সম্প্রতি তেলের চাহিদা বাড়লেও রপ্তানি হার বাড়েনি। যদিও ওপেক এবং বিশ্বের শীর্ষ রপ্তানিকারক দেশগুলোর তেলমন্ত্রীদের শুক্রবার (২ জুলাই) এক টেবিলে বসার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা আর হয়ে ওঠেনি। ফলশ্রুতিতে সব মিলিয়ে গত সপ্তাহে পণ্যটির দাম বেড়েছে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার একদিনেই প্রায় আড়াই শতাংশ বেড়ে গেছে। এ নিয়ে টানা ছয় সপ্তাহ বাড়ল তেলের দাম।
গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক মার্কেন্টাইল এক্সচেঞ্জে আগাম কেনাবেচায় ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) অয়েলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১০ সেন্ট কমে ৭৫ দশমিক ১৩ ডলারে নেমেছিল। অবশ্য এর আগের দিন বৃহস্পতিবার প্রতি ব্যারেলে জ্বালানি তেলের দাম ২ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে ৭৫ দশমিক ২৩ ডলারে ওঠে। ব্যারেলপ্রতি ৬২ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ৭০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৭০ দশমিক ৯১ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। এ দরে কেনাবেচা হওয়া তেল আগামী মাসে ক্রেতাকে সরবরাহ করা হবে। অন্যদিকে ইউরোপের বাজারে শুক্রবার প্রতি ব্যারেল জ্বালানি তেলের দাম সাত সেন্ট কমে ৭৫ দশমিক ৭৭ ডলারে নামে। বৃহস্পতিবার ব্যারেলপ্রতি দাম ১ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়ে ৭৫ দশমিক ৮৩ ডলারে ওঠে। সার্বিকভাবে বিশ্ববাজারে গত ২০১৮ সালের অক্টোবরের পর গত পৌনে তিন বছরে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম এখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে।
সৌদি আরব ও রাশিয়া ওপেকের সদস্যদের জন্য তেল সরবরাহের একটি পরিকল্পনা তৈরি করলেও তা সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) কারণে বাস্তবায়ন করতে পারছে না। সৌদি আরব ও রাশিয়া আগামী মাস (আগস্ট) থেকে দৈনিক তেল উত্তোলনের পরিমাণ চার লাখ ব্যারেল বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিল। এতে বাগড়া দেয় ইউএই। এ দেশটিরও চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে দৈনিক জ্বালানি তেল সরবরাহের পরিমাণ ২০ লাখ ব্যারেল বাড়ানোর কথা থাকলেও সেখান থেকে তারা আপাতত সরে এসেছে।
এদিকে বিশ্বজুড়ে অপরিশোধিত তেলের চাহিদা আগামী বছরের শেষ দিকে আবার করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব আকারে ছড়িয়ে পড়ার আগের অবস্থায় ফিরে যাবে বলে ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি বা আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থা (আইইএ) সম্প্রতি পূর্বাভাস দিয়েছে। গোল্ডম্যান স্যাকস এক প্রতিবেদনে বলেছে, বিশ্বজুড়ে কোভিড-১৯ এর কারণে সরবরাহের ক্ষেত্রে যে প্রতিবন্ধকতা দেখা দিয়েছিল তা দূর হওয়ার পাশাপাশি দেশে দেশে দ্রুত অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া গতি পাওয়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বাড়ছে।
ধারণা করা হচ্ছে, বৈশ্বিক বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা আগামী ২০২২ সালের শেষ দিকে বেড়ে আবার কোভিড-১৯ শুরু হওয়ার আগের অবস্থায় ফেরার সম্ভাবনা আছে। তবে দাম কবে নিম্নগতির দিকে যাবে তা এখনো নিশ্চিত করে কিছু বলা যায় না।