বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে এই যৌথ গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে নিরাপত্তা ঝুঁকি থেকে কীভাবে ব্যাকআপ ও ডিজাস্টার রিকোভারি সল্যুউশন দ্রুত ব্যবসাকে চলমান রাখতে সহায়তা করে সেসব বিষয়ে আলোচনা করা হয়, যা যেকোনো ধরনের প্রতিকূলতা এমনকি ব্যবসায়ের বিফলের সম্ভাবনাকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সক্ষমতা প্রদান করে। দেশের বৃহত্তম বহুমাত্রিক প্রতিষ্ঠানসমূহ এবং সরকারের নীতিনির্ধারক ব্যক্তিগণ গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ইজেনারেশন লিমিটেডের নির্বাহী ভাইস চেয়ারম্যান এসএম আশরাফুল ইসলাম। মাইক্রোসফটের কান্ট্রি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. ইউসুফ ফারুক ও ইজেনারেশনের অবকাঠামো ও সল্যুউশন বিভাগের প্রধান মো. আরিফুল ইসলাম অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ইজেনারেশনের অপারেশনস ও সেলস বিভাগের পরিচালক এমরান আবদুল্লাহ। এছাড়াও অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এনার্জিপ্যাকের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা ওয়াহিদ সাদাত চৌধুরী এবং বসুন্ধরা গ্রুপের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা সিফাত জাহান নূর, ডিবিএল গ্রুপ এর চিফ ইনফরমেশন অফিসার খন্দকার জাহিদুল আলম, পেপারফ্লাই এর চিফ ইনফরমেশন অফিসার শাহরিয়ার একরাম, আমীন মোহাম্মদ গ্রুপ এর হেড অব আইটি মো. শামীম রহমান প্রমুখ।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের বেসরকারি খাত দ্রুততার সাথে অত্যাধুনিক সল্যুউশন গ্রহণ এবং সাশ্রয়ীভাবে ক্লাউড-ভিত্তিক অবকাঠামো ব্যবহার করতে পারবে। বিশ্বব্যাপী বেসরকারি খাতের কোম্পানিগুলো তাদের সেবাকে সামনে এগিয়ে নিতে স্বাভাবিকভাবেই ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয় এবং আমরা জনসাধারণের সেবার সুবিধার্থে আমাদের অবকাঠামো ডিজিটাল রূপান্তরে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। মাইক্রোসফটের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির সাথে সহযোগিতা অবশ্যই এতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
ইজেনারেশন লিমিটেড এর নির্বাহী ভাইস চেয়ারম্যান এসএম আশরাফুল ইসলাম বলেন, প্রযুক্তির অগ্রযাত্রা ও দ্রুত ডিজিটালাইজেশন একদিকে যেমন সেবা প্রদানের পদ্ধতিতে আমূল পরিবর্তন আনছে, তেমনিভাবে সেখানে বিভিন্ন ঝুঁকি যেমন ডাউনটাইম, হিউম্যান এরর, সাইবার অ্যাটাক কিংবা আকষ্মিক বিপর্যয় যেকোনো সেবাকে স্থবির করে দিতে পারে। তবে, ব্যাকআপ এবং ডিজাস্টার রিকোভারি সল্যুউশন ব্যবসায় পরিচালনা অব্যাহত রাখা এবং তাদের ডিজিটাল রূপান্তরকে ত্বরান্বিত করে।
মাইক্রোসফটের কান্ট্রি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. ইউসুফ ফারুক বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ ভিশন বাস্তবায়নে ডিজিটাল রূপান্তর অগ্রযাত্রাকে ত্বরান্বিত করতে দেশের সরকারি-বেসরকারি খাত, এসএমই এবং বিভিন্ন কমিউনিটির সাথে যৌথভাবে কাজ করছে মাইক্রোসফট। এছাড়া মাইক্রোসফটের অ্যাজিউর এমন একটি প্ল্যাটফর্ম যেখানে ব্যবসায়গুলোকে কন্টেইনার, মাইক্রোসার্ভিস এবং সার্ভারবিহীন একটি পূর্ণাঙ্গ অবকাঠামো ব্যবহার করতে সহায়তা করে। সমাজকে সহায়তা করার জন্য মাইক্রোসফট একটি ইকোসিস্টেম তৈরি করতে চায় এবং সকল প্রান্তকে একসংগে সংযুক্ত করতে ক্লাউড একটি বিশাল ভূমিকা পালন করে।
ইজেনারেশনের অপারেশনস ও সেলস বিভাগের পরিচালক এমরান আবদুল্লাহ বলেন, ব্যাকআপ এবং রিকভারি সলিউশন সক্রিয়ভাবে একটি প্রতিষ্ঠানকে ডেটা হারানোর ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে, ব্যাকআপ ডেটা সুরক্ষিত করে এবং অন-প্রিমিজেজ ডেটা সুরক্ষার অবকাঠামো প্রদান করে। ক্লাউড সার্ভিসের নির্বিঘ্ন প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে তাদের ব্যবসায়ের ধারাবাহিকতা এবং স্বাভাবিক অবস্থায় প্রত্যাবর্তন এর ক্ষেত্রে সহায়তা করার জন্য আমাদের পেশাদারদের একটি সমন্বিত এবং দক্ষ গ্রুপ রয়েছে।
এনার্জিপ্যাকের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা (সিআইও) ওয়াহিদ সাদাত চৌধুরী বলেন, এসএপি অ্যাপ্লিকেশন থেকে মাইক্রোসফট অ্যাজিউর প্ল্যাটফর্মে আসার ফলে আমরা সেটির ফলাফল দেখতে পাচ্ছি। সংক্ষেপে বললে, আমরা ডেটা সেন্টার স্পেসকে অধিক খালি রাখতে পারছি, আমাদের সিস্টেম ও ডেটা আরও দ্রুত এবং কার্যকরী হয়ে উঠেছে। অ্যাজিউর সিকিউরিটি সার্ভিসেস আমাদেরকে বিভিন্ন ঝুঁকিতে উন্নত সেবা দিচ্ছে এবং কর্মীরা এই বিষয়ে মনোযোগ না দিয়ে বরং ব্যবসায়ের অন্যান্য ক্ষেত্রে মনোনিবেশ করতে পারছেন। আর এসবের মাধ্যমে আমাদের কর্মীরা আরও ভালোভাবে কাজ করছে এবং গ্রাহকদের উন্নত সেবা প্রদান করতে পারছে।
বসুন্ধরা গ্রুপের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা সিফাত জাহান নূর বলেন, ক্লাউড সেবা ব্যবহার করার কারণে আমার সেবা সক্রিয় ও চলমান রয়েছে। এসএপি এবং অ্যাজিউর এর সমন্বয় না থাকলে আমরা গ্রাহকদের দ্রুততার সাথে সেবা দিতে ও পরিবর্তন সাধন করতে পারতাম না। কিন্তু এই দুই প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা আমাদের কর্মী ও গ্রাহকদের জন্য সঠিক সমন্বয় স্থাপন করতে পারি এবং ব্যবসায়কে চলমান রাখতে পারি। ইজেনারেশন এবং মাইক্রোসফট আমাদের প্রতিটি বিষয়কে মাথায় রেখেছে, একইসাথে মাইগ্রেশন প্রক্রিয়াকে নিরবিচ্ছিন্ন করেছে।
অনুষ্ঠানে দেশের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানিগুলোর আইটি প্রতিনিধিরা কী কী প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হন এবং সেগুলো উত্তরণ করে কীভাবে ব্যবসাকে চলমান রাখা যায় সেসব বিষয়ে আলোচনা করা হয়।