শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)-এর শীর্ষ বিজ্ঞানী ও গবেষক সৌম্য স্বামীনাথান বলেন, ‘বর্তমানে বিশ্বের কিছু দেশ তাদের নাগরিকদের বিপুল অংশে টিকার আওতায় আনতে সক্ষম হওয়ায় সেসব দেশে করোনা সংক্রমণ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে, হাসপাতালসমূহে গুরুতর অসুস্থ রোগীর সংখ্যা কমেছে।’
‘কিন্তু একই সময়ে আমরা দেখতে পাচ্ছি, বিশ্বের বিশাল অংশে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে, হাসপাতালসমূহে শয্যা ও অক্সিজেনের ঘাটতি ভয়াবহ হয়ে উঠছে।’
‘গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৫ লাখেরও বেশি মানুষ, মারা গেছেন প্রায় ৯ হাজার ৩০০ জন। এই পরিস্থিতিতে বলার কোনো সুযোগ নেই যে এই মহামারির তেজ কমেছে বা এটি দুর্বল হচ্ছে।’
সাক্ষাৎকারে ডব্লিউএইচওর শীর্ষ বিজ্ঞানী বলেন, প্রশাসনিক সুবিধার্থে বিশ্বকে ৬ টি অঞ্চলে ভাগ করেছে ডব্লিউএইচও। এই ছয়টি অঞ্চলের পাঁচটিতেই করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে।
তিনি আরও বলেন, করোনায় সম্প্রতি মৃত্যুহার লাগামহীন ভাবে বাড়ছে আফ্রিকা অঞ্চলে। গত দুই সপ্তাহে এ মহাদেশের বেশিরভাগ দেশে করোনায় মৃত্যুহার বেড়েছে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত।
‘করোনার পরিবর্তিত ধরন ডেল্টার প্রভাব, টিকাদান কর্মসূচির ধীরগতি এবং এবং স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলায় উদাসীনতা- এই তিন কারণে বিশ্বে বাড়ছে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যু।
চলতি জুলাই মাসে করোনা বিধিনিষেধ প্রায় সম্পূর্ণ শিথিল করা হবে বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্য। দেশটির সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী, ১৯ জুলাই থেকে মাস্ক পরার ব্যাপারটি পুরোপুরি জনগণের ব্যক্তিগত ইচ্ছার ওপর নির্ভর করবে।
শুক্রবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে ডব্লিউএইচও-এর স্বাস্থ্য বিষয়ক জরুরি কর্মসূচি বিভাগের প্রধান মাইক রায়ান বলেছন, এর ফলে গত দেড় বছরে মহামারির বিরুদ্ধে যে সুরক্ষা যুক্তরাজ্য অর্জন করেছিল, তা ভেস্তে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।
ব্রিফিংয়ে মাইক রায়ান বলেন, ‘দেশের সবাই করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষিত এবং সবকিছুই আগের মতো স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যাবে- এমন ধারণা যদি কেউ করে থাকেন- সেটি এই মুহূর্তে সবচেয়ে বিপজ্জনক অনুমান। বিশ্বের যে কোনো দেশের ক্ষেত্রেই এই কথাটি প্রযোজ্য।’
সূত্র : ব্লুমবার্গ