বাংলাদেশের সর্বপ্রথম বিটুবি লেদার স্টার্টআপ রান লেদার জায়গা করে নিয়েছে সেরা পাঁচে। স্টার্টআপ ঢাকা এক্সিলারেটর ব্যাচ ৩-এ অংশ নেওয়া ১৬টি স্টার্টআপের মধ্য থেকে নির্বাচিত শীর্ষ পাঁচটি স্টার্টআপের মধ্যে রান লেদার অন্যতম। গত ১৭ ডিসেম্বর স্টার্টআপ ঢাকা এক্সিলারেটর আনুষ্ঠানিকভাবে এ তালিকা প্রকাশ করে।
বাংলাদেশের চামড়া শিল্পের সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচনে কাজ করছে রান লেদার। দেশের চামড়া ক্ষেত্রটিকে একটি কার্যকরী ক্ষেত্রে পরিনত করার জন্য কাজ করছে তারা। বর্তমান সময়ে উৎপাদনকারী থেকে শুরু করে খুচরা দোকানদার পর্যন্ত কোনো পণ্য পৌছাতে একাধিক পক্ষ বা মাধ্যম কাজ করে। তাই এই গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রটি একপ্রকার পুরোপুরি মধ্যস্বত্বভোগী নির্ভরই বলা যায়। তবে সরাসরি উৎপাদনকারী এবং খুচরা ব্যবসায়ীদের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করে তৃতীয় কোনো মাধ্যমের উপর সরাসরি নির্ভরশীল না হয়ে ব্যবসার ক্ষেত্র তৈরি করেছে রান লেদার। এক্ষেত্রে অধিক সহজে এবং তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ব্যবসায়ীদের মধ্যে সমন্বয় তৈরিতে রান লেদারের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি।
রান লেদারের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী মো. মোশারফ হোসেন জানান, বাংলাদেশের শুধুমাত্র লোকাল ফুটওয়্যারের বাজারমূল্য প্রায় সতেরো হাজার কোটি টাকা। একই সাথে বাংলাদেশের ফুটওয়্যার বিক্রি হয় বছরে ৩৬৬ মিলিয়ন জোড়া। এক্ষেত্রে পুরো বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান নবম। তবে এই অর্থনৈতিক ও বানিজ্যিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ খাতে রান লেদারের মতো কোম্পানির কাজ করার অনেক সুযোগ রয়েছে। এই খাতটিকে সমৃদ্ধ করতেই মূলত রান লেদার নামক এই স্টার্টআপটি শুরু করেন মোশারফ হোসেন।
মো. মোশাররফ হোসেন বলেন, রান লেদার যে প্রক্রিয়ায় কাজ করছে তা হলো এম টু আর অর্থাৎ ম্যনুফেকচার টু রিটেইল শপ মডেল। যেখানে একজন খুচরা ব্যবসায়ী তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে সরাসরি উৎপাদনকারীর কাছ থেকে পণ্য ক্রয় করতে পারবে এবং এর মাঝে কোনো তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ থাকবে না। উভয়ই ন্যায্য মূল্যে পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করতে পারবে। ফলে উৎপাদনকারী এবং খুচরা বিক্রেতা উভয়ই লাভবান হবে।
রান লেদার এখনও কোনো ফান্ড না পেলেও তৈরি করেছে বৃহৎ কর্মপরিধি। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের প্রায় ১৫ টি জেলায় একযোগে কাজ করে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। এর সাথে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে প্রায় ৬৫ জনের মতো মানুষ কর্মরত আছে। এদের মধ্যে ৬০ শতাংশ হচ্ছে শ্রমজীবী নারী। তাই নারীদের কর্মসংস্থানেও সামাজিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে রান লেদার।
রান লেদারের লক্ষ্য আগামী তিন বছরের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে বাংলাদেশের ফুটওয়্যার এবং লেদার ইন্ডাস্ট্রিতে একটি কার্যকরী যোগসূত্র স্থাপন করা। এছাড়া বাংলাদেশের চামড়াজাত পণ্যকে বিশ্ব বাজারে অতি দ্রুত ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে দেশকে স্বনির্ভর করে গড়ে তোলা প্রতিষ্ঠানটির উদ্দেশ্য।
এসএম