নীলফামারীর ডোমারে রেললাইনের ফিসপ্লেট ক্লিপ খুলে নাশকতার চেষ্টা করেছে দুর্বৃত্তরা। তবে এলাকাবাসীর প্রতিরোধে বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছে চিলাহাটি থেকে খুলনাগামী সীমান্ত এক্সপ্রেস ট্রেনটি। বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) রাত ১০টার দিকে উপজেলার বোড়াগাড়ী ইউনিয়নের বাগডোকরা প্রধানপাড়া দোলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ডোমার-চিলাহাটি রেলপথে প্রায় দেড় ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল।
এলাকাবাসী জানায়, বুধবার রাতে ওই এলাকায় রেললাইনের লোহা লস্কর খোলার শব্দ শুনতে পাওয়া যায়। এগিয়ে গিয়ে একদল দুর্বৃত্তদের রেললাইনের ফিসপ্লেট পিন খুলতে দেখা গেলে এলাকাবাসী জোটবদ্ধ হয়ে তাদের ধাওয়া করে। এ সময় দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।
ওই গ্রামের হরিদাস চন্দ্র রায় (৩৫) বলেন, ঘটনার পর চিলাহাটি থেকে খুলনাগামী সীমান্ত এক্সপ্রেস ট্রেনটি আসছিল। এসময় ঘটনাস্থলে ৩০০ থেকে ৪০০ লোকজন উপস্থিত ছিলেন। তারা সবাই বিভিন্নভাবে সংকেত দিতে থাকলে ট্রেনটি থেমে যায়। এতে করে বড় দুর্ঘটনা থেকে ট্রেনটি রক্ষা পায়।
বোড়াগাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম রিমন বলেন, এলাকাবাসীর ধাওয়ায় দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। পরে তাদের ফেলে যাওয়া একটি বস্তা থেকে ৭২ পিস ফিসপ্লেট ক্লিপ উদ্ধার হয়। এরপর রেলের লোকজন এসে লাইন মেরামত করলে প্রায় দেড় ঘণ্টা পর খুলনার উদ্দেশ্যে ট্রেনটি ছেড়ে যায়।
জোড়াবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাখাওয়াৎ হাবীব বাবু বলেন, ঘটনাটি আমার ইউনিয়নের সীমানায় ঘটেছে। আমি গিয়ে রেললাইনের বিভিন্নস্থানে ফিসপ্লেট ক্লিপ খোলা দেখতে পেয়েছি। এলাকাবাসীর সচেতনতায় দুর্ঘটনা থেকে ট্রেনটি রক্ষা পেয়েছে।
নীলফামারী স্টেশন মাস্টার ওবায়দুর রহমান রতন বলেন, লাইন মেরামতের পর প্রায় দেড় ঘণ্টা ট্রেনটি সেখান থেকে ছেড়ে আসে। অপরদিকে রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা বরেন্দ্র একপ্রেস ট্রেনটিও দেড় ঘণ্টা ডোমার স্টেশনে আটকা পড়ে।
সীমান্ত এক্সপ্রেস ট্রেনের গার্ড হাফিজুর রহমান বলেন, আমরা এখানে আসার পর এলাকাবাসী আমাদের ট্রেনটি দাঁড় করায়। তারপর তারা আমাদের বলে যে রেললাইনের ফিসপ্লেট খুলে রাখা আছে। যারা এগুলো খুলেছিল তাদেরকে তারা ধরতে পারেনি কিন্তু তাদেরকে ধাওয়া দিয়েছিল। এখানে লাইনের যারা কাজ করে তারা কিছু কাজ করে দেওয়ার পর আমরা চলাচলের অনুমতি পাই। তবে আমাদেরকে এখন সর্তকর্তার সঙ্গে ধীরে ধীরে ট্রেন চালাতে হবে।
ডোমার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমুল আলম বিপিএএ বলেন, আমি ঘটনাস্থলে দেখতে পাই রেললাইনের প্রায় ৭২টি ফিসপ্লেট খোলা হয়েছে। আমাদের ডোমারের ওপরে দিয়ে রেললাইনের একটি বড় অংশ গেছে। আমরা সরকারকে অবহিত করব যাতে যে স্থান দিয়ে রেললাইন গেছে সে স্থানের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। এছাড়া আমরা রেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলছি তারা আমাদের কাছে যে ধরনের সহযোগিতা চাইবেন আমরা তাদেরকে সে ধরনের সহযোগিতা প্রদান করব।
উল্লেখ্য, এর আগে বুধবার গাজীপুরের ভাওয়ালে ঢাকা-ময়মনসিংহ রেললাইনের একটি অংশ কেটে ফেলে দুর্বৃত্তরা। ওই পথে যাওয়ার সময় মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস নামে একটি ট্রেনের বগি লাইনচ্যুত হয়। এ ঘটনায় একজন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ১০ থেকে ১২ জন।
 
                         
                 
                 
                     
                 
                 
                     
                 
                 
                     
                 
                 
                     
                 
                 
                     
                 
                 
                     
                 
                 
                     
                 
                 
                     
                 
                