নগদ অর্থের সংকটে ভোক্তারা কেনাকাটা কমিয়ে দিলেও মার্কিন অর্থনীতি গতিশীল রয়েছে। কিন্তু কেনাকাটা কমে গেলেও মানুষ এখন উড়োজাহাজের টিকিট কিনছে, ভ্রমণে যাচ্ছে, হোটেল বুক করছে, যার প্রভাব পড়েছে সার্বিক অর্থনীতিতে। খবর সিএনএন।
মার্কিন ডিপার্টমেন্ট স্টোর কোম্পানি মেসি’স বলেছে, ক্রেডিট কার্ডের অপরাধ বাড়ছে। রিটেইল কোম্পানি ডিকের স্পোর্টিং গুডস বলেছে, চুরির হার বাড়ার পরিমাণ কম থাকলেও দোকান থেকে চুরির ঘটনা মুনাফার পরিমাণ কমিয়ে দিচ্ছে। মার্কিন স্পোর্টসওয়্যার বিক্রেতা ফুট লকারের স্টক ৩০ শতাংশ কমেছে। নাইকির স্টক টানা ১০ দিন ধরে পতনমুখী। প্রতিষ্ঠানটির ইতিহাসে এটিই ধারাবাহিক পতনের বড় রেকর্ড। টার্গেট, হোম ডিপো ও লোয়ের মতো প্রায় সব কোম্পানিরই বিক্রি কমে গেছে।
যদিও লোকেরা জিনিসপত্র কেনা বাবদ খরচ কমিয়ে দিয়েছে। মানুষ এখন কভিড যুগের ঘটনা থেকে সঞ্চয়ের দিকে উৎসাহিত হচ্ছে। তবে এটা সত্য নয় যে তারা খরচ করা একেবারেই বন্ধ করে দিয়েছে। নতুন এক জোড়া নতুন জুতা বা একটি নতুন ল্যাপটপ বা ডিশওয়াশার কেনার পরিবর্তে আমেরিকানরা এখন টেইলর সুইফট বা বিয়ন্স বা বার্বি দেখতে টিকিট কেনার মতো বিকল্প অপশন বেছে নিচ্ছে। বাড়তি নতুন জুতা, ল্যাপটপের মতো অতিরিক্ত পণ্য একটি পরিবারে কেনার প্রয়োজন খুব বেশি নেই। মানুষ এখন উড়োজাহাজের টিকিট কিনছে, ভ্রমণে যাচ্ছে, হোটেল বুক করছে ও উবারকে কনসার্ট, বিয়ে, স্পা বা সমুদ্র অবকাশে যাওয়ার জন্য বেছে নিচ্ছে। অর্থাৎ এমন খাতগুলোয় অর্থ খরচ করছে যে খাতগুলো গত তিন বছর কভিডের কারণে বিভিন্ন মাত্রায় বিধিনিষেধের জালে স্থবির হয়ে ছিল।
আমেরিকানরা বিভিন্ন পণ্য ও পরিষেবা খাতে দেশটির মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) দুই-তৃতীয়াংশ ব্যয় করে। এফডব্লিউবন্ডসের প্রধান অর্থনীতিবিদ ক্রিস রুপকি লিখেছেন, ‘অক্টোবরের শেষের দিকে তৃতীয় প্রান্তিকের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রতিবেদন হাতে পাওয়া ছাড়াই আমরা এরই মধ্যে জিডিপির পূর্বাভাস উল্টে যেতে দেখতে পাচ্ছি। এটি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য ‘‘বাম্পার ফলন’’ বয়ে আনতে যাচ্ছে। ’
আটলান্টা ফেডারেল রিজার্ভের অনানুষ্ঠানিক জিডিপিনাউ পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, তৃতীয় ত্রৈমাসিকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বার্ষিক ৫ দশমিক ৮ শতাংশ বাড়ার প্রত্যাশা করা যাচ্ছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় জিডিপি প্রবৃদ্ধির হারের দ্বিগুণ। ব্লুমবার্গের কলামিস্ট লেটিসিয়া মিরান্ডা এ সপ্তাহে লিখেছেন, ‘ভোক্তারা ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন, তবে বাধাগ্রস্ত নন। তাদের একঘেয়েমি দশা কাটাতে খুচরা বিক্রেতাদের একটি উপায় খুঁজে বের করতে হবে।’ ডয়েচে ব্যাংকের মতে, ভোক্তারা স্পষ্টতই জিনিসপত্র কেনা বন্ধ করেনি। প্রাক-কভিডপ্রবণতার তুলনায় ভোক্তারা পণ্য ক্রয় ব্যয় অনেক বেশি করছেন। এমনকি শপিংমলগুলো কভিডপূর্ব অবস্থায় ফিরে এসেছে।
অর্থসংবাদ/এসএম