মার্কিন অর্থনীতি চাঙ্গা করতে বাইডেনের প্রণোদনা ঘোষণা

মার্কিন অর্থনীতি চাঙ্গা করতে বাইডেনের প্রণোদনা ঘোষণা
করোনা পরবর্তী মার্কিন অর্থনৈতিক উত্তরণের জন্য ১ দশমিক ৯ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনৈতিক প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। আর এসব প্রণোদনার অর্থ সংকুলানে উপায় হিসেবে বেছে নিয়েছেন কর বৃদ্ধির মতো পরিকল্পনা। বাইডেন প্রশাসন জানায়, ১৯৯৩ সালের পর এটিই প্রথম ফেডেরাল কর বৃদ্ধির মতো পদক্ষেপ।

করোনার কারণে অর্থনৈতিক ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক পরিকল্পনা অনুসারেই এমন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন বলেন, আমরা শুধু সরকারের নিজস্ব আয়ের ওপর নির্ভর করতে পারি না। তিনি আরো জানান, বিভিন্ন ধরনের করপোরেট কর ও ধনীদের ব্যক্তিগত করের সীমা বৃদ্ধির মাধ্যমে এ অর্থ সংগ্রহ করা হবে।

প্রণোদনার জন্য কংগ্রেস মোট ১ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন ডলারের প্রস্তাব পাস করতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছিল গোল্ডম্যান স্যাকস। অবশ্য জর্জিয়ার সিনেট দৌড়ে ডেমোক্র্যাটদের জয়ের আগে ওয়াল স্ট্রিটভিত্তিক এ ব্যাংকের পূর্বাভাস ছিল ৭৫ হাজার কোটি ডলারের প্রণোদনার।

অর্থনীতিবিদদের মতে, বাইডেন প্রশাসনের নতুন এ প্রণোদনা মার্কিন অর্থনীতিকে আরো গতিশীল করে তুলবে। আর এ ধরনের ধারণার পেছনে মূলত বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে সরকারের করোনা-পরবর্তী নিয়মনীতি শিথিল করাকেই কারণ হিসেবে দেখতে চাইছেন তারা।

সম্প্রতি ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকিং কোম্পানি ‘র্যামন্ড জেমস’ জানায়, এ প্রণোদনার ফলে মনে হচ্ছে আমরা কভিডের অন্ধকার দীর্ঘ শীতল চূড়া থেকে মুক্তি পেতে যাচ্ছি আমরা।

তবে আয়কর বৃদ্ধি পরিকল্পনা নিয়ে বিশ্লেষকরা বলছেন, কর বৃদ্ধির এ পরিকল্পনা শুধু মার্কিন নাগরিদের সুবিধা বাড়াবে এমনটাই নয়; কর বৃদ্ধির ফলে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটদের ওপর কর্তৃত্ব বজায় রাখার ক্ষেত্রে বাইডেনের ক্ষমতার প্রমাণও দেবে।

মার্কিন পাবলিক পলিসির প্রধান সারাহ বিয়ানচি বলেন, বাইডেন মনে করেন কর নীতিমালা সবসময় স্বচ্ছ হতে হবে। তিনি সব নীতিমালা একই ধরনের মাপকাঠিতে পরিমাপ করেন। এজন্যই তিনি সম্পদ ও কাজের অসম ব্যবস্থার দিকে নজর দিয়েছেন।

বাইডেন প্রশাসনের এই নীতিমালা কোনো বড় ধরনের অবকাঠামো ও চাকরির প্যাকেজের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। আগে ট্রাম্প প্রশাসনের কর নীতিমালায় এসব খাত যথেষ্ট সুবিধা পেয়ে আসছিল।

নতুন এ কর নীতিমালার ক্ষেত্রে করপোরেট করের হার বৃদ্ধি পেয়ে ২১ শতাংশ থেকে ২৮ শতাংশ করা হবে। বার্ষিক ৪ লাখ ডলারের বেশি আয়ের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত করের সীমাও বৃদ্ধি করা হবে। নীতিমালায় সম্পদের ওপর কর বৃদ্ধি, ছোট ও মাঝারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে করের আওতায় নিয়ে আসা এবং উচ্চ আয়ের কোম্পানিগুলোর ওপর করহার বাড়ানোর প্রস্তাব রাখা হয়।

বাইডেনের নির্বাচনী প্রচারের সময় যে কর পরিকল্পনা দেয়া হয়েছিল, ট্যাক্স পলিসি সেন্টার প্রাথমিক হিসাবে জানায়, এ অনুযায়ী কর বাড়ালে এক দশকে ২ দশমিক ১ ট্রিলিয়ন ডলারেরও বেশি রাজস্ব আয় হবে।

মার্কিন ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকিং কোম্পানি গোল্ডম্যান স্যাকসের মতে, ৭ শতাংশ জিডিপি বৃদ্ধির মাধ্যমে চলতি বছরে দ্রুতই মার্কিন অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ঘটবে। ১৯৮৪ সালে তত্কালীন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যানের পর যা সর্বোচ্চ। গোল্ডম্যান স্যাকস জানায়, অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের এ পরিকল্পনায় দেশটি আগামী বছরে ৫ দশমিক ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারে।

বিশ্লেষকরা জানান, অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে তা মার্কিন নাগরিকদের জন্য বিশাল চাকরির ক্ষেত্র তৈরি করবে। বছরের শেষ নাগাদ বেকারত্বের হার নেমে আসতে পারে মাত্র ৪ শতাংশে, যা বর্তমানে ৬ দশমিক ২ শতাংশ রয়েছে। এমনকি আগামী বছরের শেষ নাগাদ বেকারত্বের হার ৩ দশমিক ৫ শতাংশে নেমে আসতে পারে। এতে ৫০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন বেকারত্বের হার দেখতে পারে যুক্তরাষ্ট্র।

যদিও কর বৃদ্ধির এই পুরো পরিকল্পনা এখনো প্রকাশিত হয়নি। হোয়াইট হাউজ বলছে, শিগগিরই এ বিষয়ে ঘোষণা আসতে পারে। তবে সিনেটে এ-সংক্রান্ত বিলটি পাস করাতে হলে অন্তত ১০ জন রিপাবলিকান সদস্যের সম্মতি লাগবে। সূত্র ব্লুমবার্গ।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

পেট্রোল-ডিজেলের নতুন দাম ঘোষণা
ভিসা ছাড়াই যুক্তরাজ্যে যেতে পারবে মুসলিম ৬ দেশ
মারা গেছেন পণ্ডিত ভবানী শঙ্কর
২০২৩ এ আলোচিত বিশ্বের সেরা ১০ ঘটনা
ব্রিকসে যোগ দেবে না আর্জেন্টিনা
নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত বিশ্ববাসী
১০ টাকাতেই মিলবে বই
বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারী ফ্রাঁসোয়া বেটেনকোর্ট
সৌদি আরবে আরো একটি স্বর্ণের খনির সন্ধান
শক্তিশালী ভূমিকম্পে কাঁপলো ইন্দোনেশিয়া