চীনের বাইরেও অন্যান্য দেশে করোনাভাইরাসের গতিবিধির ওপর বিশেষ নজর রাখছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা। কোন দেশের সরকার করোনাভাইরাস প্রতিরোধে কতটা প্রস্তুত, সেদিকেও নজর রাখা হচ্ছে। সেই পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে ভারত প্রসঙ্গে এই মন্তব্য করেছে।
ভারতে এখনও পর্যন্ত হাতে গোনা কয়েকজনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া গেছে। কিন্তু ঘনজনসংখ্যার এই দেশে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ করার ক্ষমতা অত্যন্ত সীমিত বলে মনে করছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা। তাই চীনের পরে করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য ক্ষেত্র হিসেবে যে দেশ তাদের সবচেয়ে চিন্তায় রেখেছে তা হলো ভারত। করোনাভাইরাসের হামলা ঠেকাতে যতটা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হয়, তা এই দেশের বেশিরভাগ জায়গাতেই নেই বলে মনে করছে তারা।
বৈশ্বিক করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে গোয়েন্দা সংস্থার পাঠানোর একটি খসড়া ইতোমধ্যে হাউস অব রিপ্রেজেন্টিটিভের গোয়েন্দা কমিটির হাতে পৌঁছেছে। হাউস অব রিপ্রেজেন্টিটিভের গোয়েন্দা কমিটির এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ‘কমিটি আইসি (ইন্টেলিজেন্স কমিউনিটি) থেকে করোনার বিষয়ে একটি ব্রিফিং পেয়েছে। এবং এই প্রাদুর্ভাবের বিষয়ে প্রতিদিনই আপডেট আসছে।’
শুধু তথ্য সংগ্রহই নয়, ইউএস সেন্টার ফর ডিজিসেস কন্ট্রোলের মতো স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা।
বিশ্বব্যাপী ৫৪টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে ২ হাজার ৮৫৮ জনের। আক্রান্ত হয়েছে ৮৩ হাজার ৩৭৯ জন। অপরদিকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩৬ হাজার ৪৩৬ জন।
করোনাভাইরাসে শুধুমাত্র চীনের মূল ভূখণ্ডেই আক্রান্ত হয়েছে ৭৮ হাজার ৮২৪ জন, মারা গেছে ২ হাজার ৭৮৮ জন। অপরদিকে, দক্ষিণ কোরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ২২ এবং মৃত্যু হয়েছে ১৩ জনের।
সর্বশেষ নিউজিল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, নাইজেরিয়া, বেলারুশ ও লিথুয়ানিয়াও নিজেদের দেশে প্রথম করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগী পাওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে। এশিয়া, ইউরোপ, আমেরিকা, আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া-কোনো মহাদেশ বাদ যায়নি এই ভাইরাসের আক্রমণ থেকে।
বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবকে ‘সর্বোচ্চ ঝুঁকি’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সংস্থাটির ঝুঁকি নির্ণয়ে এটি সর্বোচ্চ ধাপ। সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান ড. টেড্রস অ্যাডহানম গেব্রেইয়েসুস এই ঘোষণা দেন বলে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ড. টেড্রস অ্যাডহানম বলেন , ‘এই জিনিসটি (করোনাভাইরাস) এখন যেকোনো দিকে মোড় নিতে পারে। এর যে ঝুঁকি সেটাকে আমরা দুর্বল করে দিতে পারছি না। এজন্য আজ আমরা বলছি, করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক ঝুঁকি এখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে। আগে আমরা বলেছি, উচ্চ ঝুঁকি। এখন বলছি সর্বোচ্চ ঝুঁকি।’
সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া, ফক্স নিউজ, নিউইয়র্ক টাইমস