সংঘর্ষ চলাকালে তিনটি মোটরগাড়ি এবং গেরুয়া বাজারের কয়েকটি দোকান ভাঙচুর করা হয়। উত্তেজনা বৃদ্ধিতে স্থানীয় মসজিদগুলোতে জোরপূর্বক মাইকিং করে লোকসমাগম করা হয় বলে অভিযোগ এসেছে।এদিকে, সংঘর্ষের এই ঘটনার সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে আহতের সংখ্যাও। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত দু'পক্ষের আহতের সংখ্যা অর্ধশতাধিকেরও বেশি।
রাত ১০টার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের ডাক্তার মাহবুব বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত ৩০ জনের বেশি শিক্ষার্থীকে চিকিৎসা দিয়েছি। তাদের অধিকাংশই মাথা, হাত, পায়ে ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জখম পেয়েছে। তাদের সবাইকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া দুইজনকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
স্থানীয়রা দাবি করেন, ক্যাম্পাস ছাত্রলীগের অভিষেক, পিয়াস, এলেক্স ও রনির গ্রুপের নেতৃত্বাধীন প্রায় ২০ জন শিক্ষার্থী স্থানীয় একটি সামাজিক সংগঠন বাতিঘরের সদস্য নজরুলকে আটক করে টর্চার করেন এবং মুক্তিপণের জন্য দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। কিন্তু স্থানীয়রা গিয়ে নজরুলকে উদ্ধার করেন।
নজরুল ইসলাম বলেন, আমাকে অভিষেকের পোলাপানেরা অপহরণ করে রাতের মধ্যে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন এবং নির্যাতন চালায়। টাকা দিতে না পারলে মেরে ফেলারও হুমকি দেয় তারা। পরে স্থানীয় ভাই-ব্রাদারেরা আমাকে উদ্ধার করতে আসলে তাদের (শিক্ষার্থী) সাথে সংঘর্ষ শুরু হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে স্থানীয়দের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ঝামেলা হয়। এরপর সেই সূত্রে ধরে স্থানীয়রা জড়ো হয়ে শিক্ষার্থীদের ওপরে হামলা চালায়। এতে একাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে, এছাড়া কিছু শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাস সংলগ্ন এলাকার মেসগুলোতে আটকে রেখেছেন স্থানীয়রা। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডি ও পুলিশের সহায়তায় তাদের উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানায় প্রশাসন। পুলিশ জানায়, হামলার তথ্য জানার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে।
আশুলিয়া থানার ওসি কামরুজ্জামান বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বিস্তারিত জানাতে পারব। আমরা ফোর্স বৃদ্ধি করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
এদিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজনা ইসলাম বলেন, গেইটের বাইরে আমার প্রক্টর ও নিরাপত্তা কর্মীদের কিছু করার নেই। আমি পুলিশ পাঠানোর জন্য ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় কথা বলতেছি। তোমরা শিক্ষার্থীরা মাথা ঠান্ডা রাখো এবং বাসায় অবস্থান করো।
অন্যদিকে বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা বলছেন, আমাদের প্রচুর শিক্ষার্থী গেরুয়াতে বাসা বাড়া নিয়ে আছে। এমন অবস্থায় সেসব বাসায় যাওয়া অনিরাপদ। তাই আমরা অনতিবিলম্বে হল খুলে দেয়ার দাবি জানাচ্ছি। কিছু ক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থী তালা ভেঙ্গে হলে প্রবেশ করার কথাও জানান। বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল বন্ধ থাকায় ক্যাম্পাসের আশেপাশে অবস্থানরত সাধারণ শিক্ষার্থীরা উদ্বিগ্ন সময় পার করছে।