বিশ্বব্যাপী কেরোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে আমরা একপ্রকার বাধ্য হয়েই মেনে নিচ্ছি এই গৃহবন্দি পরিস্থিতি। আর এমন পরিস্থিতিতে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা প্রাণোচ্ছ্বল শিশু-কিশোরদের। স্কুল, টিউশন বন্ধ। সাঁতার-গান-নাচও বন্ধ। বিকেলে খেলাধুলো বা পার্কে যাওয়ারও উপায় নেই। ২৪ ঘণ্টা চার দেওয়ালে বন্দি ওরা। এই অবস্থায় ওদের মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া তাই অবশ্য কর্তব্য।
অভিভাবকদের করণীয়
১) শিশুদের বুঝিয়ে বলুন “হোম কোয়রান্টাইন” কী আর এই পরিস্থিতিতে এর যৌক্তিকতাইবা কী। তাহলে চার দেওয়ালের মধ্যে আটকে থাকার গ্রহণযোগ্যতা অনেকটাই বাড়বে ওদের মধ্যে।
২) একটি ৩-৫ বছর বয়সী শিশুর মধ্যে কিন্তু মৃত্যু সম্পর্কে একটা অস্বচ্ছ ধারণা তৈরি হয়ে যায়। করোনাভােইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু ও তার সংখ্যা নিয়ে ওদের সামনে বেশি আলোচনা না করাই বাঞ্ছনীয়। অপরিণত মস্তিষ্কে মৃত্যুভয় বাসা বাঁধতে পারে এতে।
৩) বাড়ির অন্য সকলে যেমন সংসারের সমস্ত কাজ ভাগ করে করছেন, আপনার সন্তানটিকেও তার বয়স ও ক্ষমতা অনুযায়ী কাজ ভাগ করে দিন। সকলের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করাটা হয়তো ওর কাছে উপভোগ্যই হবে!
৪) বাড়ির কাজের পাশাপাশি ছবি আঁকা, বাগান করা, গল্পের বই পড়ার মতো কোনও শখ— যেটা ঘরে বসেই করা যায়, এমন কিছুতে বেশি করে উৎসাহিত করুন।
৫) বছরের আর পাঁচটা দিনের চেয়ে অভিভাবকদের হাতে কিন্তু একটু বেশিই সময় আছে সন্তানকে দেওয়ার মত। তাই এই সময় চেষ্টা করবেন, একসঙ্গে বসে কিছু খেলতে বা মজার কোনও বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে। এটা ওদের কাছে অনেক বেশি উপভোগ্য হবে।
৬) শিশুর অতিরিক্ত কার্টুন বা মোবাইল গেমসের নেশা কাটিয়ে ফেলার সুযোগ কিন্তু এখনই। অনেকটা সময় হাতে পাচ্ছে যখন, তখন ওর মধ্যে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। পাঠ্যবইয়ের বাইরেও নানা বই পড়ার স্বভাব পরবর্তীতে ওর বেশ উপকারেই আসবে!
৭) এই সময়টা শিশুকে “হ্যান্ড হাইজিন” আর “কফ এটিকেট” শেখানোরও এক আদর্শ সময়। সেটা আয়ত্ত করে ফেলতে পারলে করোনাভাইরাসকে প্রতিরোধ করার সঙ্গেসঙ্গে আপনার সন্তান সারাজীবন ধরেই কিন্তু অন্য অনেক রোগের আক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পাববে।