খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন দেশের ২১ শতাংশ মানুষ

খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন দেশের ২১ শতাংশ মানুষ

দেশে গড় খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন প্রায় ২১ শতাংশ মানুষ। সে হিসাবে প্রায় প্রতি ৫ জনের মাঝে একজন খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন। সবচেয়ে বেশি খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন রংপুর বিভাগের মানুষ। আর সিলেটের মানুষ রয়েছেন তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায়।


আজ রবিবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকালে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রকাশিত ‘ফুড সিকিউরিটি স্ট্যাটিসটিকস প্রজেক্ট-২০২২’ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। বিবিএস মিলনায়তনে প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন প্রকল্প পরিচালক আব্দুল হালিম।


প্রতিবেদনে জানানো হয়, রংপুর বিভাগে প্রতি ১০০ জনে ২৯ দশমিক ৯৮ জন খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন। অন্যদিকে সিলেটে ১০০ জনে ১ দশমিক ৪২ জন তীব্র খাদ্য নিরাপত্তা হীনতায় রয়েছেন।


৮টি প্রশ্নের ভিত্তিতে ২৯ হাজার ৭৬০টি পরিবারের ইন্টারভিউ নিয়ে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।


প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে গড় খাদ্য নিরাপত্তা হীনতার হার ২১ দশমিক ৯১ শতাংশ। এছাড়া বরিশালে ২২ দশমিক ৮৩, চট্টগ্রামে ১৯ দশমিক ৬৬, ঢাকায় ১৬ দশমিক ৪০, ময়মনসিংহে ২৬, রাজশাহীতে ২৫ দশমিক ০১ ও সিলেটে ২৬ দশমিক ৪৮ শতাংশ মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন।


দেশে গড় তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার হার ০ দশমিক ৮৩ শতাংশ। এছাড়া বরিশালে ০ দশমিক ৬৭, চট্টগ্রামে ১ দশমিক ১৬, ঢাকায় ০ দশমিক ৬৪, খুলনায় ১ দশমিক ০৯, ময়মনসিংহে ০ দশমিক ৫৩, রাজশাহীতে ০ দশমিক ৫১ ও সিলেটে ১ দশমিক ৪২ শতাংশ মানুষ তীব্র খাদ্য নিরাপত্তা হীনতায় রয়েছেন।


চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন প্রতি ১০০ জনের মধ্যে একজন। সিলেট বিভাগের মানুষের মধ্যে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা সবচেয়ে বেশি, আর সবচেয়ে কম খুলনা বিভাগে।


বিবিএসের হিসাব অনুযায়ী, খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা বাড়লেও দেশের মানুষের ক্যালরি গ্রহণের হার বেড়েছে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড অনুযায়ী এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অপুষ্টিতে থাকা ১০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ একটি।


বিবিএসের জরিপ প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২১ দশমিক ৯১ শতাংশ মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে ১ দশমিক ১৩ শতাংশ মানুষ। দেশের ৭৮ দশমিক ৮৯ শতাংশ মানুষের খাদ্য নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা নেই। অর্থাৎ ১০০ জনের মধ্যে প্রায় ৭৯ জনেরই খাদ্য গ্রহণ নিয়ে কোনো শঙ্কায় নেই।


দেশের অধিকাংশ খাবার গ্রামে উৎপাদন হলেও গ্রামের মানুষের মধ্যেই খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা সবচেয়ে বেশি। জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গ্রাম এলাকাগুলোতে ২৪ দশমিক ১২ শতাংশ মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন, বিপরীতে শহর এলাকায় এ হার ২০ দশমিক ৭৭ শতাংশ। এমনকি চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় থাকা অধিকাংশ মানুষও গ্রামেই থাকেন। গ্রামে চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন ০ দশমিক ৯৫ শতাংশ মানুষ, শহরে এ হার ০ দশমিক ৬৭ শতাংশ।


খাদ্য মন্ত্রণালয়ের খাদ্য পরিকল্পনা এবং পর্যবেক্ষণ ইউনিটের মহাপরিচালক শহিদুল আলম বলেন, দেশে ২১ ভাগ খাবার নষ্ট হয়। আর রান্না থেকে খাবার পর্যন্ত প্রায় ৫০ শতাংশ খাদ্য নষ্ট হয়।


তিনি বলেন, আমাদের খাদ্য তালিকা পাল্টাতে হবে। শুধু ভাত আর রুটি নয় বরং অন্যান্য খাদ্যকেও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। তাছাড়া বয়সভিত্তিক, ক্রয়ভিত্তিক ও অর্থভিত্তিক খাবার তৈরি করতে হবে।


পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগে সচিব শাহনাজ আরেফিন বলেন, এটি বিবিএসের প্রথম কাজ। দেশে ৪ কোটি ১০ লাখ পরিবার আছে। সেখানকার মাত্র ২৯ হাজার পরিবারের তথ্য নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।


বিবিএসের মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগে সচিব শাহনাজ আরেফিন।


বিশেষ অতিথি ছিলেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের খাদ্য পরিকল্পনা এবং পর্যবেক্ষণ ইউনিটের মহাপরিচালক মো. শহীদুল আলম, পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের পরিচালক খান মো. নুরুল আমিন, বিবিএসের এগ্রিকালচার উইংয়ের প্রধান আলাউদ্দিন আল আজাদ প্রমুখ।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে জাতিসংঘে প্রধান উপদেষ্টার ৭ প্রস্তাব
জাতিসংঘে রোহিঙ্গা ও সংখ্যালঘু বিষয়ক সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টা
এনসিপিকে শাপলার বিকল্প প্রতীক নিতে চিঠি দেবে ইসি
শর্ত পূরণ করেছে এনসিপিসহ দুটি দল: ইসি
স্ত্রীসহ সাবেক এমপি আলী আজমের বিরুদ্ধে মামলা করবে দুদক
ফ্যাসিস্ট শক্তি মোকাবিলা করা বড় চ্যালেঞ্জ: আইজিপি
রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের উচ্চপর্যায়ের সম্মেলন আজ
দূষিত বায়ুর তালিকায় ঢাকার অবস্থান দ্বিতীয়
আজ বিদ্যুৎ থাকবে না যেসব এলাকায়
বাংলাদেশে হিন্দুবিদ্বেষী কোনো সহিংসতা নেই: প্রধান উপদেষ্টা