সূত্রমতে, বিগত বছরগুলোর মধ্যে ওয়ালটনের সবচেয়ে বেশি ফ্রিজ বিক্রি হয়েছিল ২০১৯ এ। সে বছর জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ২০ লাখেরও বেশি ফ্রিজ বিক্রি হয়েছিল ওয়ালটনের। ২০২১ সালে তা ছাড়িয়ে যাওয়ার টার্গেট নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
টার্গেট পূরণে গবেষণা ও উন্নয়ন (আরএনডি), ডিজাইন, উৎপাদন, মান নিয়ন্ত্রণ বা কিউসি, বিপণন, ব্র্যান্ডিং ও সেলস সব বিভাগে নেওয়া হয়েছে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি ও কর্মপরিকল্পনা। যার অংশ হিসেবে ওয়ালটন প্লাজা ও সেলস আউটলেটগুলোতে সর্বোচ্চ সংখ্যক ডিজাইন ও মডেলের রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজার। বছরজুড়ে বাজারে ছাড়বে বৈচিত্র্যময় ডিজাইন, কালার, ও ফিচারের নতুন নতুন মডেলের ফ্রিজ। সম্ভাবনাময় ব্ল্যাঙ্ক পয়েন্টে চালু করছে নতুন প্লাজা ও সেলস আউটলেট।
এদিকে, সারা দেশে চলছে ওয়ালটন ডিজিটাল ক্যাম্পেইন সিজন-৯। এর আওতায় এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে দেড় শতাধিক ক্রেতা ওয়ালটন ফ্রিজ কিনে ফ্রি পেয়েছেন আরেকটি নতুন ফ্রিজ। এছাড়া হাজার হাজার ক্রেতা পেয়েছেন আকর্ষণীয় অঙ্কের ক্যাশ ভাউচার।
ওয়ালটনের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর ইভা রিজওয়ানা নিলু বলেন, করোনায় গত বছর দেশের সকল ব্র্যান্ডেরই ফ্রিজ বিক্রি কম হয়েছে। ২০২০ সালে ওয়ালটনের প্রায় ১৪ লাখ ফ্রিজ বিক্রি হলেও মার্কেট শেয়ার ছিল ৭০ শতাংশের বেশি। যা নিঃসন্দেহে সন্তোষজনক। এরই মধ্যে করোনার দুর্যোগ কাটিয়ে ওয়ালটন ফ্রিজের চাহিদা ও বিক্রিতে স্বাভাবিক গতি ফিরে এসেছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছর ২০১৯ সালের চেয়ে বেশি ফ্রিজ বিক্রির টার্গেট নিয়েছি।
ওয়ালটনের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর এমদাদুল হক সরকার বলেন, ফ্রিজ বিক্রির টার্গেট পূরণে বিপণন কৌশল ও ব্যাপক ব্র্যান্ডিং এর প্রতি বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। সেজন্য ২০২১ সালকে ‘ব্র্যান্ডিং ইয়ার’ বা বর্ষ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। যার প্রেক্ষিতে ২ জানুয়ারি থেকে সারা দেশে চলছে ওয়ালটন ডিজিটাল ক্যাম্পেইন সিজন-৯। এর আওতায় ওয়ালটন ফ্রিজ ক্রয়ে প্রতি ঘণ্টায় ফ্রি ফ্রিজসহ কোটি কোটি টাকার নিশ্চিত ক্যাশ ভাউচার পাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে দেশের সর্বত্র প্রতি মাসে ওয়ালটন ফ্রিজের ব্যাপক ব্র্র্যান্ডিং করা হচ্ছে। সার্বিক প্রস্তুতি বিবেচনায় চলতি বছরে ফ্রিজ বিক্রির টার্গেট পূরণে ওয়ালটন সফল হবে বলে তিনি আশাবাদী।
ওয়ালটনের নির্বাহী পরিচালক উদয় হাকিম বলেন, ওয়ালটন ফ্রিজ বিক্রিতে ২০২১ সাল হবে বাম্পার সেলস ইয়ার। সে লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সব পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
ওয়ালটন ফ্রিজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা প্রকৌশলী আনিসুর রহমান মল্লিক বলেন, এ বছর ফ্রিজের ডিজাইন, কালার, মডেল ও ফিচারে বৈচিত্র্য আনার ওপর অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ওয়ালটন ফ্রিজে সংযোজন করা হচ্ছে স্মার্ট ফিচার। ডিজাইনেও থাকবে বৈচিত্র্যতা। এরই মধ্যে সাইড বাই সাইড ডোরের কয়েকটি বৈচিত্র্যময় ডিজাইনের কয়েকটি নতুন মডেল। এ বছর অত্যাধুনিক ফিচারসমৃদ্ধ সাইড বাই সাইড ডোরের স্মার্ট ফ্রিজ বাজারে ছাড়া হবে। বাংলাদেশে একমাত্র ওয়ালটনই এই মডেলের ফ্রিজ উৎপাদন করছে।
ওয়ালটন ফ্রিজের সিইও আরও বলেন, গ্রাহকদের উচ্চ গুণগতমানের পণ্যের পাশাপাশি সর্বোত্তম বিক্রয়োত্তর সুবিধা দেওয়ার মাধ্যমে সর্বোচ্চ গ্রাহক সন্তুষ্টি অর্জন করাকে অধিক গুরুত্ব দিয়েছে ওয়ালটন। সেজন্য ফ্রিজে এক বছরের রিপ্লেসমেন্ট সুবিধার পাশাপাশি কম্প্রেসরে ১২ বছরের গ্যারান্টি দিচ্ছে ওয়ালটন। আইএসও সনদপ্রাপ্ত ওয়ালটন সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের আওতায় সারা দেশে বিস্তৃত ৭৬টি সার্ভিস সেন্টারের থেকে গ্রাহকদের দ্রুত বিক্রয়োত্তর সেবা দেওয়া হচ্ছে।
ওয়ালটনের নির্বাহী পরিচালক ও ফ্রিজের চিফ অপারেটিং অফিসার ইউসুফ আলী বলেন, ফ্রিজ বিক্রির টার্গেট বিবেচনায় আরএনডি, ডিজাইন, উৎপাদন লাইন, কিউসি উৎপাদন প্রক্রিয়ার সর্বত্র ব্যাপক বিভাগ সর্বত্র সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় কাঁচামালের পর্যাপ্ত মজুত নিশ্চিত করা হয়েছে। আমেরিকা, জার্মানি, জাপানের মতো উন্নত বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তির মেশিনারিজ দিয়ে ফ্রিজের আনুষঙ্গিক যন্ত্রাংশ ও ফ্রিজ উৎপাদন করা হচ্ছে। কারখানায় বর্তমানে প্রতিদিন সাড়ে সাত হাজার ফ্রিজ উৎপাদন করা হচ্ছে। ফ্রেব্রুয়ারি মাস থেকেই দৈনিক উৎপাদন ১০ হাজার ইউনিট পর্যন্ত বাড়ানো হবে।
কর্তৃপক্ষ জানায়, দেশের সেরা রেফ্রিজারেটর ব্র্যান্ডের মর্যাদাস্বরূপ ওয়ালটন ফ্রিজ সাতবার ‘বেস্ট ব্র্যান্ড অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছে। এছাড়া ওয়ালটন ‘সুপার ব্র্যান্ড ২০২০’ খেতাব পাওয়ার পাশাপাশি ২০২১ সালের জন্য ‘সুপারব্র্যান্ড’ এর সম্মাননা পেয়েছে।