সোমবার (২২ মার্চ) এ উপলক্ষে বিজয় ৭১ অডিটরিয়ামে একটি মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সম্মানিত চেয়ারম্যান মো. আব্দুল কাইউম সরকার। খসড়া প্রবিধানমালাটি উপস্থাপন করেন কর্তৃপক্ষের সদস্য মঞ্জুর মোর্শেদ আহমেদ। সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য মো. রেজাউল করিম। মতবিনিময় সভায় ট্রান্সফ্যাট বিষয়ক টেকনিক্যাল কমিটির সদস্যবৃন্দ, সরকারের বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তা এবং বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিগণ অংশ নেন।
মতবিনিময় সভার প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো. আব্দুল কাইউম সরকার বলেন, “জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় তেল, চর্বি এবং খাদ্য দ্রব্যে ট্রান্সফ্যাটের সর্বোচ্চ মাত্রা ২ শতাংশের নিচে রাখার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে প্রবিধানমালায়। সকলের মতামত গ্রহণের জন্য এটি আজ উন্মুক্ত করা হলো। আশাকরি দ্রুততম সময়ের মধ্যে আমরা খসড়া প্রবিধানমালাটি চূড়ান্ত করতে পারবো।”
ট্রান্সফ্যাট বিষয়ক টেকনিক্যাল কমিটির প্রধান ও বিএফএসএ সদস্য মঞ্জুর মোর্শেদ আহমেদ বলেন, “বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২০২৩ সালের মধ্যে খাদ্য দ্রব্যে ট্রান্সফ্যাট নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সদস্য রাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। আমরা এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে খসড়া প্রবিধানমালাটি প্রণয়ন করেছি। সকল ব্যবসায়ী, শিল্প প্রতিষ্ঠানসহ ভোক্তাসাধারণকে আমাদের ওয়েবসাইটে গিয়ে প্রবিধানমালাটির ওপর মতামত প্রদান করার আহ্বান জানাচ্ছি।”
ট্রান্সফ্যাট বিষয়ক টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য অধ্যাপক ড. নাজমা শাহীন ও কর্তৃপক্ষের সদস্য অধ্যাপক ড. আব্দুল আলীম খসড়া প্রবিধানমালার উপর আলোচনায় অংশ নেন।
সভাপতির বক্তব্যে মো. রেজাউল করিম বলেন, “ট্রান্সফ্যাট তথা হৃদরোগ ঝুঁকি থেকে মানুষকে রক্ষা করতে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ এই খসড়া প্রবিধানমালা একটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ, আমি এ প্রবিধানমালা প্রণয়নে সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানাই।
ট্রান্স ফ্যাটি এসিড (টিএফএ) বা ট্রান্সফ্যাট একটি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর খাদ্য উপাদান। খাদ্যে ট্রান্সফ্যাটের প্রধান উৎস পারশিয়ালি হাইড্রোজেনেটেড অয়েল বা পিএইচও, যা বাংলাদেশে ডালডা বা বনস্পতি ঘি নামেই সুপরিচিত। সাধারণত বেকারি পণ্য, প্রক্রিয়াজাতকৃত ও ভাজা পোড়া স্ন্যাক্স এবং হোটেল-রেস্তোরাঁ ও সড়কসংলগ্ন দোকানে খাবার তৈরিতে পিএইচও বা ডালডা ব্যবহার করা হয়ে থাকে। মাত্রাতিরিক্ত ট্রান্সফ্যাট গ্রহণ উচ্চহারে হৃদরোগ, হৃদরোগজনিত মৃত্যু, স্মৃতিভ্রংশ (ডিমেনশিয়া) এবং স্বল্প স্মৃতিহানি (কগনিটিভ ইমপেয়ারমেন্ট) জাতীয় রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি করে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক ২০২০ সালে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ট্রান্সফ্যাটঘটিত হৃদরোগে মৃত্যুর সর্বাধিক ঝুঁকিপূর্ণ ১৫টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ আশা করছে এই খসড়া প্রবিধানমালাটি বাস্তবায়ন শুরু হলে নিরাপদ খাদ্যে বাংলাদেশ আরো এক ধাপ এগিয়ে যাবে।