বৈশ্বিক আবাসন খাতে চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে বার্ষিক মূল্যবৃদ্ধির গতি ছিল তুলনামূলকভাবে মন্থর। ২০১৫ সালে আবাসন খাতে বার্ষিক মূল্যবৃদ্ধির হারের পর চলতি বছরেই সূচক সর্বনিম্ন অবস্থানে। মূল্যস্ফীতি মোকাবেলায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর জোর প্রচেষ্টা এক্ষেত্রে নিয়ামক হিসেব কাজ করেছে। এমনটাই উঠে এসেছে নাইট ফ্রাংকের প্রকাশিত জরিপে। খবর সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।
নাইট ফ্রাংকের বৃহত্তর চীন বিভাগের প্রধান গবেষক মার্টিন উং জানিয়েছেন, পৃথিবীব্যাপী বাড়ির দাম সুদহার ও মূল্যস্ফীতির কারণে প্রভাবিত হবে। যদিও চীনের মূল ভূখণ্ড, হংকং ও জাপান মূল্যস্ফীতির সমস্যা থেকে কিছুটা বাইরে। আগামী দিনগুলোয় হংকংয়ে বাড়ির দাম ৫ শতাংশ পর্যন্ত কমতে পারে। উং দাবি করেছেন, হংকংয়ের জন্য মূল্যস্ফীতি দেশটির জন্য গুরুত্বপূর্ণ অনুঘটক প্রমাণিত হয়নি। আগামী দিনগুলোয়ও সেখানে মূল্যস্ফীতির চেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা হয়ে উঠতে পারে উচ্চ সুদহার। মূলত উচ্চ সুদহার বছরজুড়েই দেশটিতে প্রভাব বিস্তার করবে। খুব সম্ভবত ২০২৪ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে প্রথম দফা সুদহার কমানো হবে। ফলে ছয়-নয় মাস পর্যন্ত বাজার থাকবে কমতির দিকে।
বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দাবস্থার মধ্যেই এশিয়া ও ইউরোপের বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ বাজারে সুদহার আগামী বছরের দ্বিতীয়ার্ধ পর্যন্ত অপরিবর্তিত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। আবাসন খাতকে যা প্রভাবিত করতে পারে বলে মনে করেন মার্টিন উং। নাইট ফ্রাংকের বর্তমান জরিপে বৈশ্বিক বাড়ি মূল্যবৃদ্ধির সূচক মন্থর হয়ে ৩ দশমিক ৬ শতাংশে ঠেকেছে। অথচ গত বছরের শেষ প্রান্তিকে সূচক ছিল ৫ দশমিক ৭ শতাংশ। একই সময়ের মধ্যে হংকংয়ে বাড়ির দাম কমেছে ১০ দশমিক ৩ শতাংশ, নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ কোরিয়ার পর যা সর্বনিম্ন। বিশ্ববাজারে আবাসন খাত সেদিক থেকে দুর্বল। ২০২২ সালের মার্চ পর্যন্ত পূর্ববর্তী ১২ মাসে সূচক ছিল ১১ দশমিক ১ শতাংশ। কভিড-১৯ মহামারীর পর তখন বৈশ্বিক অর্থনীতি ছিল চাঙ্গা হওয়ার পথে।
জরিপে ৫৬টি বাজারকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ১৭টি বাজারেই দেখা যায় বার্ষিক ভিত্তিতে মূল্য পতনের চিত্র। আটটি বাজারে ৫ শতাংশের বেশি সংকুচিত হয়েছে। সেখানে ২৩টি বাজারে দাম কমেছে গত তিন মাসে। তুরস্ক গত বছরের মতো এবারো এগিয়ে তালিকায়। সেখানে চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে বছরওয়ারি মূল্যবৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ১৩২ দশমিক ৮ শতাংশ। বিশেষ করে মূল্যস্ফীতির কারণে প্রভাবিত হয়েছে বাড়ির দাম। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে আবাসন খাতে ২২ শতাংশ বৃদ্ধির মানে আসছে দিনগুলোয় আরো দাম বাড়বে।
এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে একক অঞ্চল হিসেবে এগিয়ে সিঙ্গাপুর। বার্ষিক ১১ দশমিক ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ঘটেছে আবাসন খাতে। করনীতিতে পরিবর্তনের প্রভাব পড়েছে বাজারে। করনীতির পরিবর্তন আনা হয়েছিল মূলত বিদেশী বাজার আকর্ষণের কথা মাথায় রেখে। অবশ্য এ সিদ্ধান্ত অভ্যন্তরীণ বাজারের ক্রেতাদের দমিয়ে দেয়নি।
অর্থসংবাদ/এসএম