চীনের মানঝৌলি রুশ সীমান্তসংলগ্ন বন্দরটিতে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড চলতো। তবে চাপ বেড়ে যাওয়ায় মাত্র ১২ ঘণ্টায় বন্দরের কাজ সামাল দেয়া কঠিন হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে দিনভর এটি খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ।
আগস্টের শেষের দিকে শহরটিতে রুশ সীমান্তসংলগ্ন চীনা কাস্টম স্টেশনে যন্ত্রপাতি ও কনটেইনার বহনকারী ট্রাকের দীর্ঘসারি ছিল একটি স্বাভাবিক ঘটনা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাশিয়ায় চীনের রফতানির পরিমাণ গত বছরের তুলনায় এবার দ্বিগুণ বেড়েছে। বিশেষ করে রাশিয়ায় চীনা নির্মাণসামগ্রীর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
চীনের জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব কাস্টমসের তথ্য বলছে, জানুয়ারি-আগস্ট সময়ের মধ্যে রাশিয়া ও চীন ১৫ হাজার ৫১০ কোটি ডলারের পণ্য লেনদেন করেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৩২ শতাংশ বেশি। রুশ প্রধানমন্ত্রী মিখাইল মিশুস্টিন জানিয়েছেন, পুরো বছরে এ লেনদেন রেকর্ড ২০ হাজার কোটি ডলারে পৌঁছবে। ২০২২ সালে এর পরিমাণ ছিল ১৫ হাজার ২০ কোটি ডলার।
চলতি বছরের প্রথম আট মাসে রাশিয়ায় চীনা পণ্য রফতানি এক বছরের তুলনায় প্রায় ৬২ শতাংশ বেড়ে ৭ হাজার ১৮০ ডলারে পৌঁছেছে। চীনা গাড়ি ও যানবাহনের অন্যান্য যন্ত্রাংশের রফতানি সাড়ে চার গুণ বেড়েছে, যা মোট রফতানির এক-পঞ্চমাংশ। রফতানি বেড়েছে নির্মাণ সরঞ্জামেরও।
আগে রাশিয়ার বাজার দখলে রেখেছিল জাপান ও ইউরোপের গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে তাদের সঙ্গে মস্কোর দূরত্বের ফলে রাশিয়ায় চীনা গাড়ির চাহিদা বেড়ে যায়। চলতি বছরের জানুয়ারি-জুলাই মেয়াদে রাশিয়ায় প্রায় ৪ লাখ ২০ হাজার গাড়ি রফতানি করেছে বেইজিং। এটি চীনের মোট গাড়ি রফতানির ১৬ শতাংশ। এটি গত বছরের তুলনায় ১২ শতাংশীয় পয়েন্ট বেড়েছে। রাশিয়ায় গত জানুয়ারি-আগস্ট পর্যন্ত সময়ে চীনের হোম ইলেকট্রনিকস ও বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের রফতানিও বেড়েছে।
টোকিওর ইনস্টিটিউট ফর রাশিয়ান অ্যান্ড এনআইএস ইকোনমিক স্টাডিজের গবেষণা প্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন তাকাফুমি নাকাই। তিনি বলেন, ‘রাশিয়ায় পশ্চিমা দেশগুলো থেকে মোবাইল ফোন, ব্যক্তিগত কম্পিউটিং ডিভাইস ও অনুরূপ পণ্যগুলো আমদানি তীব্রভাবে কমেছে। শাওমি ও অন্য চীনা ব্র্যান্ডগুলো সেখানে তাদের বাণিজ্য সম্প্রসারণ করছে।’
অর্থসংবাদ/এমআই