স্থানীয় ও নিহতের স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পূজাখোলা গ্রামের কামাল জোমাদ্দার ও তার স্ত্রী হাজেরা বেগমের মধ্যে যৌতুক ও পারিবারিক কলহে স্ত্রী ছাহেরা বেগম গত তিন মাস পূর্ব স্বামীর বাড়ী থেকে একই ইউনিয়নে পিতা আকব্বর মৃধার বাড়ী চলে যায়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গ্রামে কয়েক দফায় শালিস বিচার ব্যবস্থা হওয়ার কথা থাকলেও অদ্যাবদি কোন শালিস ব্যবস্থা হয়নি।
অপরদিকে, গত সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) মা ছাহেরা বেগমকে পিতা কামাল জোমাদ্দার বাড়িতে ফিরিয়ে না আনাকে কেন্দ্র করে অভিমান করে কিশোরী কন্যা মাহিমা (১৪) ও শিশু কন্যা ছুমাইয়া (৭) পিতা কামাল জোমাদ্দারের বাড়িতে বসে বিষপান করেন। বাড়ীর লোকজন মাহিমা ও ছুমাইয়াকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন। সেখানে তাদের অবস্থার অবনতি হওয়ায় ওই দিন রাতেই ওই হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক দু’কন্যাকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
গতকাল (মঙ্গলবার) রাত ১০টার দিকে কিশোরী কন্যা মাহিমা বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। বরিশালে লাশের ময়নাতদন্ত শেষে আজ (বুধবার) মাহিমার মরহেদ বাড়িতে এনে পারিবারিক ককরস্থানে দাফন করা হবে বলে পিতা কামাল জোমাদ্দারের পরিবার সূত্রে জানা গেছে।
স্ত্রী ছাহেরা বেগমের চাচা মো. শহিদ মৃধা মুঠোফোনে বলেন, স্বামী কামাল জোমাদ্দার যৌতুকের জন্য ছাহেরাকে মারধোর করে বাপের বাড়িতে রেখে যায়। এ ঘটনায় একাধিকবার শালিস বিচার ব্যবস্থা বসার কথা থাকলেও তা না হওয়ায় এবং মা ছাহেরা বেগমকে পিতা কামাল জোমাদ্দার বাড়িতে ফিরিয়ে না আনায় অভিমান করে ছাহেরার দুই কন্যা বিষপান করেন। এদের মধ্যে বড় মেয়ে মাহিমা বরিশাল হাসপাতালে মারা যায়। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।
স্বামী কামাল জোমাদ্দারের চাচা সালাম জোমাদ্দার বলেন, ঘটনার সময় কামাল ছিল না, সে কৃষিকাজ করতে মাঠে গিয়েছিল। বাড়ি ফিরে দেখে তার দুই মেয়ে মাহিমা ও ছুমাইয়া বিষপান করে অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে। দ্রুত তাদের কলাপাড়া হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়।
এবিষয়ে আমতলী থানার পরিদর্শক (ওসি) মো. শাহ আলাম হাওলাদার জানান, ‘এ ঘটনায় এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’