সোমবার (১৯ অক্টোবর) বিএসইসি চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের সাথে বৈঠকে এ দাবি জানায় বাংলাদেশ বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদ।
এ সময় বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবদুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মামুন হোসেন শামীম এবং সংগঠনের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য ওমর শরীফ শুভ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবদুর রাজ্জাক সাংবাদিকদের বলেন, বিএসইসি চেয়ারম্যান আমাদের দাবিগুলো পড়ে দেখেছেন। তিনি জানিয়েছেন, আমাদের দাবিগুলো যৌক্তিক। এসব দাবির মধ্যে অধিকাংশ দাবি নিয়ে তিনি কাজ করছেন। বাদবাকি দাবিগুলো পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে। পুঁজিবাজারকে গতিশীল রাখতে এবং ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার্থে কাজ করছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
কাজী আবদুর রাজ্জাক বলেন, ২০১০ সাল থেকে শুরু ২০২০ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত পুঁজিবাজারে যে মহাধস নেমে এসেছিল সেই ধসের কারণে বহু বিনিয়োগকারী পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে এবং অনেকে আত্মহত্যা করেছে। বর্তমান কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে যোগ্য নেতৃত্বের কারণে পুঁজিবাজারে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
বিনিয়োগকারীদের ১৯ দফা দাবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-
করোনাকালীন আইপিও অনুমোদন ৩ মাস বন্ধ রাখতে হবে। পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতার বৃহত্তর স্বার্থে অতিদ্রুত বাইব্যাক আইন’ পাস করতে হবে। কোনো কোম্পানির রিজার্ভের পরিমাণ ভালো থাকা সত্ত্বেও, সে কোম্পানির শেয়ার দর যদি অস্বাভাবিকভাবে কমে যায়, তাহলে ওই কোম্পানিকে রিজার্ভ থেকে অবশ্যই শেয়ার বাইব্যাক করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রদেয় ঐতিহাসিক যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাজারের পতন রোধে ফ্লোর প্রাইস পদ্ধতি বহাল রাখতে হবে এবং দশ টাকার নিচে বা ফেস ভ্যালুর নিচের প্রত্যেকটি শেয়ারের ফ্লোর প্রাইস ভ্যালু ন্যূনতম দশ টাকায় নির্ধারণ করতে হবে।
হাইকোর্ট কর্তৃক নির্দেশিত কোম্পানি আইনের ২সিসি ধারা মোতাবেক শেয়ার বাজারের লিস্টেড প্রতিটি কোম্পানির পরিচালকদের সম্মিলিতভাবে ন্যূনতম ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ করতে হবে এবং এককভাবে পরিচালককে ২ শতাংশ শেয়ার ধারণ করতে হবে।
স্বল্পমূলধনী ও দুর্বল কোম্পানিকে আইপিও অনুমোদন দেওয়া যাবে না। ওই কোম্পানির পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হবে তাদের পরিশোধিত মূলধন কম পক্ষে ২০০ কোটি টাকা হতে হবে।
কোনো কোম্পানিকে আইপিওতে আসতে হলে পরিশোধিত মূলধনের কমপক্ষে ১০ শতাংশ শেয়ার ছাড়তে হবে। রাইট শেয়ার ইস্যু বন্ধ রাখতে হবে। তবে যেসব কোম্পানি পরপর কমপক্ষে ৫ বছর ১০ শতাংশ হারে ক্যাশ ডিভিডেন্ট দিয়েছে বা দিবে তাদের ক্ষেত্রে রাইট শেয়ার ইস্যুর বিষয়টি বিবেচনা করা যাবে।
বাজারের তারল্য প্রবাহ বৃদ্ধি করার জন্য বিদ্যমান মার্জিন লোন প্রদানের হার ১ : ০.৫ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ন্যূনতম ১:১ করতে হবে। আর মার্জিন লোনের সুদ বার্ষিক শতকরা ১০ টাকা করতে হবে।
সরকার ঘোষিত সব ব্যাংকগুলোকে পুঁজিবাজারে ২০০ কোটি টাকা করে বিনিয়োগের সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধি করে ন্যূনতম ৫০০ কোটি টাকা পর্যন্ত উন্নীত করতে হবে। বাজারের আস্থা সৃষ্টি ও তারল্য সংকট দ্রুত দূর করার জন্য উক্ত বিনিয়োগসমূহ বাধ্যতামূলকভাবে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে বিনিয়োগ সম্পন্ন করতে হবে।
যেসব অডিটর, ইস্যু ম্যানেজার, আন্ডার রাইটার, অ্যা সেট ভ্যালুয়েশন কোম্পানি, স্পন্সর মিথ্যা তথ্য দিয়ে আইপিও অনুমোদনে সহায়তা করে বিনিয়োগকারীদের কষ্টার্জিত অর্থ লুটপাট করেছে তাদের ৩ বছরের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে এবং আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।