কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী সব ব্যাংকের ঋণ ও আমানতের সুদহারের পার্থক্য চার শতাংশের মধ্যে থাকা বাধ্যতামূলক। কিন্তু নির্ধারিত নিময় ভঙ্গ করছে দেশের বেসরকারি খাতের ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড। বিদেশি ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক। ৫৯ ব্যাংকের তথ্য দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক অক্টোবরে এ প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, দেশি-বিদেশি মিলিয়ে ১৪ ব্যাংক এই হার মানছে না, এর মধ্যে দেশি বেসরকারি ব্যাংক রয়েছে ৭টি এবং বিদেশি ব্যাংক রয়েছে ৭টি। রাষ্ট্রায়ত্ত ৬ ব্যাংকের এ হার দুই দশমিক শূন্য তিন শতাংশ। বিষেশায়িত তিন ব্যাংকের ব্যবধান এক দশমিক ৯৫ শতাংশ আর ৯টি বিদেশি ব্যাংকের এ হার ৬ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ।
ইচ্ছামতো ঋণের সুদ আরোপ বন্ধ করতে স্প্রেড নীতিমালা জারি করা হয়।এ প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আমানত ও ঋণের মধ্যে সুদহার ব্যবধান ৫ শতাংশ নির্ধারণ করে ২০১৫ সালের ২৮ ডিসেম্বর একটি সার্কুলার জারি করে।সার্কুলার মতে, ভোক্তাঋণ ও ক্রেডিট কার্ড ছাড়া অন্যান্য খাতে স্প্রেড নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে থাকতে হবে।
২০১৮ সালে এ ব্যবধান চার শতাংশ নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর মাধ্যমে ব্যাংকগুলো সর্বোচ্চ যে সুদহারে আমানত সংগ্রহ করবে, তার সঙ্গে সর্বোচ্চ চার শতাংশ সুদ যোগ করে ঋণ দিতে পারবে। অর্থাৎ কোনো ব্যাংক ১০ শতাংশ সুদে আমানত নিলে ব্যাংকটির ঋণ সুদহার হবে সর্বোচ্চ ১৪ শতাংশ। তবে ভোক্তা ও সব ধরনের কার্ডের সুদহারের বেলায় এ নির্দেশনা প্রযোজ্য হবে না বলে জানানো হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ঋণ-আমানত সুদহারের ব্যবধান (স্প্রেড) হচ্ছে ছয় দশমিক ৪৭ শতাংশ, সিটি ব্যাংকের চার দশমিক ৬৭ শতাংশ, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের চার দশমিক ১১ শতাংশ, সীমান্ত ব্যাংকের পাঁচ দশমিক ৩২ শতাংশ, ইস্টার্ন ব্যাংকের চার দশমিক ১৭ শতাংশ, ব্র্যাক ব্যাংকের পাঁচ দশমিক ৩০ শতাংশ, কমিউনিটি ব্যাংকের চার দশমিক ৬৩ শতাংশ।
আর বিদেশি ব্যাংকগুলোর মধ্যে স্টান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের এ হার সাত দশমিক ৬৮ শতাংশ, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার পাঁচ দশমিক ১২ শতাংশ, সিটি ব্যাংক এনএ’র ছয় দশমিক ৫৮ শতাংশ, কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলনের চার দশমিক ৪৭ শতাংশ, উরি ব্যাংকের ছয় দশমিক ২০ শতাংশ, দ্য হংকং অ্যান্ড সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশন লিমিটেডের পাঁচ শতাংশ এবং ব্যাংক আল-ফালাহ লিমিটেডের ব্যবধান চার দশমিক ২৮ শতাংশ।
সংশ্লিষ্ট সূ্ত্রে জানা যায়, সব ঋণের বেলায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যে স্প্রেড সীমা আছে, তাতে উৎপাদন ও এসএমই খাতে এ সীমা মানছে না ব্যাংকগুলো। তবে আলোচনা করে এ বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।তা না হলে এক ধরনের অসম প্রতিযোগিতার সৃষ্টি হয় ব্যাংক খাতে, এতে কিছুটা অস্থিরতাও তৈরি হবে।
অর্থসংবাদ/এ এইচ আর. ১৭:০৭/১১.২৯.২০