স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক খুবই মজবুত। দুজনেই একে অপরের দুঃখ-কষ্টের অংশীদার। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘তারা তোমাদের পোষাকস্বরুপ এবং তোমরাও তাদের পোষাকস্বরুপ।’ (সূরা বাকারা, আয়াত, ১৮৭)
এই অর্থে একে অপরের সবচেয়ে বেশি কাছের। মুফাসসিরদের মতে, আয়াতে স্বামী-স্ত্রীকে একে অপরের পোশাক বলার মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে যে, তারা পরস্পরের সম্মান রক্ষাকারী, আশ্রয়স্থল এবং পরস্পরের হৃদয়ের প্রশান্তি লাভের মাধ্যম। পোশাক পরার পর মানুষ যেভাবে স্বস্তি লাভ করে, ঠিক তেমনি স্বামী-স্ত্রী একে অপরের মাধ্যমে আত্মিক ও দৈহিক প্রশান্তি লাভ করেন।
তবে এই মধুর সম্পর্কের মাঝেও স্বামী-স্ত্রীর ব্যক্তিগত জিনিসের উপর সবার আলাদা আলাদা অধিকার রয়েছে। একজনের ব্যক্তিগত জিনিস অনুমতি ছাড়া আরেকজন ব্যবহার না করা উচিত। তবে যদি অনুমতি ছাড়া একজন আরেকজনের কোনো কিছু ব্যবহার করলে অপরজনের কোনো আপত্তি না থাকে তাহলে ব্যবহার করতে কোনো আপত্তি নেই। একইভাবে স্বামীর অনুমতি ছাড়া স্বামীর টাকা-পয়সা বা অন্য কিছু স্ত্রীর জন্য কাউকে দেওয়া বা দান-সদকা করা বৈধ নয়।
কেননা, হজরত আবু উমামা বাহিলি (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) বিদায় হজের ভাষণে বলেছিলেন, কোনো মহিলা নিজের স্বামীর ঘর থেকে তার অনুমতি ছাড়া কোনো কিছু ব্যয় ও খরচ করবে না- এমনকি খাবারজাতীয় জিনিসও।
তবে বিষয়টি যে একবারে নিষিদ্ধ এমন নয়, বরং স্বামীর মৌন সমর্থন থাকলে তা করা যেতে পারে। যদি স্বামীর অনুপস্থিতিতে স্ত্রী অল্প কিছু দান-সদকা করেন এবং পরবর্তীতে স্বামী তা জেনে মৌন সমর্থন অবলম্বন করেন- তাহলে ধরে নিতে হবে এতে তার পক্ষ থেকে অনুমতি রয়েছে। এ রকম দান-সদকা বৈধ। এতে ভালো কাজের কারণে স্ত্রী সওয়াব পাবেন। আর স্বামীও তার সম্পদের অংশবিশেষ দান করার কারণে সওয়াব পাবেন। (বুখারি শরিফ, হাদিস, ১৪৪০, আবু দাউদ শরিফ, হাদিস, ৩৫৭৫, কিতাবুল ফাতাওয়া খণ্ড-৩ পৃষ্ঠা-৩৪০)