গার্ডিয়ানের তথ্য অনুযায়ী, জর্জিয়াতে ১ শতাংশ ভোট গণনা বাকি আছে। বর্তমানে ৪ হাজার ২০ ভোটে বাইডেন এগিয়ে রয়েছেন। ৫০ হাজারের কম ভোট গণনা বাকি। নর্থ ক্যারোলাইনায় ১ শতাংশ ভোট গণনা বাকি। ট্রাম্প সেখানে এগিয়ে রয়েছেন ৭৬ হাজার ৪৭৯ ভোটে। পেনসিলভানিয়াতেও ১ শতাংশ ভোট গণনা বাকি। ২৮ হাজার ৮৭৭ ভোটে এগিয়ে রয়েছেন বাইডেন। এ তিনটি অঙ্গরাজ্যেই ৫০ হাজারের কম ভোট গণনা বাকি আছে। নেভাদায় ১৩ শতাংশ ভোট গণনা বাকি। সেখানে ২২ হাজার ৬৫৭ ভোটে এগিয়ে রয়েছেন বাইডেন। এখানে ২ লাখের কম ভোট গণনা বাকি। আলাস্কায় ৫০ শতাংশ ভোট গণনা বাকি। সেখানে ৫৪ হাজার ৬১০ ভোটে এগিয়ে ট্রাম্প।
বিবিসির তথ্য অনুযায়ী, ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জর্জিয়া, নেভাদা ও অ্যারিজোনায় এগিয়ে রয়েছেন। এসব অঙ্গরাজ্যে জিততে পারলে বাইডেনের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পথে আর কোনো বাধা থাকবে না।
মার্কিন নির্বাচনে এখন পর্যন্ত যে ভোট পড়েছে তা দেশটির ১২০ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। মোট ৬৬ দশমিক ৯ শতাংশ ভোট পড়েছে নির্বাচনে।
বিবিসি জানিয়েছে, পেনসিলভানিয়ায় নির্বাচনের পরের দিন আসা ব্যালট আলাদা করতে বলেছেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারক। পেনসিলভানিয়ার সেক্রেটারি অব স্টেট ক্যাথি বুকভারকে নির্দেশ মানতে বলেছেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারক স্যামুয়েল আলিতো।
পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যে নির্বাচনের পরের দিন আসা সব ব্যালট আলাদা করার নির্দেশ দেন স্যামুয়েল। গণনা করা হলে সেগুলো যেন আলাদাভাবে গণনা করা হয়।
এর আগেই পেনসিলভানিয়ার স্টেট অব সেক্রেটারি এমন নির্দেশনা দিয়েছিলেন।
পেনসিলভানিয়াতে রিপাবলিকানরা পরে আসা ভোট গণনা নিয়ে আইনি চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন। কিন্তু পেনসিলভানিয়ে ভোট গণনা থেমে নেই। শুরুতে এই অঙ্গরাজ্যে এগিয়ে ছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু সেখানে ডাকযোগে আসা ভোট গণনা শুরু হওয়ার পর ব্যবধান কমেছে বাইডেনের।
জর্জিয়ায় ভোট পুনর্গণনার ইঙ্গিত দিয়েছেন সেখানকার সেক্রেটারি অব স্টেট ব্র্যাড রাফেনসপার্গের। স্থানীয় সময় শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমাদের কার্যালয় ও দেশের নির্বাচন কর্মকর্তাদের নজর হচ্ছে প্রতিটি বৈধ ভোট গণনা করা এবং ঠিকভাবে সংরক্ষণ করা।’ ১৬ ইলেক্টোরাল ভোটের এ অঙ্গরাজ্যটিতে ৯৯ শতাংশ ভোট গণনা হয়ে গেছে। এখানে কিছুটা এগিয়ে রয়েছেন বাইডেন।
মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলোর তথ্য অনুযায়ী, ব্যাটলগ্রাউন্ড অঙ্গরাজ্যগুলোর মধ্যে পেনসিলভানিয়া, জর্জিয়ার মতো কোনো একটিতে জিতলে বাইডেন ২৭০ ইলেক্টোরাল কলেজের ম্যাজিক ফিগার ছাড়িয়ে যাবেন। অ্যারিজোনা আর নেভাদায় তো তিনি এগিয়েই আছেন। তবে নতুন করে দুশ্চিন্তা বাড়াচ্ছে মিশিগান। এ অঙ্গরাজ্যের প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার অঙ্গরাজ্যটির নির্বাচন ও এর ভোট গণনা পদ্ধতি নিয়ে তদন্তের ঘোষণা দিয়েছেন। অঙ্গরাজ্যটির রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার লি চ্যাটফিল্ড বলেছেন, আইনসভার পর্যবেক্ষক কমিটি যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় শনিবার এই তদন্ত শুরুর বিষয়ে বৈঠক করবে।
এখন সবচেয়ে বেশি আলোচনা পেনসিলভানিয়াকে ঘিরে। ব্যাটলগ্রাউন্ড ছয় অঙ্গরাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট পেনসিলভানিয়ায়। এ জন্যই লড়াইয়ে টিকে থাকতে হলে এখানে জিততেই হবে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। হারলেই হোয়াইট হাউস থেকে বিদায় নিতে হবে তাঁকে।
ফক্স নিউজসহ কিছু গণমাধ্যম বাইডেনের ২৬৪টি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট পাওয়ার কথা জানাচ্ছে। মোট ৫৩৮ ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটের মধ্যে প্রেসিডেন্ট হতে প্রয়োজন ২৭০টি।
সর্বশেষ শুক্রবার গভীর রাতে ডেলাওয়্যার অঙ্গরাজ্যের উইলমিংটনে সমর্থকদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন বাইডেন। সেখানে তিনি এসব কথা বলেন। সেখানে বাইডেন বলেছেন, ‘ভোটে এগিয়ে যাওয়ার সংখ্যা থেকে স্পষ্ট বুঝতে পারছি, আমরা জিততে চলেছি।’ এএফপি ও রয়টার্সের খবরে জানা যায়, ডেলাওয়্যার অঙ্গরাজ্যের উইলমিংটনে স্থানীয় সময় শুক্রবার গভীর রাতে বক্তব্য দেন বাইডেন। তিনি বলেছেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হতে চলেছেন। তিনি বলেন, ‘ভোটের সংখ্যায় এটি স্পষ্ট যে আমরা নির্বাচনী দৌড়ে জিততে চলেছি।’
নির্বাচন ঘিরে বাইডেন–সমর্থকদের উল্লাস শুরু হয়ে গেছে। পেনসিলভানিয়ার ফিলাডেলফিয়ায় বাইডেন–সমর্থকেরা রাস্তায় আনন্দে মেতেছেন। সেখানে ট্রাম্পের চেয়ে বড় ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন বাইডেন।
যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের মধ্যেই করোনার সংক্রমণ বেড়ে চলেছে। টানা তিন দিন ধরে সেখানে রেকর্ড কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছেন। জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রে ১ লাখ ২৭ হাজার করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। দেশটিতে ২৪ ঘণ্টার মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ১৪৯ জনের।