জেলা কৃষি বিভাগ জানায়, কুড়িগ্রামের আবহাওয়া ও মাটিতে ব্রোকলি চাষের প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। অল্প শ্রম ও পুঁজি বিনিয়োগ করে ব্রোকলি চাষে লাভবান হওয়ার কারণে নতুন এ সবজি চাষে বেশ আগ্রহী জেলার কৃষকরা।
২০১৯ সালে সখের বশে ঢাকা থেকে ব্রোকলির জাপানি বীজ এনে কুড়িগ্রামের ভোগডাঙ্গার বড়ভিটায় ১২ হাজার টাকায় জমি লিজ নিয়ে ১ বিঘা জমিতে রোপণ করেন সেনাবাহিনী থেকে অবসর নেয়া আতাউর রহমান। সেই বছর ১ বিঘা জমিতে ব্রোকলি চাষে ২০ হাজার টাকা ব্যয় করে বিক্রি করেন ৬০ হাজার টাকা। নতুন এ সবজি চাষে সফলতা পাওয়া এবং অল্প সময়ে লাভের মুখ দেখায় আগ্রহ আরো বাড়ে আতাউরের।
চলতি বছর তিনি ৩ বিঘা জমিতে ব্রোকালি লাগিয়েছেন। এতে খরচ হয়েছে তার এবার ৩০ হাজার টাকা। নিজে বীজ উৎপাদন করায় এবং চাষ পদ্ধতি রপ্ত হওয়ায় খরচ কমেছে অনেকটা। আগে ঢাকা থেকে বীজ সংগ্রহ করতে হতো আর এখন স্থানীয়ভাবে বীজ ও চারা তৈরি করে অন্যদের কাছে বিক্রি করছেন আতাউর। এতেও বেশ লাভ করছেন তিনি। তার এ জমিতে ৩ জন শ্রমিক কাজ করছেন। নিজেও সময় দিচ্ছেন। আর বাজারজাত করছেন জেলা এবং উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়েও। গত বছর এক একটি ব্রোকলি বিক্রি করেছেন ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় আর এ বছর দাম কিছুটা কমে ২০ টাকা করে বিক্রি করছেন।
কুড়িগ্রামে তার কাছ থেকে বীজ ও চারা নিয়ে অরো ৫ জন ব্রোকলি চাষ করেছেন। অল্প সময়ে ভাল ফলন ও ভালো দাম পাওয়ায় অপার সম্ভাবনা দেখছেন তার মতো অনেক কৃষক। ১ বিঘা জমিতে প্রথম ব্রোকলি চাষ শুরু হলেও এ বছর ৫০ হেক্টর জমিতে ব্রোকলি চাষ হচ্ছে।
পুষ্টিবিদদের দেয়া তথ্য ও ইন্টারনেট অনুযায়ী ব্রোকলিতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি, এ এবং আয়রন রয়েছে। এতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়ামও থাকে। এটি যেমন ত্বকের জন্য ভালো তেমনি কোলেস্টরল কমাতেও সাহায্য করে। আমেরিকান ক্যান্সার রিসার্চ ইন্সটিটিউটের তালিকায় কান্সার প্রতিরোধী দশম খাবার হিসেবে স্থান করে নিয়েছে ব্রোকলি।
এ বছর জেলায় ৭ হাজার হেক্টর জমিতে সবজি এবং শাক লাগানো হয়েছে। এর মধ্যে ৫০ হেক্টর জমিতে ব্রোকলি চাষ হয়েছে এবং কৃষি বিভাগ থেকে নতুন এ সবজি চাষে মাঠ পর্যায়ে পরামর্শ, উৎসাহ এবং প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে বলে জানালেন জেলা কৃষি কর্মকর্তা কুড়িগ্রাম ড. মো. মোস্তাফিজার রহমান প্রধান।