করোনা ভাইরাসে এখন পযন্ত পাঁচ শতাধিক ব্যক্তি মারা যাওয়ার খবর চীনে সরকারিভাবে প্রকাশ করা হয়েছে। দ্রুত ছড়িয়ে পড়া এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন আরও হাজার হাজার চীনা নাগরিক। তবে প্রায় হাজারখানেক ব্যক্তি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন এমন তথ্যও জানিয়েছে দেশটির একাধিক গণমাধ্যম। যদিও এই ভাইরাসের কোনও প্রতিষেধক বা টিকা এখন পর্যন্ত আবিষ্কার হওয়ার তথ্য পাওয়া যায়নি। এমন অবস্থায় বিশ্বের সব দেশের ‘কারখানা’ হিসেবে স্বীকৃত চীনের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়ে উদ্বিগ্ন বহু দেশ। এরইমধ্যে শীর্ষ কিছু বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান চীন থেকে তাদের কারখানা সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। অন্যদিকে, বাংলাদেশের আমদানি করা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও দ্রব্যের ৮০ ভাগেরও বেশি জোগানদাতা চীন। এ অবস্থায় দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক কী হবে তা নিয়ে ব্যবসায়ীদের উদ্বেগ বাড়ায় সরকার কী অবস্থান নিচ্ছে তা পরিষ্কার করার বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রীর কাছে জানতে চান সাংবাদিকরা।
জবাবে তিনি বলেন, চীন বাংলাদেশের বড় ব্যবসায়িক অংশীদার। আবার করোনা ভাইরাস নিয়ে বিশ্বব্যাপী আতঙ্ক বিরাজ করছে। বাংলাদেশও বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। দেশের আমদানি ও রফতানির সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বাণিজ্য সচিব বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) একটি বৈঠক করেছেন। সংশ্লিষ্ট সবাইকে এ বিষয়ের ওপর নজর রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আগামী তিন দিনের মধ্যে এফবিসিসিআই চীনের সঙ্গে বাণিজ্য বিষয়ে একটি প্রতিবেদন দেবে। ওই প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে সরকার পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, তৈরি পোশাক খাতের কাঁচামালসহ অন্যান্য পণ্য আমদানি-রফতানির ক্ষেত্রে এ মুহূর্তে কোনও সমস্যা নেই। করোনা ভাইরাস সমস্যা দীর্ঘায়িত হলে চিন্তা করতে হবে। চীনের সঙ্গে যেসব সেক্টরে বাণিজ্য রয়েছে, বিশেষ করে বিজিএমইএ এবং বিকেএমইএসহ সংশ্লিষ্টরা এ বিষয়ে কাজ করছেন। সেই সব সেক্টরের ব্যবসায়ীরাও বিষয়টি পর্যালোচনা করছেন। এ বিষয়ে যথাসময়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
টিপু মুনশি বলেন, করোনা ভাইরাস নিয়ে যে সমস্যা চলছে, উভয় দেশের বাণিজ্য ক্ষেত্রে এর প্রভাব পর্যালোচনা করে সরকার সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। এ সমস্যা বেশি দিন অব্যাহত থাকলে আগামী দিনের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তথা সরকার এ বিষয়ে সতর্ক রয়েছে। শুধু বাংলাদেশ নয়, পৃথিবীর সব দেশ বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করছে। বাংলাদেশ সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এ বিষয়ে কাজ করছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।