সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিমা প্যাকেজ চালুর জন্য মিডিয়া হাউজগুলোর দায়িত্বশীলদের উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দেশের বিশিষ্ট সাংবাদিকরা। তারা বলেছেন, সাংবাদিকদের জন্য বিমা প্যাকেজ চালু হলে তা বস্তুনিষ্ঠ কাজে আরও গতি আনবে।
শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর সিক্স সিজন হোটেলে আর্টিকেল নাইনটিন ও ফ্রি প্রেস আনলিমিটেড (এফপিইউ) আয়োজিত গোল টেবিল বৈঠকে তারা এসব কথা বলেন। আর্টিকেল নাইনটিন দক্ষিণ এশিয়ার সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার রুমকি ফারহানা বৈঠকটি সঞ্চালনা করেন।
অনলাইনে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে মূল বক্তব্য রাখেন ‘অ্যালায়েন্স এক্সিকিউটিভ’ এর পরিচালক এনিসাবোট ক্যানটেনিস। তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সাংবাদিকদের জন্যে ইন্স্যুরেন্স বিষয়ে তার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন, যেসব মিডিয়া হাউজে কর্মক্ষেত্রের ভেতরে এবং বাইরে সাংবাদিকদের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যের বিমা প্রদান করছে।
এ সময় বাংলাদেশের সিনিয়র সাংবাদিক এবং দৈনিক আমাদের নতুন সময়ের ইমেরিটাস এডিটর নাঈমুল ইসলাম খান বলেন, ‘বাংলাদেশের সাংবাদিকরা বেশিরভাগ শারীরিক ও আইনি হুমকির সম্মুখীন হয় এবং এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য বেশিরভাগ মিডিয়া হাউজেরই কোনও যথাযথ বিমা কাভারেজ নেই। যারা ইতোমধ্যে সাংবাদিকদের সুরক্ষায় বিমা প্যাকেজ নিয়ে কাজ করেছেন, আমরা তাদের কাছ থেকে ভালো অভিজ্ঞতাগুলো নিতে পারি।’
প্রথম আলোর (ইংলিশ ভারসন) হেড অব অনলাইন আয়েশা কবির বলেন, ‘আমরা যদি একজন বিমা পরামর্শদাতা বা বিশেষজ্ঞ পাই, তাহলে খুব ভালো হয়। যিনি আমাদের প্রয়োজন অনুসারে উপযুক্ত বিমা প্যাকেজগুলো গ্রহণের জন্য নির্দেশনা এবং পরামর্শ দিতে পারেন।’
এজেন্সি অব ফ্রান্স প্রেস (এএফপি) এর ব্যুরো প্রধান শফিকুল আলম বলেন, ‘কাস্টমাইজড চাহিদা অনুযায়ী, স্বল্পমেয়াদি বিমা প্যাকেজ শুরু করার বিষয়ে আমাদের এই আলোচনায় বিমা কোম্পানিগুলোকেও অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।’
অধিবেশনে আর্টিকেল নাইনটিন বাংলাদেশ এবং দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক সাংবাদিক ফারুখ ফয়সল সভাপতির বক্তব্যে বলেন, ‘যদিও বাংলাদেশের মিডিয়া হাউজগুলো সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেওয়ার ক্ষেত্রে বিমাবান্ধব নয়। তবে আমরা মিডিয়া হাউজগুলোর নেতৃত্ব পর্যায়ে যারা আছেন, তাদের এ বিষয়ে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া ও উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানাই।’
এছাড়াও বৈঠকে দৈনিক প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরীফ, বিশেষ প্রতিনিধি আশীষ উর রহমান, দীপ্ত টেলিভিশনের হেড অব নিউজ এস.এম আকাশ, ডিবিসি নিউজের সিনিয়র করেসপনডেন্ট ইসরাত জাহান উর্মি তাদের নিজ নিজ অভিজ্ঞতার কথা জানান।
এ সময় বেশিরভাগ মিডিয়া হাউজগুলোতে সময় মতো বেতন না পাওয়ার উদ্বেগ, চাকরির নিরাপত্তা না থাকা, স্বাধীন মত প্রাকশে ভয়ের সংস্কৃতি, ইত্যাদি আলোচনায় উঠে আসে। সবাই সাংবাদিকদের সুরক্ষা বৃদ্ধির প্রচেষ্টার সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন। বিশেষ করে নারী সাংবাদিকদের কাজের চ্যালেঞ্জগুলো আলোচনায় উঠে আসে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন— প্রথম আলোর সাংবাদিক সাবিনা ইয়াসমিন, কালের কণ্ঠের রিপোর্টার তৌফিক হাসান, বাংলা ট্রিবিউনের প্রতিবেদক জুবায়ের আহমেদ, রেডিও টুডে’র ইমদাদুল আজাদ, ফ্রি প্রেস আনলিমিটেডের সিনিয়র প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর হ্যান্স নিউয়েনহুইভসে প্রমুখ।