এগিয়ে যেতে পারব।’
অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, ইউনিলিভার বাংলাদেশের সিইও-এমডি কেদার লেলে, গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান, হুয়াওয়ে টেকনোলজিস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের সিইও ঝাং ঝেংজুন বক্তব্য রাখেন।