গবেষক দলের সদস্যরা এ সম্পর্কে তাদের গবেষণাপত্রে লিখেছেন, ‘প্রাথমিকভাবে ফাইজার-বায়োএনটেকের করোনা টিকা মানবদেহে ব্যাপক মাত্রায় প্রতিরোধী প্রোটিন গড়ে তুলতে সক্ষম হলেও কয়েক সপ্তাহ পর এই টিকার কার্যকারিতা কমতে থাকে।’
‘অক্সেফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার ডোজ নেওয়ার পরও একটা সময়ের পর থেকে মানবদেহে এই টিকার কার্যকারিতা কমে, কিন্তু শতকরা হিসেবে সেই হার খুবই নিম্ন।’
‘যারা ফাইজার-বায়োএনটেক টিকা নিয়েছেন এবং যারা অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নিয়েছেন- টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার ৪ থেকে ৫ মাস পর উভয় টিকার কার্যকারিতা মানবদেহে সমান থাকে।’
এ সম্পর্কিত এক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, করোনা টিকার ডোজ সম্পূর্ণ করেছেন- এমন ৩ লাখ স্বেচ্ছাসেবীকে পরীক্ষা করে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক দল। স্বেচ্ছাসেবীদের সবারই বয়স ১৮ বছরের বেশি এবং তাদের সবাইকে দু’টি দলে ভাগ করে তথ্য নিয়েছেন গবেষক দলের সদস্যরা।
গত বছরের ডিসেম্বরে যখন ব্রিটেনে করোনাভাইরাসের পরিবর্তিত ধরন আলফার প্রকোপ বেড়েছিল, সে সময় সেচ্ছাসেবকদের প্রথম দলের সদস্যদের শারীরিক অবস্থা বিষয়ক তথ্য নিয়েছিলেন গবেষকরা।
তারপর চলতি বছরের মার্চ থেকে যেখন দেশটিতে করোনাভাইরাসের অতি সংক্রামক ধরন ডেল্টার সংক্রমণ বাড়া শুরু করল, তখন স্বেচ্ছাসেবকদের দ্বিতীয় দলের সদস্যদের তথ্য নেওয়া হয়।
ফাইজার-বায়োএনটেক টিকার প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ফাইজার ও বায়োএনটেকের দাবি, করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে তাদের কোম্পানির প্রস্তুতকৃত টিকা মানবদেহে ৯৪ শতাংশ কার্যকর, অন্যদিকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাস্ট্রাজেনেকার দাবি, মানবদেহে তাদের টিকার কার্যকারিতা ৮৫ শতাংশেরও বেশি।
তবে ডেল্টা ধরনের বিরুদ্ধে উভয় টিকার কার্যকারিতা কম বলে জানিয়েছেন গবেষক দলের সদস্যরা।
এখন পর্যন্ত কোনো চিকিৎসা সাময়িকীতে এই গবেষণা প্রতিবেদনের পিআর রিভিউ ছাপা হয়নি বলেও উল্লেক হয়েছে এএফপির প্রতিবেদনে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চলমান টিকাদান কার্যক্রমে ফাইজার-বায়োএনটেক ও অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা- এই দুই করোনা টিকাই বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে সম্প্রতি দেখা দেওয়া ডেল্টার সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা নিশ্চিতে ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানিসহ কয়েকটি দেশ টিকার দুই ডোজ নেওয়া নাগরিকদের তৃতীয় বা বুস্টার ডোজ দিচ্ছে।
সূত্র : এএফপি