যৌথ প্রকল্পের অংশ হিসেবে শিগগিরই দেশের দক্ষিণ উপকূলে বসবাসকারী ২ হাজার মাছ চাষীদের জন্য মানসম্মত পোনা, বিশেষ করে জেনারেশন থ্রি বা জিথ্রি রুইয়ের উৎপাদন ও সহজলভ্যতা বৃদ্ধি করতে উভয় প্রতিষ্ঠান কাজ করবে। বাংলাদেশের কার্পজাতীয় মাছের মধ্যে রুই সর্বোচ্চ চাষকৃত প্রজাতি এবং জিথ্রি রুই এই প্রজাতিরই জিনগতভাবে আরও উন্নত ও উচ্চ-ফলনকারী প্রজাতি।
এই প্রকল্প তিনটি লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে, যার প্রথমটি হলো পোনা বিতরণের একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক তৈরি, যাতে ব্যবসায়ীরা আরও সহজে চাষীদের কাছে জিথ্রি রুইয়ের পোনা পৌঁছে দিতে পারে। দ্বিতীয় লক্ষ্যটি হলো মাছ চাষীদের প্রশিক্ষণের সুযোগ প্রদান, যাতে তারা জিথ্রি রুইয়ের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে পারে। তৃতীয় লক্ষ্যটি হলো মাছ চাষের ভ্যালু চেইনকে আরও সুসংগঠিত করা, যেখানে চাষীরা বাজার সংক্রান্ত তথ্য, সহায়তা পরিষেবা এবং খুচরা ও প্রাতিষ্ঠানিক ক্রেতা-বিক্রেতাদের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে পারবে।
জিনগতভাবে উন্নত মাছের প্রজাতি এবং জলবায়ু-স্মার্ট প্রযুক্তির ক্রমাগত প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে প্রকল্পটি বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য সংস্থার সাথেও কাজ করছে।
প্রকল্পের অংশ হিসেবে চাষীদের মধ্যে ৩০ টন জিথ্রি রুই পোনা বিতরণ করা হবে। এর মাধ্যমে দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের দুটি বিভাগের ২ হাজার চাষী প্রতিবছর আনুমানিক ৬০০ টন বিক্রয়যোগ্য জিথ্রি রুই উত্পাদনে সক্ষম হবে। প্রকল্পটি পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তা বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং এন্ড-টু-এন্ড ভ্যালু চেইনের মাধ্যমে স্থানীয় ক্ষমতায়ন নিশ্চিতের স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের প্রতিশ্রুতিকে প্রতিফলিত করবে।
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ-এর সিইও নাসের এজাজ বিজয় বলেন, বাংলাদেশ সম্প্রতি তীব্র জলবায়ু-পরিবর্তনের সম্মুখীন হচ্ছে, আর সেটি বিবেচনায় মাছ চাষাবাদের দীর্ঘমেয়াদী টেকসই ও পরিবেশের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি হয়ে পড়েছে। জিনগতভাবে উন্নত জিথ্রি রুই দেশব্যাপি কৃষক ও ভোক্তাদের জীবনমান উন্নত করবে বলে আশা করা যাচ্ছে। দেশের জলবায়ু-প্রভাবিত চাষীদের কল্যাণে সিএনআরএস এর সাথে অংশীদারিত্ব করতে পেরে আমরা গর্বিত এবং এর মাধ্যমে মৎস খাত আরও পুষ্টিকর, নিরাপদ ও সহজলভ্য হয়ে উঠবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
সেন্টার ফর ন্যাচারাল রিসোর্স স্টাডিজ-এর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর এম. মোখলেসুর রহমান, পিএইচডি বলেন, প্রযুক্তির কল্যাণে জলবায়ু-প্রভাবিত দরিদ্র মৎসচাষীদের সাহায্যে বিনিয়োগ করায় স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এই বিনিয়োগের মাধ্যমে প্রাণীজ-প্রোটিন নিশ্চিত হবে, যা শিশুদের অপুষ্টির হার কমাতে এবং চাষী পর্যায়ে অর্থনৈতিক আয় বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে। এই উদ্যোগ শুধু দক্ষিণাঞ্চল নয়, আগামীতে দেশব্যাপি পরিচালনা করে হবে, যা সার্বিক খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তায় ভূমিকা রাখবে। এই যাত্রায় আমাদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে এবং প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন ও এর চর্চায় সাহায্য করায় ওয়ান সিজিআইএআর অ্যান্ড ওয়ার্ল্ডফিস’র বিশেষ উদ্যোগ এশিয়ান মেগা ডেল্টাস (এএমডি) এবং প্রতিবেশ ইকোসিস্টেম অ্যাক্টিভিটিস-কে অসংখ্য ধন্যবাদ।
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ব্যাংকের সিইও নাসের এজাজ বিজয় এবং সিএনআরএসের পক্ষ থেকে সংস্থার এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর এম. মোখলেসুর রহমান, পিএইচডি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
দীর্ঘ ১১৮ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে নিরবচ্ছিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করা স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকই দেশের একমাত্র বহুজাতিক ব্যাংক। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক জাতির কল্যাণে, অর্থনৈতিক বৈষম্য দূরীকরণে, এবং পরিবেশ রক্ষার মাধ্যমে দেশের বাণিজ্য ও উন্নয়ন যাত্রার দীর্ঘস্থায়ী গর্বিত অংশীদার। টেকসই ও সমতার আদর্শকে কেন্দ্রে রেখে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের জন্য স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড সর্বদা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
দ্য সেন্টার ফর ন্যাচারাল রিসোর্স স্টাডিজ (সিএনআরএস) বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্বীকৃত পরিবেশবাদী জাতীয় এনজিওগুলোর মধ্যে একটি। ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশ ফ্লাড অ্যাকশন প্ল্যান (ফ্যাপ১৬) এনভায়রনমেন্টাল স্টাডি থেকে সংস্থাটির সূত্রপাত এবং ১৯৯৪ সালে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে সিএনআরএস দারিদ্র-বিমোচন, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই উন্নয়ন সাধনে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়নে কাজ করছে।
অর্থসংবাদ/এমআই
 
                         
                 
                 
                     
                 
                 
                     
                 
                 
                     
                 
                 
                     
                 
                 
                     
                 
                 
                     
                 
                 
                     
                 
                 
                     
                 
                 
                     
                 
                