জুমার দিনের ১০ আমল

জুমার দিনের ১০ আমল

মুসলমানদের জন্য জুমার দিনটি বরকতময় ও ফজিলতপূর্ণ। রাসুল (সা.) বলেছেন,
إِنَّ هَذَا يَوْمُ عِيدٍ جَعَلَهُ اللَّهُ لِلْمُسْلِمِينَ فَمَنْ جَاءَ إِلَى الْجُمُعَةِ فَلْيَغْتَسِلْ وَإِنْ كَانَ طِيبٌ فَلْيَمَسَّ مِنْهُ وَعَلَيْكُمْ بِالسِّوَاكِ
নিশ্চয় আল্লাহ এ দিনটিকে মুসলমানদের জন্য ঈদের দিনরূপে নির্ধারণ করেছেন। তাই যে ব্যক্তি জুমার নামাজ আদায় করতে আসবে সে যেন গোসল করে এবং সুগন্ধি থাকলে তা শরীরে লাগায়। মিসওয়াক করাও তোমাদের কর্তব্য। (সুনানে ইবনে মাজা: ৮৩)


জুমার সালাতের গুরুত্ব বোঝাতে রাসুল (সা.) বলেন,
من تَرَكَ ثلاث جمعٍ تهاوناً بها طبع الله على قلبه
যে ব্যক্তি অলসতা করে ধারাবাহিকভাবে তিনটি জুমার জামাতে অনুপস্থিত থাকে, আল্লাহ তা’আলা তার অন্তরে মোহর মেরে দেন। (সুনানে নাসাঈ: ১৩৭২) অর্থাৎ সেই অন্তর হেদায়াত পাওয়ার অযোগ্য হয়ে যায়।


জুমার নামাজে দেরি করে যাওয়া কিংবা দায়সারাভাবে জুমা আদায় করাও জুমার ব্যাপারে অলসতা হিসেবে গণ্য হতে পারে; তাই এ ব্যাপারে সবার সাবধান হওয়া উচিত।


জুমার দিন যে ১০টি আমল করবেন:
১. জুমার নামাজের প্রস্তুতি হিসেবে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন হয়ে ভালোভাবে গোসল করুন।


২. দাঁত ব্রাশ/ মিসওয়াক করুন, সম্ভব হলে সুগন্ধী ব্যবহার করুন এবং উত্তম পোশাক পরিধান করুন।


৩. জুমার নামাজের জন্য দ্রুত মসজিদে উপস্থিত হওয়ার চেষ্টা করুন। ইমাম খুতবা শুরু করার আগে অবশ্যই মসজিদে উপস্থিত হোন।


৪. ইমাম খুতবা শুরু করার আগে মসজিদে পৌঁছতে পারলে তাহিয়াতুল মসজিদ বা দুই রাকাত নফল সালাত আদায় করুন।


৫. ইমামের কাছাকাছি বসার চেষ্টা করুন। তবে মসজিদে পৌছতে দেরি হলে অন্যদের কষ্ট দিয়ে কাতার ডিঙ্গিয়ে সামনে যাবেন না; যেখানে জায়গা পাওয়া যায় সেখানেই বসে পড়ুন।


৬. মনযোগ দিয়ে খুতবা শুনুন। খুতবার সময় কথা বলবেন না। অন্য কাউকে চুপ থাকতে বলার প্রয়োজন হলে ইশারায় বলুন।


৭. উত্তমরূপে জুমার নামাজ আদায় করুন।


রসূল সা. বলেন,
مَنِ اغْتَسَلَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ، وَتَطَهَّرَ بِمَا اسْتَطَاعَ مِنْ طُهْرٍ، ثُمَّ ادَّهَنَ أَوْ مَسَّ مِنْ طِيبٍ، ثُمَّ رَاحَ فَلَمْ يُفَرِّقْ بَيْنَ اثْنَيْنِ، فَصَلَّى مَا كُتِبَ لَهُ، ثُمَّ إِذَا خَرَجَ الإِمَامُ أَنْصَتَ، غُفِرَ لَهُ مَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْجُمُعَةِ الأُخْرَى


