মেঘনা উপকূলীয় জনপদে নারিকেলের ব্যাপক ফলন হয়। প্রতিবছর এই অঞ্চলে সাড়ে ৫০০ কোটি টাকার নারিকেল বেচাকেনা হয়। জানা যায়, বাগান মালিকদের কাছ থেকে পাইকাররা আকারভেদে প্রতিটি ডাব ৩০-৫০ টাকায় কিনে থাকেন। গ্রামের পাইকার থেকে ৯ হাত বদল হয়ে ঢাকায় গিয়ে সেই ডাব দাঁড়ায় ২০০ টাকায়। শহরের আড়তদারদের অতিরিক্ত মুনাফা লোভের কারণে ক্রেতা পর্যায়ে দাম বেশি গুনতে হয়।
৫০ টাকা ডাবের দাম যেভাবে ২০০ টাকা
বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মালিক থেকে বাগানের গাছের ডাব কিনতে হয় আকারভেদে ৩০-৫০ টাকায়। গাছ থেকে প্রতিটি ডাব নামাতে পাড়িয়াদের (যারা গাছ থেকে ডাব পাড়েন) দিতে হয় ৩-৪ টাকা, গাছের গোড়ায় রশি ধরে কিংবা ঝরা ডাব একস্থানে জড়ো করতে ৫০ পয়সা, স্থানীয় ভ্যানচালক-ছোট পিকআপভ্যানযোগে স্থানীয় আড়তে জড়ো করতে ২ টাকা, ট্রাকযোগে ঢাকার আড়তে পৌঁছাতে খরচ ৪-৫ টাকা, সেখানে নামানোর শ্রমিকদের ৪০-৫০ পয়সা, এরপর নিজের খরচ-বিনিয়োগ-পারিশ্রমিক হিসেবে জেলা পর্যায়ের ব্যবসায়ীর ৫ টাকা লাভ, আড়তদার ব্যবসায়ীর ২০-৩০ টাকা ও বাকিটা খুচরা ব্যবসায়ীর লাভ। এভাবেই একটি ডাব বাগান থেকে ঢাকায় ক্রেতা পর্যন্ত ১৫০-২০০ টাকা হারে বিক্রি হয়।
আরও পড়ুন: ডাব বিক্রি করতে লাগবে লাইসেন্স ও টিআইএন
ডাব বিক্রি করা এক বাগান মালিক জানান, ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে নাকি ২০০ টাকায় ডাব বিক্রি হয়। কিন্তু আমি কখনো ৩৫ টাকার বেশি মূল্য পাইনি।
এদিকে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের কারণে ডাবের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীরা সুযোগ নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম শফিকুজ্জামান। তিনি বলেন, আমি কোনোদিন চিন্তা করি নাই, ডাব নিয়াও আমাকে বসতে হবে। ডাব এখন আমাদের ‘টক অব দ্য কান্ট্রি’। নিউজে ডাবের দাম নিয়া আলোচনা হচ্ছে।
শফিকুজ্জামান বলেন, আমি সবাইকে বলছি যতক্ষণে সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ১০০ টাকার মধ্যে না আসবে আমরা ততক্ষণ পর্যন্ত মনিটরিং জোরদার রাখবো। ডাব ব্যবসায়ীদের অবশ্যই পাকা রসিদ সংগ্রহে রাখতে হবে। তা না হলে অভিযানের মাধ্যমে জরিমানাসহ কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে।
অর্থসংবাদ/এমআই