করোনাকালে যদি নতুন এ ডিভাইসে জনগণের প্রাণ রক্ষা হয় নিশ্চয়ই বিচার বিবেচনা করে তিনি দেশের স্বার্থে তা ব্যবহারের অনুমতি দিতে পারেন। এজন্য ডিভাইসটি প্রধানমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপনের লক্ষ্যে উনার মুখ্য সচিবকে চিঠি লিখতে বলেছেন উচ্চ আদালত।
‘অক্সিজেট' নামের ডিভাইস ব্যবহারের জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রতি আদালতের নির্দেশনা চাইলে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্টের ভার্চুয়াল বেঞ্চ সোমবার (৫ জুন) এ পরামর্শ দেন।
সম্প্রতি বুয়েটের বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. তওফিক হাসানের নেতৃত্বে তৈরি করেছে ‘অক্সিজেট' নামে একটি ডিভাইস। যা দিয়ে হাসপাতালের সাধারণ বেডেই ৬০ লিটার পর্যন্ত হাই ফ্লো অক্সিজেন দেওয়া যায়।
বিষয়টি হাইকোর্টের নজরে এনে ব্যারিস্টার অনীক আর হক বলেন, অক্সিজেটের দ্বিতীয় ধাপের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল সম্পন্ন হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কয়েকজন করোনা রোগীকে এ যন্ত্র দিয়ে হাই ফ্লো অক্সিজেন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ডিজিডিএ এটা ব্যবহারের অনুমতি দিচ্ছে না। তারা বলেছে, কোস্পানির উৎপাদিত পণ্য না হলে অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়।
এ পর্যায়ে বিচারপতি ইনায়েতুর রহিম বলেন, পত্রিকায় দেখলাম হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা গত বছর ৫ থেকে ১০ লাখ টাকায় বিদেশ থেকে আনা হয়েছে। কিন্তু সেগুলোর ক্রয়মূল্য দেখানো হয়েছে ৮০ থেকে ৯০ লাখ টাকা। এ কারণে আমরা সব সময় বিদেশ থেকে সরকারি জিনিসপত্র কেনাকাটা করতে বেশি আগ্রহী হই। দেশীয় উদ্ভাবিত জিনিসে অতটা আগ্রহী হই না।
আইনজীবী বলেন, হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলার সংকটে প্রাণহানি বাড়ছে। সেক্ষেত্রে অক্সিজেট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
বিচারপতি ইনায়েতুর রহিম বলেন, এ ধরনের ডিভাইস নিয়ে পাবলিক ক্যাম্পেইন দরকার। আপনি (আইনজীবী) এ বিষয়ে স্বাস্থ্য সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে চিঠি দেন।
আদালত বলেন, আমাদের আদেশ ছাড়াই যদি বিষয়টির সুরাহা হয় তাহলো তো ভালো। কারণ সরকারি জিনিসপত্র কেনাকাটা নিয়ে নানা নিয়মনীতি রয়েছে। রয়েছে নানা ঝামেলা। আমরা এখান থেকে বিষয়টি ভালো বা খারাপ দিক কী কী সেটা বুঝতে পারব না।
হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা ও আইসিউ স্বল্পতার কারণে অনেক রোগীকেই বেশি পরিমাণ অক্সিজেন দেওয়া সম্ভব হয় না। তখন এর বিকল্প হিসেবে অক্সিজেট ব্যবহার করা হলে চলমান আইসিইউ ও হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলার সংকটে এ যন্ত্র করোনা রোগীদের প্রাণ রক্ষায় কাজে লাগবে।