মহামারী-পরবর্তী অস্থিতিশীলতা কাটিয়ে স্বাভাবিক গতিতে ফিরেছে চীনের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড। বাড়ছে বৈদেশিক বাণিজ্য। বছরের প্রথমার্ধে চীনের পণ্য আমদানি ও রফতানির পরিমাণ পৌঁছেছে ২০ দশমিক ১ ট্রিলিয়ন ইউয়ান বা ২ দশমিক ৮ ট্রিলিয়ন ডলারে, যা গত বছরের তুলনায় ২ দশমিক ১ শতাংশ বেশি। খবর গ্লোবাল টাইমস।
চীনের জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব কাস্টমসের (জিএসি) তথ্যানুসারে, বৈদেশিক বাণিজ্য বৃদ্ধির বিষয়টি তাদের প্রত্যাশার মধ্যেই ছিল। অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ার মধ্যে দেশের বাণিজ্য খাত ক্রমাগত উন্নত হয়েছে। বছরওয়ারি জানুয়ারি-জুন মেয়াদে পণ্য রফতানি ৩ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়ে ১১ দশমিক ৪৬ ট্রিলিয়ন ইউয়ানে পৌঁছেছে। বিপরীতে বছরওয়ারি আমদানি দশমিক ১ শতাংশ কমে ৮ দশমিক ৬৪ ট্রিলিয়ন ইউয়ান।
জিএসসির মুখপাত্র লু ডালিয়াং গ্লোবাল টাইমসকে বলেন, ‘স্থিতিশীলতা বজায় রেখে প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে চীনের বৈদেশিক বাণিজ্য। দ্বিতীয় প্রান্তিকে মোট আমদানি ও রফতানির পরিমাণ ৭ শতাংশ বেড়ে ১০ দশমিক ৩৪ ট্রিলিয়ন ইউয়ান হয়। মে ও জুনের পরিসংখ্যান যথাক্রমে বেড়েছে ১ দশমিক ২ শতাংশ।’
উন্নত ও সম্প্রসারণ হচ্ছে চীনের বৈদেশিক বাণিজ্য খাতের কাঠামোও। বেসরকারি খাতের আমদানি ও রফতানির পরিমাণও ক্রমাগত বাড়ছে। প্রথম ছয় মাসে ব্যক্তি খাত মোট ১০ দশমিক ৫৯ ট্রিলিয়ন ইউয়ান মূল্যের পণ্য আমদানি ও রফতানি করে, যা আগের বছরের তুলনায় ৮ দশমিক ৯ শতাংশ বেশি। জিএসির তথ্যানুসারে, এটি দেশের মোট রফতানির ৫২ দশমিক ৭ শতাংশ।
চীনের বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর সংস্থা আসিয়ান। আসিয়ানের তালিকাভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে বছরওয়ারি চীনের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বছরে ৫ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৩ দশমিক শূন্য ৮ ট্রিলিয়ন ইউয়ান। এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে চীনের বৈদেশিক বাণিজ্য বছরে ১ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়েছে, যার আর্থিক মূল্য ২ দশমিক ৭৫ ট্রিলিয়ন ইউয়ান। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য বছরে ৮ দশমিক ৪ শতাংশ কমে ২ দশমিক ২৫ ট্রিলিয়ন ইউয়ান হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন লু ডালিয়াং।
তাছাড়া এটিও লক্ষণীয় যে বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগের সঙ্গে সম্পৃক্ত দেশ ও অঞ্চলগুলোয় চীনের বাণিজ্য বছরের প্রথমার্ধে বেড়েছে ৯ দশমিক ৮ শতাংশ, যা দেশের মোট বৈদেশিক বাণিজ্য বৃদ্ধির হারের চেয়ে ৭ দশমিক ৭ শতাংশ পয়েন্ট বেশি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এ বৃদ্ধির নেপথ্যের চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করেছে সৌর ব্যাটারি, লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি ও বৈদ্যুতিক যানবাহন। বছরের প্রথমার্ধে এ ধরনের পণ্যের রফতানি আগের বছরের তুলনায় ৬ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে ৬ দশমিক ৬৬ ট্রিলিয়ন ইউয়ানে পৌঁছেছে, যা দেশের মোট রফতানির ৫৮ দশমিক ২ শতাংশ।
মহামারী-পরবর্তী বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার পর দেশটিতে অর্থনৈতিক কার্যক্রম বাড়ে। যদিও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের প্রত্যাশিত গতি দ্রুতই ঝিমিয়ে পড়ে। সম্প্রতি প্রকাশিত জরিপটিকে দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ইতিবাচক প্রবণতা হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।
অর্থসংবাদ/এসএম