গত সাড়ে চৌদ্দ বছরে ডিজিটাল সংযুক্তির পাশাপাশি বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ৭০ হাজার ৬৩ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করেছে বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
রোববার (২০ আগস্ট) রাজধানীতে বিটিআরসির নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন পরবর্তী আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ফলে মানুষের জীবনধারায় ডিজিটাল সংযুক্তি অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। তৃণমূল থেকে শুরু করে সর্বত্র ডিজিটাল সংযুক্তি ও ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশে বিটিআরসি অভাবনীয় ভূমিকা পালন করে চলেছে। গত সাড়ে চৌদ্দ বছরে ডিজিটাল সংযুক্তির পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটি ৭০ হাজার ৬৩ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করেছে।
ডিজিটাল সংযুক্তি ও ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের বিশাল কর্মযজ্ঞ পরিচালনার হাব হিসেবে নবনির্মিত টেলিযোাগাযোগ ভবনের উদ্বোধনের মাহেন্দ্র ক্ষণটি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের অগ্রযাত্রার মাইল ফলক হিসেবে কাজ করবে জানান ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী। তিনি বলেন, বিটিআরসি প্রতিষ্ঠার ২১ বছর পর নিজস্ব আইকনিক ভবনে প্রতিষ্ঠানটি স্থানান্তরিত হলো। ডিজিটাল বাংলাদেশের মূল ভিত্তি ডিজিটাল সংযুক্তি।
তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের শক্তিশালী ভিত্তির ওপর প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর লালিত স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার অভিযাত্রা শুরু হয়েছে। ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন বেতবুনিয়ায় ভূ-উপগ্রহকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, ১৯৭৩ সালে আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন্স ইউনিয়ন ও আইটিইউ-এর সদস্যপদ অর্জন এবং টিঅ্যান্ডটি বোর্ড গঠন করার মধ্য দিয়ে জাতির পিতা ডিজিটাল সাম্য সমাজ প্রতিষ্ঠার বীজ বপন করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালে বঙ্গবন্ধুর ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য বঙ্গবন্ধুর বপন করা বীজটি সযত্নে চারা গাছে রূপান্তর করেন বলেও জানান মোস্তাফা জব্বার। তিনি বলেন, ২০০৯ সাল থেকে সাড়ে চৌদ্দ বছরে চারাগাছটি বিরাট এক মহিরুহে রূপান্তর লাভ করেছে।
মন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার ২০০৯ সালে দায়িত্বভার গ্রহণকালে বাংলাদেশের টেলিডেনসিটি ছিল ৩০ শতাংশ। বর্তমানে এ হার শতকরা ১০৫ দশমিক ৮১ ভাগে উন্নীত হয়েছে। ২০০৯ সালে যেখানে মোবাইল গ্রাহক ছিল ৪ কোটি ৪৭ লাখ, বর্তমানে তা ১৮ কোটি ৬১ লাখে অতিক্রম করেছে। ২০০৯ সালে দেশে ইন্টারনেট গ্রাহক ছিল মাত্র ৪০ লাখ, বর্তমানে এ সংখ্যা প্রায় ১২ কোটি ৯৪ লাখ। ২০০৯ সালে ইন্টারনেট ব্যান্ডউইদথের ব্যবহার ছিল ১০ জিবিপিএস, বর্তমানে তা ৪৮৬৫ জিবিপিএস অতিক্রম করেছে।
তিনি আরও বলেন, ২০০৮ সালে এক এমবিপিএস ব্যান্ডউইথের দাম ছিলে ২৭ হাজার টাকা। যা একদেশ এক রেটের আওতায় বর্তমানে ৬০ টাকা মাত্র। ২০০৯ সালে টেলিযোগাযোগ খাত থেকে মোট রাজস্ব আয় ছিল ৩ হাজার ৬০৭ কোটি টাকা, বর্তমানে তা ৭০ হাজার কোটি টাকা অতিক্রম করেছে।
এছাড়া ২০০৯ আন্তর্জাতিক ব্রডব্যান্ড ক্যাপসিটি ৪৫ জিবিপিএস ছিল; যা বর্তমানে ৬ হাজার জিবিপিএস অতিক্রম করেছে বলে জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, ২০০৯ সালে ফাইভার অপটিকেল নেটওয়ার্ক ছিল ১৪ হাজার ৮৭৬ কিলোমিটার; বর্তমানে তা ১ লাখ ৬১ হাজার ৯৬৬ কিলোমিটারে উন্নীত হয়েছে। ২০০৯ সালে মোবাইল হ্যান্ডসেট উৎপাদন ছিল শূন্য; বর্তমানে চাহিদার শতকরা ৯৭ ভাগ দেশে স্থাপিত ১৫টি মোবাইল কারখানা থেকে উৎপাদিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, দেশে শতকরা ৯৮ ভাগ এলাকা ফোরজি মোবাইল নেটওয়ার্কের আওতায় এসেছে। ২০০৯ সালে থ্রিজি ও ফোরজি নেটওয়ার্ক ছিল না।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থি ছিলেন, বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান, বিটিআরসির সাবেক চেয়ারম্যন সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদ প্রমুখ।
অর্থসংবাদ/এসএম