সোমবার (৫ মে) ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) ধর্মতত্ত্ব ও ইসলাম শিক্ষা অনুষদভুক্ত ‘ডি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে প্রতিবন্ধী হাবিবুর রহমান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ ভবনের ১০৩ নম্বর কক্ষে পরীক্ষা সম্পন্ন করেন। এর আগে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন।
তিনি বাল্যকালে পরিবারের সকল সদস্যদের অনুপ্রেরণায় পা দিয়ে লেখার অভ্যাস করেন। তিনি স্থানীয় মাদ্রাসা হতে দাখিল ও আলিম পরীক্ষা যথাক্রমে ২০২০ ও ২০২৩ সালে সম্পন্ন করেছেন। তিনি উভয় পরীক্ষায় যথাক্রমে জিপিএ ৪.৬৩ ও জিপিএ ৪. ৫৭ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন।
অর্থসংবাদকে হাবিবুর রহমান বলেন, বাবা-মা, ভাই-বোন সবাই আমাকে এ পর্যায়ে আসার জন্য অনুপ্রেরণা দিয়েছে। স্কুল, কলেজ কোনো জায়গায় আমি প্রতিবন্ধকতার স্বীকার হয় নি। সবাই আমাকে অনেক সহযোগিতা করেছে।
স্বপ্নটা দেখেছেন আলেম হওয়ার। স্বপ্নযুদ্ধা হাবিবুর রহমান বলেন, আমার আলিম পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরপরই সবাই ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ধর্মতত্ত্ব ইউনিটে পরীক্ষা দিতে বলছিল। আমারও ইচ্ছে ছিল। ভবিষ্যতে আমি আলেম হতে চাই।
হাবিব প্রতিন্ধকতার শিকার অন্যান্য শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমার মতো যারা এরকম নানা সমস্যায় সমুক্ষীণ তাদেরকে এইটা বলতে চাই যে হীনমন্যতায় ভোগা যাবে না। সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। চেষ্টা না করলে কোনো কিছুই সম্ভব না। চেষ্টা করলে মানুষ অনেক কিছুই পায়। কষ্ট হবে বিপদ আসবে সংগ্রামের সাথে এটিকে জয় করতে হবে।
পড়াশোনা করতে কোন সমস্যা হয় কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাঝে মাঝে পা দিয়ে লিখতে সমস্যা হয়। কলম পড়ে যায়।
পরিক্ষার হলে স্যার-ম্যামরা অনেক সহযোগিতা করেছে উল্লেখ্য করে তিনি বলেন, আমি সেট কোড লিখতে ভুলে গিয়েছিলাম পরে ম্যাম আমার সেট কোডটি লিখে দিয়েছে।
এ বিষয়ে ইবি কেন্দ্রে আসা হাবিবুর রহমানের দূর সম্পর্কের এক কাকা আজমাল হোসেন জানান, হাবিব যে এতদূর এগিয়েছে এতে এলাকার লোকও খুশি আমরাও খুশি। আমি তার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করি।
এ প্রসঙ্গে ঐ পরিক্ষা কক্ষটিই দায়িত্বে থাকা শিক্ষক আইন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. রেবা মন্ডল বলেন, ছেলেটি একজন অদম্য জীবন যোদ্ধা। আমরা পরীক্ষা হলে তাকে যথাসাধ্য সহযোগিতা করেছি।
উল্লেখ্য, ‘ডি’ ইউনিটের অধীনে ধর্মতত্ত্ব ও ইসলামী শিক্ষা অনুষদের তিনটি বিভাগ (আল-কুরআন এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ, আল-হাদিস এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ ও ও দা‘ওয়াহ এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ) এবং কলা অনুষদভুক্ত আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সর্বমোট ৩২০ টি আসনের বিপরীতে পরীক্ষাটি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অর্থসংবাদ/এসএ