"কবিতা আমার কবিতা" কাব্যগ্রন্থটিতে যেমন বিচিত্র স্বাদের কবিতায় পরিপূর্ণ তেমনি এও ইঙ্গিত দেয় যে, পৃথিবীতে হয়ত এমন বৈচিত্র্যময় ব্যক্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে যা আজও আমাদের স্বপ্নের অতীত। হয়ত এমন একটি মানবিক সংহতি খুঁজে পাওয়া যা পূর্ব সংস্কার, দুঃখ, কষ্ট, ভয়, যন্ত্রণা ও বিতৃষ্ণার কারণে কল্পনাতীত মনে হচ্ছে এখন। ভাষাবৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে বলা যায়, কাব্যগ্রন্থটির একুশ-বিজয়দিবস-স্বাধীনতা-স্বদেশ প্রেম-স্বদেশবন্দনা- বাল্য কৈশোর-শরৎ হেমন্ত বর্ষা প্রেমবিরহ- প্রাপ্তি অপ্রাপ্তি-জীবন সায়াহ্ন সর্বোপরি জননী নিয়ে আলাদা আলাদা স্বাদের কবিতার জন্য তার শব্দপরিধি বেশ চমৎকার এবং শব্দচয়ন থেকে উপমাপ্রয়োগে কবি অসাধারণ দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন।
শব্দ নিয়ে খেলা করতে ভালোবাসেন কেউ কেউ, ভালোবাসেন শব্দের পর শব্দ সাজাতে, গাঁথতে ভালোবাসেন শব্দের মালা। তেমনই একজন ব্যক্তিত্ব আলম আরা আসমা বেগম।
হেমন্তের একরাতে বগুড়া জেলার তালোড়ায় মাতামহের গৃহে পিতা মাতার প্রথম সন্তান আলম আরা আসমা বেগম (মায়া)’র জন্ম ২ অক্টোবর ১৯৫৩ সালে। শিক্ষা জীবনের শুরু জয়পুরহাটে আর শেষ রাজশাহীতে- রাজশাহী গভঃ কলেজ হয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে।
পারিবারিকভাবেই লেখালেখির ঝোঁক। পঞ্চম শ্রেনীতেই প্রথম কবিতা বগুড়া থেকে প্রকাশিত ‘সোনার কাঠি’ পত্রিকায়। সে বছরই ষাটের দশকের শুরুতে দৈনিক ইত্তেফাকের ‘কচিকাঁচার আসরে’ ছড়া কবিতা আর পরবর্তীতে দৈনিক ইত্তেফাকের ‘মহিলা অঙ্গঁনে’ এবং সাপ্তাহিক ‘বেগম’ পত্রিকায় তার লেখা প্রকাশিত হয়। আশির দশকে যুক্ত হয় রাজশাহী থেকে প্রকাশিত ‘দৈনিক বার্তা’ পত্রিকায়। মাঝে বেশ কিছুটা সময় সাহিত্য অঙ্গঁনে অনিয়মিত। বাংলাদেশ বেতারের বিভিন্ন বিভাগে তার লেখা জীবন্তিকা, কথিকা ও নাটিকা প্রচারিত হয় আশি-নব্বইয়ের দশকে।
পরবর্তীতে বাংলাদেশ টেলিভিশনের প্রথম শ্রেনীর গীতিকার হিসেবে পরিচিত। দীর্ঘদিন বি,আই,এস,ই এর নিরীক্ষক, পরীক্ষক ও প্রধান পরীক্ষকের (ইংরেজি) দায়িত্ব পালন করেন। শিক্ষকতা পেশা থেকে অবসর গ্রহণ করলেও স্বামী লোকসংগীত শিল্পী মোঃ আজিজুল ইসলাম, তিন পুত্র, পুত্রবধূ, এক কন্যা এবং চার নাতনীকে নিয়ে ব্যস্ত জীবন। তার প্রকাশিত গ্রন্থঃ শীত বিকেলের রোদ (ছোট গল্প) একুশে বইমেলা ২০১৭ ইং।
এ বছর অমর একুশে বই মেলায় "জনান্তিক "এর ৩১-৩২ নং স্টলে থাকছে কবি আলম আরা আসমা বেগমের কবিতার বই "কবিতা আমার কবিতা", প্রচ্ছদ - রাকিবুল আহ্সান লিমন, প্রকাশক- জনান্তিক, পৃষ্ঠা- ৫১, মূল্য- ১৪০/=