তবে এই ভয়াবহতা দ্বিতীয় ঢেউয়ের মতো মারাত্মক হবে না বলেই মনে করছেন কেন্দ্রীয় বিশেষজ্ঞ প্যানেলের বিজ্ঞানীরা। তাদের ধারণা, তৃতীয় ঢেউয়ে সর্বোচ্চ পর্যায়ে দিনে দেড় থেকে দুই লাখ মানুষকে সংক্রমিত করতে পারবে। যা দ্বিতীয় ঢেউয়ের সর্বোচ্চ দৈনিক সংক্রমণের অর্ধেকরও কম।
আনন্দবাজার পত্রিকা বলছে, গত ৭ মে ভারতে দৈনিক করোনা সংক্রমণ সংখ্যা শিখর ছুঁয়েছিল। একদিনে ৪ লাখ ১৪ হাজার ১৮৮ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন করোনায়। ভারতের দ্বিতীয় ঢেউয়ে এটিই ছিল দৈনিক সর্বোচ্চ সংক্রমণ।
করোনার গতিবিধির ওপর নজর রাখার দায়িত্বে থাকা সরকারি প্যানেলের বিজ্ঞানীদের মতে, তৃতীয় ঢেউ দ্রুত সংক্রামক হলেও দ্বিতীয় ঢেউকে ছাপিয়ে যেতে পারবে না। তৃতীয় ঢেউয়ের পরিস্থিতি যদি নিতান্তই খারাপ পর্যায়ে পৌঁছায়, তবে তাতে দৈনিক দেড় থেকে দুই লাখ মানুষ সংক্রমিত হতে পারেন।
তবে এজন্য তিনটি শর্ত দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। সাধারণ মানুষ যদি করোনা বিধি পালন না করেন, যদি টিকা কার্যকরী না হয় বা ২০ শতাংশ কম কার্যকরী হয় এবং যদি করোনার আর একটি নতুন রূপ আত্মপ্রকাশ করে, যা আগের থেকে ২৫ শতাংশ বেশি সংক্রমণ ছড়াতে সক্ষম।
দ্বিতীয় ঢেউয়ের ক্ষেত্রে করোনার সম্ভাব্য ভয়াবহতা আগে থেকে অনুমান করা যায়নি। তৃতীয় ঢেউয়ের ক্ষেত্রে তাই সেই ভুল করতে চান না সরকারি বিশেষজ্ঞরা। করোনা ভাইরাসের গতিবিধির একটি গাণিতিক মডেল তৈরি করেছেন তারা। নাম দেওয়া হয়েছে সূত্র মডেল। সেই সূত্র মডেলেই এই তিনটি সম্ভাবনাকে সামনে রেখে সাবধান হওয়ার কথা বলেছেন বিজ্ঞানীরা।
সূত্র মডেল নিয়ে কাজ করা বিজ্ঞানী মহিন্দ্রা আগরওয়ালের কথায়, ‘আমরা তিনটি বিষয়কে মাথায় রেখেছি। প্রথমত, মানুষের রোগ প্রতিরোধক শক্তি কমে যাওয়া। দ্বিতীয়ত টিকা যতটা কার্যকরী হবে ভাবা হয়েছিল, ততটা না হওয়া এবং তৃতীয়ত করোনার আরও বেশি সংক্রামক রূপ তৈরি হওয়া।’
সরকারি বিশেষজ্ঞ প্যানেলের দাবি, যদি মানুষ করোনা বিধি যথাযথ পালন না করে তবে অক্টোবর থেকে নভেম্বরেই সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছবে তৃতীয় ঢেউ।
আগরওয়াল জানিয়েছেন, এই তিনটি বিষয়ই যদি বাস্তবায়িত হয় এবং মানুষ করোনা বিধি যথাযথ পালন না করেন তবে অক্টোবর থেকে নভেম্বরেই সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাবে তৃতীয় ঢেউ। দৈনিক সংক্রমণ দেড় থেকে দুই লাখে পৌঁছাতে পারে সে সময়।
তবে তিনি এ-ও জানিয়েছেন, করোনার ডেল্টা প্লাস রূপটি তৃতীয় ঢেউয়ের কারণ হবে না। কেন না ডেল্টা প্লাস যে করোনার আগের রূপ ডেল্টার মতো সংক্রমক নয়, তা ইতিমধ্যেই জানা গেছে।
সূত্র মডেলেরই আরেক বিজ্ঞানী আইআইটি কানপুরের এম বিদ্যাসাগর জানিয়েছেন, অবশ্য এমনও হতে পারে এরকম কিছুই হল না। যথাযথ টিকাকরণের সাহায্যে আগস্টেই দেশে স্বাভাবিক পরিস্থিতিও ফিরে আসতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেছে ওই সরকারি প্যানেল।