ইন্দোনেশিয়ার কর্তৃপক্ষ বলছে, এরই মধ্যে কিছু সংকেত পাওয়া যাচ্ছে, যেটি ওই উড়োজাহাজের ফ্লাইট রেকর্ডারের বলে মনে করা হচ্ছে।তারা ধারণা করছেন, বোয়িং ৭৩৭ বিমানটি উড্ডয়নের চার মিনিটের মাথায় সাগরে বিধ্বস্ত হয়েছে। ফলে বিমানের কোনো যাত্রীর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নেই।
স্থানীয় সময় শনিবার রাজধানী জাকার্তা থেকে বিমানটি উড্ডয়ন করেছিল। পরবর্তীতে সাগরের ওপরে ১০ হাজার ফুট উচ্চতায় থাকা অবস্থায় বিমানটি নিখোঁজ হয়ে যায়। তারপর থেকেই বিমানটির সঙ্গে কন্ট্রোল রুম থেকে আর যোগাযোগ করা যায়নি।
শ্রিয়িজায়ার বিমানটি রাজধানী জাকার্তা থেকে উড্ডয়ন করেছিল। এটি জাকার্তা থেকে পশ্চিমাঞ্চলীয় কালিমানতান প্রদেশের পোন্তিয়ানাক শহরের দিকে যাচ্ছিল। ইন্দোনেশিয়ার সংবাদমাধ্যম রিপাবলিকার বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই ফ্লাইটে ১২ ক্রুসহ ৬২ আরোহী ছিলেন। এর আগে জানানো হয়েছিল, এতে ছয় শিশুসহ ৫৯ আরোহী ছিলেন। যার মধ্যে ছয়জন ক্রু।উড্ডয়নের চার মিনিট পর থেকেই বিমানটি সব ধরনের যোগাযোগ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এরপর থেকেই বিমানটি দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে কিনা তা জানতে তল্লাশি শুরু হয়।
ইন্দোনেশিয়ার পরিবহণমন্ত্রী বুদি কারিয়া এক সংবাদ সম্মেলনে উড়োজাহাজে ৬২ আরোহী থাকার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, উড়োজাহাজটির অনুসন্ধান ও উদ্ধারে তৎপরতা চলছে।ঘটনাস্থলে ১০টির বেশি জাহাজ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া ঘটনাস্থলের আশে-পাশে পাওয়া ধ্বংসাবশেষ খতিয়ে দেখছেন তদন্ত কর্মকর্তারা। এগুলো আসলেই ওই বিমানের ধ্বংসাবশেষ কীনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
জাকার্তা পুলিশের মুখপাত্র ইউসরি ইউনুস জানান, তল্লাশি ও উদ্ধারকর্মীরা ঘটনাস্থল থেকে দুটি ব্যাগ উদ্ধার করেছেন। একটি ব্যাগের মধ্যে বিমানের কোনো আরোহীর জিনিসপত্র ছিল এবং অপর একটি ব্যাগে কারও দেহাবশেষ পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, আমরা এসব জিনিস শনাক্ত করার চেষ্টা করে যাচ্ছি।
শনিবার রাতে উদ্ধার ও তল্লাশি অভিযান কিছু সময়ের জন্য বন্ধ রাখা হলেও রোববার সকাল থেকেও আবারও শুরু হয়েছে। উদ্ধারকারী দল থেকে সহায়তা করতে চারটি বিমানও মোতায়েন করা হয়েছে।স্থানীয় বিমান সংস্থা শ্রীবিজয়া এয়ার উড়োজাহাজটির মালিক। সংস্থাটি জানিয়েছে, তারা নিখোঁজ উড়োজাহাজের ব্যাপারে সব ধরনের তথ্য সংগ্রহ করছে।
বেশ কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, তারা বড় ধরনের একটি বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। সোলিহিন নামের এক জেলে জানিয়েছেন, তিনি বিমান দুর্ঘটনার সাক্ষী।
বিমানটিতে ১০ শিশুসহ ৫০ জন যাত্রী এবং ১২ জন ক্রু সদস্য ছিল। বিমানে থাকা সব আরোহীই ইন্দোনেশিয়ার নাগরিক বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। দুর্ঘটনার পর থেকেই ওই বিমানে থাকা আরোহীদের স্বজনরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। ইয়ামান জাই নামের একজন বলেন, আমার স্ত্রী এবং তিন সন্তান ওই বিমানে ছিল।