করোনা মহামারীর কারণে ধুঁকছে ইউরোপের প্রায় সব অর্থনীতি। এর মধ্যে কয়েকটি দেশের অবস্থা খুবই নাজুক। দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে ১৭০৯ সালের পর সবচেয়ে বাজে অর্থনৈতিক মন্দায় পড়বে যুক্তরাজ্য। তাই সবাই এখন চেষ্টা করছে দ্রুত অর্থনৈতিক ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সম্ভাব্য যা কিছু করা যেতে পারে তা করার। ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংকও (ইসিবি) এখন অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার সামনে রেখে তাদের প্রণোদনা কর্মসূচি বাড়িয়ে দিচ্ছে।
বৃহস্পতিবার ইসিবির পক্ষ থেকে একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তারা তাদের সম্পদ ক্রয় ৫০ হাজার কোটি ইউরো বা ৬০ হাজার ৫০০ কোটি ডলার বাড়াবে। এতে ব্যাংকটির সামগ্রিক প্রণোদনা কর্মসূচির আকার দাঁড়াবে ১ দশমিক ৮৫ ট্রিলিয়ন ইউরোয়। পাশাপাশি তাদের পরিকল্পনা হচ্ছে ক্রয় কার্যক্রম অন্তত ২০২২ সালের মার্চের শেষ পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার এবং ঋণদানকে অনুপ্রাণিত করতে ব্যাংকগুলোকে আরো অনেক ভর্তুকি ঋণ অনুমোদন দেয়া।
বিবৃতিতে বলা হয়, আজকে যে আর্থিক নীতি গ্রহণ করা হয়েছে, তা মহামারীকালীন অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সুবিধাজনক অবস্থা বজায় রাখার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে। এর মধ্য দিয়ে অর্থনীতির সব খাতে অর্থপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি এটি অর্থনৈতিক কার্যক্রমকে শক্তিশালী ভিত্তি প্রদান করবে।
সংবাদ সম্মেলনে ইসিবি প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিন লাগার্দে বলেন, মহামারী ইউরোপিয়ান অর্থনীতিকে মারাত্মক ঝুঁকির মুখে রেখেছে এবং এই নতুন লকডাউন এর পুনরুদ্ধারকে আরো বিলম্বিত হওয়ার হুমকিতে ফেলেছে।
উৎপাদন খাত থেকে সুসংবাদ মিললেও সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণে নতুন লকডাউনের কারণে অন্য সেবা খাতগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তিনি বলেন, বিস্তৃত আকারের আর্থিক সংস্থান অর্থনৈতিক কার্যক্রমকে সহায়তা দেয়ার জন্য জরুরি।
ইসিবির পক্ষ থেকে বলা হয়, মহামারীর ক্রমবর্ধমান পরিস্থিতি এবং ভ্যাকসিন সরবরাহে অনিশ্চয়তায় অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে।
এদিকে ব্যাংকটি সঞ্চয় সুদহার শূন্য দশমিক ৫ শতাংশে অপরিবর্তিত রেখেছে। লাগার্দে বলছেন, মূল্যস্ফীতি পূর্বাভাস বাড়ার আগে সুদহার বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা নেই ইসিবির।
এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ইসিবি তাদের মহামারীকালীন জরুরি ক্রয় কর্মসূচি (পিইপিপি) বাড়াল। এর আগে গত জুনে এ কর্মসূচির আওতায় ৭২ হাজার ৬০০ কোটি ডলারের সম্পদ ক্রয় করেছিল ইসিবি।
ইইউর পরিসংখ্যান সংস্থা ইউরোস্ট্যাট অনুসারে, তৃতীয় প্রান্তিকে রেকর্ড পুনর্গঠনের পরও জোটটির অর্থনীতি ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরের চেয়ে আকারে ৪ দশমিক ২ শতাংশ ছোট হয়েছে। এদিকে ইউরোপ করোনার নতুন সংক্রমণের সঙ্গে লড়াই করছে, যার প্রভাবে জার্মানি, ফ্রান্স ও ইতালির মতো প্রধান অর্থনীতিগুলো ফের লকডাউনে যাচ্ছে। এতে চতুর্থ প্রান্তিকেও ইইউর জিডিপি সংকুচিত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সূত্র সিএনএন বিজনেস।