শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ন্যাশনাল প্রডাক্টিভিটি অর্গানাইজেশন (এনপিও) আয়োজিত ‘ন্যাশনাল প্রডাক্টিভিটি অ্যান্ড কোয়ালিটি এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড-২০১৯ এবং ইনস্টিটিউশনাল অ্যাপ্রিসিয়েশন অ্যাওয়ার্ড-২০১৯’-এর ট্রফি ও সনদ বিতরণের এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।
শিল্প সচিব কেএম আলী আজমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার ও এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এনপিওর পরিচালক (যুগ্ম সচিব) নিশ্চিন্ত কুমার পোদ্দার। এতে পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মালিক ও প্রতিনিধিসহ সরকারি-বেসরকারি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী বলেন, সরকারের রূপকল্পগুলোকে সাফল্যের সঙ্গে অর্জন করতে উৎপাদনশীলতার বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই। রূপকল্প ২০৩১ ও ২০৪১ বাস্তবায়নের কৌশল হিসেবে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে শিল্পায়নকে মূলভিত্তি হিসেবে নির্ধারণ করেছে। সরকার আধুনিক শিল্পায়নে বেসরকারি উদ্যোক্তা উন্নয়নের ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান করছে। উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করতে বেসরকারি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ইতিবাচক মনোভাব থাকতে হবে।
শিল্প প্রতিমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, শিল্প মন্ত্রণালয় ও এর আওতাধীন বিভিন্ন দপ্তর/সংস্থা উদ্যোক্তা সৃষ্টি ও এর উন্নয়নে কাজ করছে। কল-কারখানায় শ্রমিকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি কার্যক্রমে সহায়তা প্রদান করছে। উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পেলে মালিক, শ্রমিক, ভোক্তা এমনকি সরকারও তার সুফল পেয়ে থাকে। এ সময় প্রতিমন্ত্রী শ্রমিকদের প্রতি আরো যত্নশীল হয়ে তাদের নিয়মিত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে শিল্পোদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান। পাশাপাশি শিল্পোদ্যোক্তাদের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি এবং গুণগতমানের পণ্য উৎপাদনে এগিয়ে আসার কথা জানান।
অনুষ্ঠানে শিল্প খাতের অবদানের স্বীকৃতি প্রদান, প্রণোদনা সৃষ্টি এবং সৃজনশীলতাকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে পাঁচটি ক্যাটাগরির খাত ও উপখাতের ৩১ শিল্প ও সেবা প্রতিষ্ঠানকে এ পুরস্কার দেয়া হয়।
পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে বৃহৎ শিল্প ক্যাটাগরিতে ইস্পাত ও প্রকৌশল খাতে প্রথম হিসেবে পুরস্কার পেয়েছে বঙ্গ বিল্ডিং ম্যাটেরিয়ালস লিমিটেড। এই ক্যাটাগরিতে দ্বিতীয় হয়েছে আরএফএল ইলেকট্রনিকস লিমিটেড ও তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে রংপুর মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। খাদ্য শিল্প বিভাগে ইস্পাহানি টি লিমিটেড প্রথম ও নাটোর এগ্রো লিমিটেড দ্বিতীয় হিসেবে পুরস্কার পেয়েছে। টেক্সটাইল ও আরএমজিতে প্লামি ফ্যাশনস লিমিটেড প্রথম, ইউনিভার্সেল জিন্স লিমিটেড দ্বিতীয় এবং তৃতীয় হয়েছে জেনেসিস ওয়াশিং লিমিটেড।
প্লাস্টিক শিল্প বিভাগে প্রথম পুরস্কার পেয়েছে আরএফএল প্লাস্টিকস লিমিটেড। এছাড়া এ খাতে দ্বিতীয় হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছে ডিউরেবল প্লাস্টিক লিমিটেড। পাট শিল্পে প্রথম হয়েছে আকিজ জুট মিলস লিমিটেড। আর দ্বিতীয় হয়েছে আইয়ান জুট মিলস লিমিটেড। সেবা খাতে প্রথম ও দ্বিতীয় পুরস্কার পেয়েছে যথাক্রমে ওয়ান ব্যাংক লিমিটেড ও সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড। আইটি খাতে ব্রেইন স্টেশন ২৩ লিমিটেড প্রথম পুরস্কার পেয়েছে। আর ফার্নিচারে হাতিল কমপ্লেক্স প্রথম হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছে।
অন্যদিকে মাঝারি শিল্প ক্যাটাগরিতে ইস্পাত ও প্রকৌশল খাতে প্রথম হয়েছে গেট ওয়েল লিমিটেড। খাদ্য শিল্পে প্রথম ও দ্বিতীয় হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছে যথাক্রমে নর্দান ফ্লাওয়ার মিলস লিমিটেড ও রোমানিয়া ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেড। টেক্সটাইল ও আরএমজি খাতে প্রথম পুরস্কার পেয়েছে কনসেপ্ট নিটিং লিমিটেড। প্লাস্টিক শিল্পে প্রথম পুরস্কার পেয়েছে বঙ্গ প্লাস্টিক ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড। এছাড়া অন্যান্য খাত ও উপখাত মিলে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছে যথাক্রমে প্যাকম্যাট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, বসুমতি ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেড ও কিউএনএস শিপিং লজিস্টিকস লিমিটেড।
ক্ষুদ্র শিল্প ক্যাটাগরির ক্ষুদ্র বিভাগে প্রথম পুরস্কার পেয়েছে এসআর হ্যান্ডিক্র্যাফটস। এছাড়া এ খাতে দ্বিতীয় হয়েছে রংপুর ফাউন্ড্রি লিমিটেড। মাইক্রো শিল্প ক্যাটাগরিতে মাইক্রো বিভাগে প্রথম ও দ্বিতীয় হয়েছে যথাক্রমে মাসকো ডেইরি এন্টারপ্রাইজ ও জনতা ইঞ্জিনিয়ারিং। রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প ক্যাটাগরিতে রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পে প্রথম হয়েছে গাজী ওয়্যারস লিমিটেড। এছাড়া এ খাতে দ্বিতীয় ও তৃতীয় হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছে যথাক্রমে কেরু অ্যান্ড কোম্পানি (বাংলাদেশ) লিমিটেড ও বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট।
এছাড়া বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশন ও ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি যৌথভাবে প্রথম হিসেবে ইনস্টিটিউশনাল অ্যাপ্রিসিয়েশন অ্যাওয়ার্ড-২০১৯ পুরস্কার পেয়েছে।