যে ব্যাক্তি জুমার দিন গোসল করে এবং যথাসম্ভব উত্তমরূপে পবিত্রতা অর্জন করে, তেল মেখে নেয় অথবা সুগন্ধি ব্যবহার করে, তারপর মসজিদে যায়, মানুষকে ডিঙ্গিয়ে সামনে যাওয়া থেকে বিরত থাকে, তার ভাগ্যে নির্ধারিত পরিমাণ নামাজ আদায় করে, ইমাম যখন খুতবার জন্য বের হন তখন চুপ থাকে, তার এ জুমা এবং পরবর্তী জুমার মধ্যবর্তী সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। (সহিহ বুখারি: ৯১০)


৮. জুমার দিন বেশি বেশি দরূদ পাঠ করুন। রাসুল (সা.) বলেছেন,


إِنَّ مِنْ أَفْضَلِ أَيَّامِكُمْ يَومَ الجُمُعَةِ فَأَكْثِرُوا عَلَيَّ مِنَ الصَّلاةِ فِيهِ فَإِنَّ صَلاَتَكُمْ مَعْرُوضَةٌ عَلَيَّ
তোমাদের দিনগুলির মধ্যে সর্বোত্তম দিন হচ্ছে জুমআর দিন। সুতরাং ঐ দিন তোমরা আমার উপর অধিকমাত্রায় দরূদ পড়। কেননা, তোমাদের দরূদ আমার কাছে পেশ করা হয়। (সুনানে আবু দাউদ: ১৫৩৩)


৯. আল্লাহর কাছে দু’আ করুন। জুমার দিনের যে কোনো একটি সময় আল্লাহ তা’আলা দু’আ করার সাথে সাথেই কবুল করে নেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত একদিন রাসুল সা. জুমার উল্লেখ করে বলেছেন,
‏ فِيهِ سَاعَةٌ لاَ يُوَافِقُهَا عَبْدٌ مُسْلِمٌ، وَهْوَ قَائِمٌ يُصَلِّي، يَسْأَلُ اللَّهَ تَعَالَى شَيْئًا إِلاَّ أَعْطَاهُ إِيَّاهُ ‏"‏‏.‏ وَأَشَارَ بِيَدِهِ يُقَلِّلُهَا


এ দিনে এমন একটি মুহূর্ত রয়েছে, যে কোন মুসলিম বান্দা যদি এ সময় নামাজে দাঁড়িয়ে আল্লাহ্‌র কাছে কিছু চায়, তা হলে তিনি তাকে অবশ্যই তা দান করে থাকেন। রাসুল (সা.) হাত দিয়ে ইশারা করে বুঝিয়ে দিলেন যে, সে মুহূর্তটি খুবই সংক্ষিপ্ত। (সহিহ বুখারি: ৯৩৫)


১০. সূরা কাহাফ তিলাওয়াত করুন। জুমার দিন সুরা কাহাফ তিলাওয়াতের ফজিলত সম্পর্কে রাসুল (সা.) বলেন,
من قرأ سورة الكهف ليلة الجمعة أضاء له من النور فيما بينه وبين البيت العتيق
যে ব্যক্তি জুমার দিন সূরা আল কাহাফ পড়বে, তার তার জন্য পরবর্তী জুমা পর্যন্ত নুর হবে। (সহিহুল জামি: ৬৪৭০)

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

যানবাহনে চলাচলের তাসবিহ ও দোয়া পড়ার নিয়ম
জুমার জন্য যে ৪ কাজ জরুরি
সৌদির নতুন গ্র্যান্ড মুফতি ড. শায়খ সালেহ বিন হুমাইদ
চাঁদ দেখা গেছে, রবিউস সানি মাস শুরু বুধবার
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) আজ
ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপনে বর্ণাঢ্য জাতীয় কর্মসূচি
মুখ ঢেকে নামাজ আদায় করা কি মাকরুহ?
জুমার দিনের ১০ আমল
হজ ও ওমরাহ নিয়ে বিশাল সুখবর
জোহর-আসর নামাজের কেরাত আস্তে পড়তে হয় কেন?