শুক্রবার (২৩ জুলাই) মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় ৬টা থেকে ৫ আগস্ট রাত ১২টা পর্যন্ত ১৪ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার।
এই বিধিনিষেধের মধ্যে প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের না হওয়ার নির্দেশ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার তবে ব্যাংক খোলা রাখার সিদ্ধান্ত দেয়া হয়। এরপর একে একে আসে শেয়ারবাজার ও বীমা কোম্পানির কার্যালয় খোলার সিদ্ধান্ত।
ব্যাংক, বীমা ও শেয়ারবাজার খোলার সিদ্ধান্ত আসলে ২১ জুলাই পবিত্র ঈদুল আজহা পালিত হওয়ায় ২০, ২১ ও ২২ জুলাই ছুটি ভোগ করেন এই তিন খাতের কর্মীরা। এর সঙ্গে সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় ২৩ জুলাই (শুক্রবার) ও ২৪ জুলাই (শনিবার) ছুটি কাটানোর সুযোগ পান তারা। ফলে টানা পাঁচ দিন বন্ধ থাকে ব্যাংক, বীমা ও শেয়ারবাজার।
পাঁচ দিনের ছুটি শেষে আগামীকাল রোববার থেকে আবারও কার্যক্রম শুরু করবেন ব্যাংক, বীমা ও শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ব্যাংকের লেনদেন হবে সীমিত পরিসরে।
আগামীকাল রোববার থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ব্যাংকের লেনদেন হবে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত। সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার ও শনিবার ব্যাংক বন্ধ থাকবে। ঈদের ছুটি শুরু হওয়ার আগেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে এ সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়া হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ব্যাংক খোলার নির্দেশনা দেয়ার পর পরই পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে শেয়ারবাজারে লেনদেন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত জানায়।
বিএসইসির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামীকাল রোববার থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত শেয়ারবাজারে লেনদেন হবে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত। এই লেনদেনে স্বাভাবিক সময়ের মতো ১৫ মিনিট প্রি-ওপেনিং সেশন থাকবে এবং লেনদেন শেষে ১৫ মিনিটের পোস্ট ক্লোজিং সেশন চালু থাকবে।
ব্যাংক ও শেয়ারবাজার খোলার সিদ্ধান্ত আসার পর অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ২৩ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট বীমা প্রতিষ্ঠানের সেবা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করার জন্য বীমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষকে (আইডিআরএ) নির্দেশ দেয়।
অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এমন নির্দেশনা আসার পর কঠোর বিধিনিধেষের মধ্যে বীমা কোম্পানির অফিস খোলার সিদ্ধান্ত জানায় আইডিআরএ। আইডিআরএর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে বীমা কোম্পানির প্রধান কার্যালয় ও গুরুত্বপূর্ণ শাখা অফিস সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।
এদিকে মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকারঘোষিত ১৪ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ শুক্রবার (২৩ জুলাই) থেকে শুরু হয়েছে। মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণসহ গণপরিবহন ও শিল্প-কারখানা বন্ধ রেখে চলমান এ বিধিনিষেধ নিশ্চিত করতে পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনী মাঠে রয়েছে।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, বিধিনিষেধের মধ্যে ফেরিতে যাত্রীবাহী সকল ধরনের গাড়ি ও যাত্রী পরিবহন বন্ধ থাকবে। কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুধুমাত্র জরুরি পণ্যবাহী গাড়ি ও অ্যাম্বুলেন্স পারাপার করা হবে। অবশ্য কঠোর বিধিনিষেধের আওতার বাহিরে রয়েছে কোরবানির পশুর চামড়া সংশ্লিষ্ট খাত, খাদ্যপণ্য এবং কোভিড-১৯ প্রতিরোধে পণ্য ও ওষুধ উৎপাদনকারী শিল্পপ্রতিষ্ঠান।