গত কয়েক বছরে দামের উত্থান-পতনের ধারাবাহিকতায় এখন বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম পড়তির দিকে। গত এক বছরের বেশি সময় ধরে রাশিয়া বিশ্ববাজারে কম মূল্যের জ্বালানি তেল সরবরাহের কারণে দামে স্থিতাবস্থা আনতে পারছিল না ওপেক ও ওপেক প্লাস। ওপেক প্লাসভুক্ত দেশগুলো এর আগেও তেল উৎপাদন কমানোর জন্য দুই দফা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তবে তাতে কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
অবশেষে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় ওপেক প্লাসের সদস্য দেশগুলোর মন্ত্রীদের দীর্ঘ বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, জোটগতভাবে দৈনিক ১৪ লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদন কমানো হবে। এর মধ্যে সৌদি একাই কমিয়ে দেবে ১০ লাখ ব্যারেল।
রোববার সৌদি আরবের জ্বালানি মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, আগামী জুলাইয়ের প্রথম দিন থেকেই তারা বর্তমান উৎপাদনের চেয়ে গড়ে অন্তত ১০ লাখ ব্যারেল জ্বালানি তেল কম উৎপাদন করবে। সৌদি আরবের জ্বালানিমন্ত্রী আব্দুল আজিজ বিন সালমান এক সংবাদ সম্মেলনে ওপেক প্লাসের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে বলেন, এটি আমাদের জন্য বিশাল এক প্রাপ্তির দিন।
কারণ আমরা যে সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি, তা নজিরবিহীন। জ্বালানি তেলের উৎপাদন কমানোর এই সিদ্ধান্ত অনেক বেশি স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষ। এদিকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা বিশ্বের দেশগুলো ওপেক প্লাসের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলছে, এর ফলে রাশিয়াই উপকৃত হবে। কারণ ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার জ্বালানি বাণিজ্যের ওপর অবরোধ আরোপ করলেও তেলের দাম বাড়ায় এমনিতেই ওই অবরোধ খুব একটা কার্যকর হচ্ছে না। তার ওপর ওপেক প্লাসের এই সিদ্ধান্ত রাশিয়াকে আরও বেশি সুবিধা করে দেবে। ওপেক প্লাসভুক্ত দেশগুলো বিশ্বের অপরিশোধিত তেলের প্রায় ৪০ শতাংশ উৎপাদন করে থাকে।
গত কয়েক মাসে ওপেক প্লাস তাদের দৈনিক উৎপাদন থেকে ২০ লাখ ব্যারেল উৎপাদন কমিয়েছে। এখন আবার ১৪ লাখ ব্যারেল কমিয়ে দিলে বিশ্ববাজারে তা বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।