রাশিয়ার দখলে থাকা অঞ্চল পুনরুদ্ধারে পালটা আক্রমণ চালাচ্ছে ইউক্রেন। চলতি সপ্তাহে শুরু হওয়া এই হামলায় বেশ সফলতাও পাচ্ছে ইউক্রেন। রাশিয়ার দখলে থাকা বেশ কিছু এলাকাও নিজেদের দখলে নিয়েছে ইউক্রেন বাহিনী। রাশিয়াকে হটিয়ে পুনরায় দখল নেওয়া এলাকায় মিলছে রুশ সেনাদের সারি সারি লাশ। মিলছে ট্যাংক-সাঁজোয়া যানের ধ্বংসস্তূপও। খবর রয়টার্সের।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সদ্য মুক্ত হওয়া স্টোরোজেভ নামে একটি ইউক্রেনীয় গ্রামের রাস্তায় রুশ সেনাদের লাশ এবং পোড়া সাঁজোয়া যান সারিবদ্ধ হয়ে পড়ে আছে। ইউক্রেনীয় সেনারা দক্ষিণ ও পূর্ব ইউক্রেনে পালটা হামলার অংশ হিসাবে গত কয়েক দিনে স্টোরোজেভ ও আরও কয়েকটি গ্রাম পুনর্দখল করে এবং ভয়ঙ্কর এই দৃশ্য সেই যুদ্ধের নৃশংসতার সাক্ষ্যই বহন করছে।
বার্তা সংস্থাটি বলছে, বুধবার যখন রয়টার্সের সাংবাদিকরা ওই গ্রামে পৌঁছান, তখন নিহত কিছু রাশিয়ান সৈন্য তাদের গাড়ির ধ্বংসস্তূপের পাশে ধুলোমাটিতে পড়েছিল। অন্যরা আশপাশের ঘাস ও মাঠের মধ্যে পিষ্ট হয়ে পড়েছিল। মূলত সেখানেই মৃত্যু হয়েছিল তাদের।
রাশিয়া-ইউক্রেনের ভয়াবহ এই যুদ্ধে স্টোরোজেভ গ্রামের অভ্যন্তরে রাস্তার ধারে সারিবদ্ধ ছোট একতলা বাড়িগুলো গোলাবর্ষণে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব বাড়ির ছাদ সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে বা গোলার আঘাতে গর্ত সৃষ্টি হয়েছে।
নিজেকে আর্টেম বলে পরিচয় দেওয়া ইউক্রেনীয় সৈনিক স্টোরোজেভ গ্রামে রয়টার্সকে বলেন, ‘তিন দিন আগে আমরা স্টোরোজেভ গ্রাম মুক্ত করেছি। আপনারা দেখতে পারেন কীভাবে এটি দখলে নেওয়া হয়েছে। ধ্বংস হওয়া হার্ডওয়্যারটি দেখতে পাচ্ছেন। ইউক্রেনের জন্য এটি গৌরবের।’
সোমবার অনলাইনে পোস্ট করা ছবিতে ইউক্রেনীয় সেনাদের স্টোরোজেভের একটি ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির সামনে ইউক্রেনের হলুদ ও নীল পতাকা ধরে থাকতে দেখা যায়।
রয়টার্স বলছে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ান বাহিনী ইউক্রেন আক্রমণ শুরু করে। পূর্ণ মাত্রায় শুরু হওয়া সেই আগ্রাসনের এক মাস পরে ২০২২ সালের মার্চ মাস থেকে এই গ্রামটি রাশিয়ান বাহিনীর দখলে ছিল।
ইউক্রেনীয় সেনারা বলেছেন, তাদের আক্রমণে প্রায় ৫০ রুশ সেনা নিহত হয়েছেন এবং চারজনকে বন্দি করা হয়েছে। রয়টার্স রাশিয়ান সেনাদের হতাহতের এ সংখ্যা যাচাই করতে পারেনি। যদিও লাশ এখনো রাস্তা এবং আশপাশের মাঠে ছড়িয়ে পড়ে রয়েছে।
স্টোরোজেভ গ্রামটি মোকরি ইয়ালি নদীর কাছে অবস্থিত গ্রামগুলোর একটি। এর আগে গত রোববার ইউক্রেন জানায়, তার বাহিনী দেশের দক্ষিণ দিকে অগ্রসর হয়ে মোকরি ইয়ালি বরাবর তিনটি গ্রাম রাশিয়ার দখলদারিত্ব থেকে মুক্ত করেছে।
ওই তিনটি গ্রাম হচ্ছে— ব্লাহোদাত্নে, নেসকুচনে ও মাকারিভকা। পরে সব মিলিয়ে রাশিয়ার দখলে থাকা সাতটি গ্রাম নিজেদের দখলে নেওয়ার দাবি করে ইউক্রেন।
অর্থসংবাদ/এসইউ