সিএই তার ২০২৩ সালের এভিয়েশন ট্যালেন্ট পূর্বাভাসে বলেছে, অবসরে যাওয়া, ছুটিসহ বিমান শিল্পের প্রসারের ফলে সৃষ্ট শূন্যপদে দক্ষ কর্মীর প্রয়োজন। এর মধ্যে কমার্শিয়াল এভিয়েশন খাত পরিচালনে প্রায় ১১ লাখ ৮০ হাজার এবং বিজনেস এভিয়েশনে ১ লাখ ৬ হাজার কর্মীকে নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ দেয়া।
সিএইর সিভিল এভিয়েশন ইউনিটের গ্রুপ প্রেসিডেন্ট নিক লিওন্টিডিস বলেন, ‘আমাদের শিল্পের অব্যাহত প্রবৃদ্ধি ও নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় প্রতিভা খুঁজে বের করতে হবে। নতুন প্রজন্মের কাছে এভিয়েশন শিল্পে ক্যারিয়ার গড়ার আহ্বান পৌঁছে দিতে হবে। এজন্য তাদের কাছে উদ্ভাবনী সহায়তা প্রোগ্রাম হাতে নিতে হবে। বাণিজ্যিক উড়োজাহাজ চলাচল ফের সম্পূর্ণ স্বাভাবিক মাত্রায় পৌঁছানোর কাছাকাছি। অন্যদিকে ব্যবসায়িক উড়োজাহাজ চলাচলও কভিড-১৯ মহামারীর পূর্বাবস্থার চেয়ে বেশি হচ্ছে। ফলে চাহিদার পরিমাণ বাড়ছে। তাই ১০ বছর বা তারও পরবর্তী সময়ের জন্য এ খাতে উচ্চ প্রশিক্ষিত কর্মীর জোগান নিশ্চিত করতে শিল্পকে একত্রিত হয়ে সৃজনশীল উপায় খুঁজে বের করতে হবে।’
বর্তমানে পাইলট থেকে শুরু করে লাগেজ হ্যান্ডলার, টিকিট এজেন্ট, ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট ও এয়ারক্রাফট মেকানিকস পর্যন্ত বৈশ্বিক উড়োজাহাজ শিল্প ব্যবসার সব ক্ষেত্রে শ্রমিকের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এ চাহিদার ভিত্তিতেই ১০ বছরের পূর্বাভাস তৈরি করেছে সংস্থাটি। মহামারী চলাকালীন বহুসংখ্যক উড়োজাহাজ কর্মী ছাঁটাই হয়ে সুবিধাজনক অন্য পেশায় চলে যান। বর্তমানে ভ্রমণ চাহিদা পুনরুদ্ধারের গতির তুলনায় এ খাতে নিয়োগ প্রক্রিয়া তুলনামূলক ধীরগতিতে চলছে।
ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের (আইএটিএ) প্রত্যাশা, ২০২৪ সালে আকাশপথে যাত্রী সংখ্যা ২০১৯ সালের মতো স্বাভাবিকে ফিরে যাবে। এক্ষেত্রে ২০২৩ সালে উত্তর আমেরিকা নেতৃত্ব দেবে। ২০২৪ সালে নেত্বত্ব দেবে ইউরোপ, লাতিন আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্য। ২০২৫ সালে এ নেতৃত্ব যাবে আফ্রিকা ও এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে।
মহামারীর সময়ে উড়োজাহাজের পুরনো মডেলগুলো গ্রাউন্ডেড করে রাখা হয়েছিল। সাম্প্রতিক সময়ে উচ্চ ভ্রমণ চাহিদার কারণে এয়ারলাইনসগুলো ফ্লাইট সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা করছে। তারা নতুন করে উড়োজাহাজ ও প্রযুক্তি কিনতে বিনিয়োগ শুরু করেছেন। সিএই জানিয়েছে, সিভিল এভিয়েশন ইন্ডাস্ট্রির জন্য ১০ বছরে ২ লাখ ৮৪ হাজার নতুন পাইলট, ৪ লাখ ২ হাজার নতুন প্রযুক্তিবিদ ও ৫ লাখ ৯৯ হাজার কেবিন ক্রু প্রয়োজন।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, এভিয়েশন শিল্পে ২০৩২ সালের মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যে ১ লাখ ২৯ হাজার ও আফ্রিকায় ২৯ হাজার নতুন দক্ষ জনবলের প্রয়োজন। শুধু মধ্যপ্রাচ্যই বাণিজ্যিক এভিয়েশন সেক্টরে ১০ বছরে ২৮ হাজার বাণিজ্যিক পাইলট, ২২ হাজার বাণিজ্যিক রক্ষণাবেক্ষণ প্রযুক্তিবিদ ও ৭৮ হাজার কেবিন ক্রু নিয়োগ দেবে। আর বিজনেস এভিয়েশন খাতে ৪৫০ জন পাইলটসহ এক হাজার নতুন কর্মীর প্রয়োজন পড়বে।
মার্কিন বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং গত সপ্তাহে বলেছে, ২০ বছরে বিশ্বব্যাপী প্রায় ২৩ লাখ নতুন এভিয়েশন শ্রমিকের প্রয়োজন। বৈশ্বিক শ্রম চাহিদার ১৩ শতাংশ আসবে মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকা থেকে। প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে ও অবসরপ্রাপ্ত জনবলের বিপরীতে দক্ষ জনবল পেতে এয়ারলাইনসগুলো দুই দশকে বিশ্বব্যাপী ২০ কোটি ডলার খরচ করবে।
অন্যদিকে দুবাইয়ের এমিরেটস গ্রুপের এমিরেটস এভিয়েশন ইউনিভার্সিটি ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক প্রোগ্রামে ২ হাজার ৯৮১টি আবেদন পেয়েছে, যা ২০১৯-২০ সালের ১ হাজার ৬৩৮ জনের কভিড-১৯-পূর্ব অবস্থাকেও ছাড়িয়ে গেছে।
অর্থসংবাদ/এসইউ