বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির বিভিন্ন পর্বের পরীক্ষার ফলাফলের ওপর বিভাগের ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থীকে এ সম্পূরক শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হয়। মাসিক ৫০০ টাকা হারে প্রতি শিক্ষার্থী ছয় হাজার টাকা পেয়ে থাকেন।
রেজিস্ট্রার অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২০১৭-১৮ সেশন (৪৭ ব্যাচ), ২০১৬-১৭ সেশন (৪৬ ব্যাচ), ২০১৫-১৬ সেশনের (৪৫ ব্যাচ) পরীক্ষার ফলাফলের ওপর বৃত্তির তালিকা তৈরি করা হয়েছে। ২০১৮-১৯ সেশনের (৪৮ ব্যাচ) ভর্তি মেধাক্রমের ওপর বৃত্তির তালিকার কাজও শেষ হয়েছে। ২০১৪-১৫ সেশনের (৪৪ ব্যাচ) ১০টি বিভাগের পরীক্ষার ফলাফল না দেওয়ায় বৃত্তির তালিকা করা যায়নি। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশে বাধা হলো সিন্ডিকেটের আইন। বৃত্তির ফলাফল ঘোষণার ছয় মাসের মধ্যে শিক্ষার্থীকে এ টাকা তুলতে হবে। টাকা তুলতে না পারলে, তা আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাগারে জমা হয়ে যাবে।
শিক্ষার্থীরা জানায়, করোনায় তাদের টিউশনি নেই, পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থাও খারাপ, খুবই কষ্টের মধ্যে দিন কাটছে। এমতাবস্থায় বৃত্তির টাকা কিছুটা সহায়ক হতো। অতি দ্রুত যেন বৃত্তির টাকা দেওয়া হয়।
সরকার ও রাজনীতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (৪৭ ব্যাচ) শিক্ষার্থী আকিমুল ইসলাম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘করোনার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ। ক্যাম্পাস খোলা থাকলে টিউশনি করতাম। কিন্তু এখন বাড়িতে বসে আছি, পারিবারিক অবস্থাও ভালো না। এ সময় শিক্ষাবৃত্তির টাকাটা পেলে উপকার হতো।’
‘তৃতীয় বর্ষের ফলাফল দিয়েছে অনেক মাস হলো। চতুর্থ বর্ষেরও ফলাফল পেয়েছি। কিন্তু তৃতীয় বর্ষের ফলাফলের ওপর দেওয়া শিক্ষাবৃত্তি এখনও পেলাম না। টাকার পরিমাণ কম হলেও করোনার এই পরিস্থিতিতে এটা খুবই প্রয়োজন। আমরা চাই প্রশাসন দ্রুত টাকাটা দেওয়ার ব্যবস্থা করুক।’ এমনটা বললেন ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণির শিক্ষার্থী নবনিতা শবনম।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (উচ্চশিক্ষা ও বৃত্তি) এ বি এম আজিজুর রহমান বলেন, ‘সিন্ডিকেটের নিয়মের কারণে বৃত্তির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা যাচ্ছে না। তবে ১০-১২ জন শিক্ষার্থী তালিকা প্রকাশের জন্য আবেদন করলে মৌখিক অনুমতি নিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা যাবে।’
বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ না করার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মো. নূরুল আলম বলেন, ‘বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ছয় মাসের মধ্যে শিক্ষার্থীদের টাকা উত্তোলন করতে হবে। না হলে এ টাকা আবার ফেরত চলে যাবে। মার্চের শেষের দিকে বৃত্তির ফলাফল প্রকাশ করা যায় কি না, চেষ্টা করব।’
এ বছরের জন্য আইন সংশোধন করা যায় কি না জিজ্ঞেস করলে উপ-উপাচার্য বলেন, ‘এটা ইউজিসির দেওয়া বিধি। আমরা চাইলেই পরিবর্তন করতে পারব না।’
এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে সপ্তাহে তিন দিন প্রশাসনিক কার্যক্রম চালু আছে। সম্পূরক শিক্ষাবৃত্তির টাকা উত্তোলনের জন্য বিভাগের সভাপতি ও হলের প্রাধ্যক্ষের স্বাক্ষর প্রয়োজন। শিক্ষার্থীদের দাবি, অনলাইনের মাধ্যমে সম্পূরক শিক্ষাবৃত্তির টাকা উত্তোলন প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে হবে। এ ছাড়া ছয় মাসের মধ্যে টাকা উত্তোলনের যে নিয়ম রয়েছে সেটা এ বছরের জন্য শিথিল করে শিক্ষার্থীদের হাতে টাকা পৌঁছে দিতে হবে।