কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন বিতরণ তদারকি করার দায়িত্বে থাকা জেনারেল গুস্তাভ পার্না জানান, চলতি সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের সব অঙ্গরাজ্যে ৩০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পৌঁছে যাবে। এর আগে গত শনিবার ফাইজারের তৈরি ভ্যাকসিন ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে দেশটির খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ)। এই ঘটনাকে উল্লেখযোগ্য মাইলফলক বলে বর্ণনা করা হয়েছে।
বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন অনুমোদনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই দেশটিতে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হবে। ফাইজারের ভ্যাকসিনের অনুমোদন দিতে গত কয়েকদিন থেকেই ট্রাম্প প্রশাসনের কাছে ব্যাপক চাপের মুখে ছিল এফডিএ। সংস্থাটির প্রধান স্টিফেন হানকে এর অনুমোদন দিতে নাহয় পদত্যাগ করতে বলা হচ্ছিল। করোনার বিরুদ্ধে এই ভ্যাকসিন ৯৫ শতাংশ কার্যকর বলে ইতোমধ্যেই প্রমাণ পাওয়া গেছে।
ওয়ার্ল্ডোমিটারের পরিসংখ্যান বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত হয়েছে ১ কোটি ৬৫ লাখ ৪৯ হাজার ৩৬৬ জন। এর মধ্যে মারা গেছে ৩ লাখ ৫ হাজার ৮২ জন। তবে ইতোমধ্যেই সুস্থ হয়ে উঠেছে ৯৬ লাখ ৪৪ হাজার ৩২৫ জন।
জেনারেল গুস্তাভ পার্না এক সংবাদ সম্মেলনে আশা প্রকাশ করেছেন যে, সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের ১৪৫টি স্থানে ভ্যাকসিন পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে। অপরদিকে মঙ্গলবার ৪২৫টি স্থানে এবং বুধবার বাকি ৬৬টি স্থানে পৌঁছে যাবে করোনার ভ্যাকসিন। তিনি জানিয়েছেন, আগামী সপ্তাহের মধ্যেই ৩০ লাখ মানুষের কাছে ভ্যাকসিন পৌঁছে যাবে বলে তাদের প্রত্যাশা।
এর আগে যুক্তরাজ্যে বড় পরিসরে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন কর্মসূচি শুরু হয় গত মঙ্গলবার। দেশটিতে প্রথমবারের মতো ভ্যাকসিন নিয়েছেন ৯০ বছর বয়সী মার্গারেট কেনান। তিনি নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের এনিস্কিলেন শহরের বাসিন্দা।
যুক্তরাজ্যের প্রায় ৭০টি হাসপাতালে মঙ্গলবার ভ্যাকসিন কর্মসূচির আওতায় করোনার সম্মুখসারির যোদ্ধা হিসেবে স্বাস্থ্যকর্মী, ৮০ বছরের বেশি বয়সী লোকজন ও কেয়ারহোমের কর্মীদেরকেই প্রথম সারিতে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। ভ্যাকসিন গ্রহণের মাধ্যমে লোকজন আবারও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
বিশ্বে করোনার প্রাদুর্ভাবের প্রায় এক বছর হয়ে গেল। প্রথমবার চীনে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়লেও এখন পর্যন্ত প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশটির নাম হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। সংক্রমণ ও মৃত্যুতে সবাইকে ছাড়িয়ে অনেকদিন ধরেই শীর্ষ অবস্থান ধরে রেখেছে দেশটি।