আগারগাঁওয়ের জাতীয় বেতার ভবনে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। এ উপলক্ষে সকাল ৯টায় জাতীয় বেতার ভবন থেকে বের হবে র্যা লি। তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু র্যা লির উদ্বোধন করবেন।
জাতীয় বেতার ভবন মিলনায়তনে বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক নারায়ণ চন্দ্র শীলের সভাপতিত্বে ‘বিশ্ব বেতার দিবস ও শ্রোতা সম্মেলন ২০১৮’-এর উদ্বোধন উপলক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতেও প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন তথ্যমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখবেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ কে রহমতুল্লাহ ও তথ্যসচিব মো. নাসির উদ্দিন আহমেদ। বিকাল ৫টায় সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন তথ্য কমিশনার মরতুজা আহমদ।
বিশ্ব বেতার দিবস উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং দেশ ও জাতির আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে বাংলাদেশ বেতার আরও বহুদূর এগিয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন।আবদুল হামিদ বলেন, ‘‘১৯৩৯ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে বাংলাদেশ বেতার শক্তিশালী
গণমাধ্যম হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের মহান স্বাধীনতা ও মুক্তি সংগ্রামেও বাংলাদেশ বেতার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ বেতারে প্রচার ছিল সাহসী ও তাৎপর্যপূর্ণ সিদ্ধান্ত। মহান মুক্তিযুদ্ধে ‘স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র’ মুক্তিপাগল দেশপ্রেমিক জনতাকে উজ্জীবিত করতে অপরিসীম ভূমিকা পালন করে।’’
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘দুর্যোগ-দুর্বিপাকে বেতারের সতর্কতামূলক বার্তা সাধারণ মানুষকে সঠিক দিকনির্দেশনা দেয়। বাংলাদেশ বেতারে কৃষি, শিক্ষা, জনসংখ্যা ও স্বাস্থ্যবিষয়ক কার্যক্রমের পাশাপাশি সম্প্রতি ক্রীড়া ক্ষেত্রে বেতার কার্যকর অবদান রেখে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘ক্রীড়া আজ আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অন্যতম অনুষঙ্গ। ক্রীড়ার চলতি ধারাভাষ্য ক্রীড়ামোদী দর্শক-শ্রোতাদের কেবল উদ্বেলিত করে না, দেশকে বিশ্ব অঙ্গনে তুলে ধরতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মাঠের খেলোয়াড় ও গ্যালারির দর্শকদের সঙ্গে ক্রীড়া ভাষ্যকার শ্রোতাদের যেমন মাঠে নিয়ে যায়, তেমনি তারাও জয়পরাজয়ের দোলাচলে খেলাকে উপভোগ করে।’
বিশ্ব বেতার দিবসে দেওয়া বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ, স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলায় বেতার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে আশাবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘বিশ্ব বেতার দিবস উপলক্ষে আমি বাংলাদেশসহ বিশ্বের বেতার শ্রোতা, সম্প্রচারকর্মী, শিল্পী, কলাকুশলীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে বলে আমি মনে করি।’
বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গর্বিত উত্তরাধিকার বাংলাদেশ বেতার দেশের বৃহত্তম এবং অন্যতম শক্তিশালী গণমাধ্যম। বাংলাদেশ বেতার সূচনালগ্ন থেকে দেশ, সমাজ ও সংস্কৃতি বিকাশের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। বাঙালি জাতিকে মহান মুক্তিযুদ্ধে উদ্বুদ্ধ ও অংশগ্রহণে উৎসাহিত করতে স্বাধীন বেতার কেন্দ্রের বলিষ্ঠ ভূমিকা সর্বজনবিদিত।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমাদের সরকার জাতীয় উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করেছে। বেসরকারি খাতে ৪৪টি টেলিভিশন, ২২টি এফএম রেডিও ও ৩২টি কমিউনিটি রেডিও চ্যানেলের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। দেশের গণমাধ্যম এখন পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করছে।’
সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে এবং উন্নয়ণমূলক কর্মকাণ্ডে গণমানুষকে উদ্বুদ্ধ ও উৎসাহিত করতে বেতারের ভূমিকার কথা বাণীতে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ ও নতুন প্রযুক্তি বেতারকে আরও সম্ভাবনাময় করে তুলছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। বাসস।